কুষ্টিয়া সদর উপজেলার নগর-মোহাম্মদপুরে ক্যানেলপাড়া এলাকায় একটি পাঁঠার দুধ দেওয়াকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। খামারি আবুল কাশেমের বাড়িতে পাঁঠাটিকে একনজর দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন উৎসুক জনতা। এলাকাবাসী বলছেন, এমন ঘটনা আগে কখনও তারা দেখেননি। বিষয়টি ‘অলৌকিক’ বলে দাবি করছেন অনেকে। তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিষয়টিকে ‘জেনেটিক ফ্যাক্ট’ বলেছেন। 

জানা গেছে, নগর-মোহাম্মদপুর গ্রামের আবুল কাশেম ৩০ বছর ছাগল প্রজনন সেবা দিয়ে আসছেন। তিনি খামারে পাঁঠা পালেন। চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তিনি পাঁঠা বিক্রি করেন। সপ্তাহখানেক আগে খামারের একটি পাঁঠা দুধ দিতে শুরু করে। প্রতিদিন আধা কেজি করে দুধ সংগ্রহ করছেন তিনি। বিষয়টি দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। 

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালে আবুল কাশেমের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, দূরদূরান্ত থেকে অনেকে পাঁঠা দেখতে আসছেন। কালো রঙের পাঁঠাটিকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। এ সময় উৎসুক জনতা দুধ সংগ্রহের জন্য আবুল কাশেমকে অনুরোধ করলে তার স্ত্রী সেলিনা বেগম উপস্থিত সবার সামনে দুধ সংগ্রহ করে দেখান।

আবুল কাশেম বলেন, ‘‘খামারে ৬০টি পাঁঠা রয়েছে। সপ্তাহখানেক আগে একটি পাঁঠার দুধের ওলান থাকার বিষয়টি বুঝতে পারি। ওলানে চাপ দিলে দুধ পড়তে থাকে। পাঁঠার বয়স প্রায় তিন বছর।’’

সেলিনা বেগম বলেন, ‘‘অনেকেই শখ করে পাঁঠার দুধ খাচ্ছেন। আবার বাসাবাড়ির জন্যও নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন আধা কেজি করে দুধ সংগ্রহ করছি।’’

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এমন ঘটনা আগে কখনো দেখা যায়নি। পাঁঠা শুধু প্রজনন সেবার কাজে ব্যবহার হয় বলে তারা শুনেছেন। এটা অলৌকিক ঘটনা হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। 

জানতে চাইলে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো.

রোকনুজ্জামান বলেন, ‘‘এটি সাধারণ ঘটনা না হলেও কোনো অলৌকিক ঘটনা নয়। আমি প্রতিনিধি পাঠিয়ে সত্যতা যাচাই করেছি। এটি ব্যতিক্রমী ঘটনা, তবে অসম্ভব কিছু না। এটাকে জেনেটিক ফ্যাক্ট বলা হয়ে থাকে। হরমনগত পরিবর্তনের কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। আর দুধের বিষয়টি ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে বোঝা যাবে খাবার উপযোগী কিনা।’’

কাঞ্চন//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ ধ স গ রহ করছ ন ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ