আহতকে চিকিৎসায় অপারগতা, বাকবিতণ্ডায় পল্লী চিকিৎসকের ছুরিকাঘাতে কলেজছাত্র নিহত
Published: 23rd, May 2025 GMT
নোয়াখালী সদর উপজেলায় পল্লী চিকিৎসকের ছুরিকাঘাতে মো. আবুল হোসেন রাফি (১৮) নামের এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। ওই দিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের চাঁন মিয়ার মোড়ে একটি চা দোকানে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়।
নিহত রাফি একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অলিপুর গ্রামের আজাদের ছেলে এবং কবিরহাট সরকারি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক প্রথমবর্ষের ছাত্র ছিলেন। অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক মো.
আহত রাফির বন্ধু সায়েম জানান, বিকেল চারটার দিকে উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামের অশ্বদিয়া সোলেমান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফুটবল খেলার সময় আমার হাত লেগে আমার বন্ধু মো. রুমনের ঠোঁট ফেটে রক্তক্ষরণ হয়। খেলার মাঠ থেকে রুমনকে অলিপুর চাঁনমিয়া মোড় এলাকায় পল্লী চিকিৎসক মো. শাহীনের কাছে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। সেখানে শাহীন রুমনকে চিকিৎসা দিতে অপারগতা দেখালে তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রাফির সঙ্গে পল্লী চিকিৎসক শাহীনের হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির সময় শাহিন রাফিকে পাশের চা দোকানে থাকা ছুরি দিয়ে গলার নিচে ছুরিকাঘাত করে। এতে রাফির গলার রগ কেটে গেলে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা রাফিকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১২টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, নিহতের স্বজনেরা মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক রয়েছেন। তাকে আটক করতে পুলিশ কাজ করছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ র ক ঘ ত হত য ন হত চ ক ৎসক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।