বাংলাদেশের তারকা হামজা চৌধুরীর মূল দল লেস্টার সিটি এবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমিত হয়েছে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে। এবার নিশ্চিত হলো লেস্টার যে দলে হামজাকে ধারে খেলতে পাঠিয়েছে সেই দল শেফিল্ড ইউনাইটেডও থাকছে চ্যাম্পিয়নশিপেও।

আজ ওয়েম্বলিতে ইংলিশ ফুটবলের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপের প্লে-অফ ফাইনালে হামজাদের ২-১ গোলে হারিয়ে আট মৌসুম পর প্রিমিয়ার লিগে উঠেছে সান্ডারল্যান্ড। এর আগে লিডস ইউনাইটেড ও বার্নলি ২৪ দলের লিগে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ হয়ে সরাসরি উঠে যায় প্রিমিয়ার লিগে।

প্রিমিয়ার লিগে ওঠার সুযোগ হারানো শেফিল্ড প্লে-অফ ফাইনালে ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল ৭৫ মিনিট পর্যন্ত। ৩৬ মিনিটে হ্যারিসন বারোজের করা গোলটি ভিএআর বাতিল না করলে অবশ্য ২-০ গোলে এগিয়ে যেতে পারত ব্লেডরা।

যোগ করা সময়ে গোল করে সান্ডারল্যান্ডকে প্রিমিয়ার লিগে নিয়ে গেছেন টম ওয়াটসন.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে “ডাইনি চর্চার” অভিযোগে একই পরিবারের পাঁচজনকে পুড়িয়ে হত্যা

ভারতের বিহার রাজ্যের পূর্ণিয়া জেলায় “ডাইনি চর্চার” অভিযোগে একই পরিবারের পাঁচজনকে মারধর করে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার পূর্ণিয়া জেলার তেতগামা গ্রামের একটি জলাশয় থেকে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। খবর: এএনআই

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন- বাবু লাল ওরাও (৫০), তার মা কান্তো দেবী (৭০), স্ত্রী সীতা দেবী (৪৫), ছেলে মনজিত কুমার (২৫) এবং পুত্রবধূ রাণী দেবী (২২)।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পূর্ণিয়া সদরের সাবডিভিশনাল পুলিশ অফিসার (এসডিপিও) পঙ্কজ কুমার শর্মা। তিনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “এই হত্যার সঙ্গে ঝাঁর-ফুক, ডাইনিবিদ্যার যোগ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। নিহতদের পরিবার ঝাড়-ফুঁক করত।”

পুলিশ জানিয়েছে, ১৬ বছর বয়সী বাবু লালের ছোট ছেলে ঘটনার সময় পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরে সে পুলিশের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানায়। বর্তমানে ওই পরিবারে একজনই বেঁচে রয়েছেন, আর তিনি হলেন এই ১৬ বছরের কিশোর।

পুলিশ আরও জানায়, কয়েক দিন আগে ওই গ্রামের একটি বাচ্চার মৃত্যু হয়। এরপরই অভিযোগ ওঠে ওই ঘটনার জন্য বাবু লালের পরিবার দায়ী। তারই জের ধরে রবিবার রাতে বাবু লাল ওরাও এবং তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয়।

পূর্ণিয়ার ডিআইজি প্রমোদ কুমার মণ্ডল বার্তাসংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে যোগ রয়েছে এই সন্দেহে এখন পর্যন্ত দুইজন মূল অভিযুক্তসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, “ঘটনাটি সত্যিই বীভৎস। এই যুগে দাঁড়িয়ে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যকে এইভাবে মেরে ফেলার ঘটনা বিশ্বাস করা যায় না!”

ডিআইজি প্রমোদ কুমার মণ্ডল সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “ওই গ্রামের একটি বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য বাবু লালদের ওপর চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু তা হয়নি। দিন চারেক আগে ওই বাচ্চাটির মৃত্যু হয়। এরপরই পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নেয়। অভিযোগ ওঠে বাবু লাল ওরাও-এর পরিবার ওই বাচ্চাটির মৃত্যুর জন্য দায়ী।”

পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার রাতে একদল লোক বাবুলাল ওরাও-এর বাড়িতে চড়াও হয়। সেই সময় বাড়িতে উপস্থিত পরিবারের সদস্যদের বাড়ি থেকে টেনে বের করে আনা হয়, বেধড়ক মারধর করা হয় এবং পরে তাদের জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পরে মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে, স্থানীয় জলাশয়ে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ।

ঘটনাটি গত রবিবার ঘটলেও তা প্রকাশ্যে এসেছে সোমবার। ওই পরিবারের সদস্য ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর সোমবার সকালে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পুলিশ এসে জলাশয় থেকে পাঁচজনের দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে। পরে ওই নাবালকের বয়ানের ভিত্তিতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই শিশুটি তার অভিযোগে উল্লেখ করেছে, বাড়িতে চড়াও হওয়া ব্যক্তিরা তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে “ডাইনিবিদ্যা” অনুশীলনের অভিযোগ তোলে। তার মাকে ডাইনি অপবাদ দেওয়া হয়। বাড়ির পাঁচজনকে মারধর করার পর তাদের জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কোনোরকমে পালিয়ে বেঁচে যায় ওই কিশোর। পরদিন সে পুলিশকে খবর দেয়।

পুলিশের কর্মকর্তা প্রমোদ কুমার মণ্ডল বলেন, “ওই (ভুক্তভোগী) পরিবারেরই এক কিশোর ছেলে আমাদের খবর দেয়। সে ওই ঘটনার সাক্ষী। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্তরা বাবুলাল ওরাও-এর পরিবারের সদস্যদের মারধর করে এবং সেখানেই তাদের মেরে ফেলা হয়। এরপর তাদের মরদেহ লোপাট করার জন্য বস্তাবন্দি করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়।”

পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ট্র্যাক্টর নিয়ে আসা হয় মরদেহ অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য। এরপর ওই পাঁচজনের মরদেহ স্থানীয় একটি জলাশয়ে ফেলে দেওয়া হয়। যেখান থেকে পরে পুলিশ সেগুলো উদ্ধার করে।

প্রমোদ কুমার মণ্ডল বলেন, “দুইজন মূল অভিযুক্ত বাদে ওই ট্রাক্টরের যে মালিক, তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ট্র্যাক্টরটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে ৪০-৫০ জন উপস্থিত ছিল বলে জানা যাচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে কারা কারা যুক্ত তা খতিয়ে দেখা হবে।”

সম্পর্কিত নিবন্ধ