জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ভিজিএফের কার্ড বিতরণ নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে সাতজন আহত হয়েছেন। রোববার উপজেলার আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।

আলমপুর ইউপি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ হাজার ৫১২টি বিশেষ ভিজিএফ কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে বিতরণের জন্য বিএনপি, জামায়াত ও ছাত্রনেতাদের কিছু কার্ড দেওয়া হয়। বাকি কার্ড বিতরণের জন্য ইউপি সদস্যদের দেওয়া হয়। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল মতিন মারা যাওয়ায় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আম্মাদ হোসেনকে ওই ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৫০ জন সুবিধাভোগীর তালিকা করে ইউনিয়ন পরিষদে জমা দেন। ভিজিএফের সুবিধাভোগীদের ওই তালিকা সঠিকভাবে করা হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন জামায়াতের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। এ বিষয়ে তাঁরা রোববার সকালে ইউপি কার্যালয় এসে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোছা.

হোসনে আরার সঙ্গে কথা বলেন। এ নিয়ে ইউপি কার্যালয়ের বাইরে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে সাতজন আহত হন।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন ছাত্রশিবিরের ক্ষেতলাল উপজেলা সভাপতি মোহাম্মদ আলী (২৫) ও আলমপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জুয়েল ফকির (৪৫)। আহত অন্যরা হলেন রাজু (২৫), মাসুদ (৩৭), ছাব্বির হোসেন (১৮), শিহাব (১৮) ও আবু কাশেম (৪৭)। তাঁদের দলীয় পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ছাত্রশিবিরের নেতা মোহাম্মদ আলীকে গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান মোছা. হোসনে আরা বলেন, ঈদুল আজহার জন্য ১ হাজার ৫১২টি বিশেষ ভিজিএফের কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। তাঁরা স্থানীয় প্রশাসনের পরার্মশে কিছু কার্ড বিএনপি, জামায়াত ও ছাত্রনেতাদের নিয়ে সমন্বয় করেছেন। তিনি বলেন, রোববার জামায়াতের লোকজন ইউপি কার্যালয়ে এসে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সঠিকভাবে কার্ড বিতরণ হয়নি বলে দাবি করেন। তাঁরা বিতরণের জন্য কার্ড দাবি করেন। এরপর ইউপি কার্যালয়ের বাইরে বিএনপি ও জামায়াতের লোকজনের মধ্য মারামারির ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি শুনেছেন।

ক্ষেতলাল উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি শামীম হোসাইন বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে ইউপি কার্যালয় থেকে বাইরে আসার পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে আমাদের সাত নেতা-কর্মী আহত হন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আম্মাদ হোসেন বলেন, কার্ড বিতরণ নিয়ে জামায়াতের নেতা–কর্মীরা খবরদারি করায় ঝামেলা হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আলমপুর ইউনিয়নে ভিজিএফের কার্ড বিতরণ নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পায়নি। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক র ড ব তরণ ন য় কর ম দ র ভ জ এফ র ব এনপ র র জন য র ইউপ

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি-জামায়াত পাল্টাপাল্টি হামলা, আহত ৭

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ভিজিএফ চাল বিতরণকে কেন্দ্র করে বিএনপির-জামায়াতের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের সাতজন আহত হয়েছেন। রোববার উপজেলার আলমপুর ইউপি পরিষদের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় ছাত্রশিবিরের উপজেলা সভাপতি মোহাম্মদ আলী (২৫), আলমপুর ইউনিয়ন বিএনপির ৯নং ওয়ার্ডের সভাপতি জুয়েল ফকির (৪৫), রাজু (২৫), মাসুদ (৩৭), ছাব্বির হোসেন (১৮), শিহাব (১৮), আবু কাশেম (৪৭) আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী অবস্থার অবনতি হলে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার আলমপুর ইউপি পরিষদের ভিজিএফ সুবিধাভোগীদের জন্য ১ হাজার ৫১২ জনের বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরাদ্দ অনুযায়ী রাজনৈতিক দল বিএনপির জন্য ৩০০, জামায়াতের জন্য ১০২ এবং এনসিপির জন্য ৭০ জনের তালিকাসহ ৯টি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ৩ সংরক্ষিত নারী সদস্যের তালিকা অনুযায়ী চাল বিতরণ শুরু হয়। এর মধ্যে ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মতিন গত ৮ মাস আগে মারা যাওয়ায় ওই ওয়ার্ডের নাগরিকদের ইউপি সেবা প্রদানের জন্য ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য আম্মাদ হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউপি সদস্য আম্মাদ হোসেন ওই ওয়ার্ডে ৫০ জনকে ভিজিএফ সুবিধাভোগী তালিকা করে ইউপি সচিবের কাছে জমা দেন। এ নিয়ে ৯নং ওয়ার্ড বানিয়াচাপর গ্রামের বাসিন্দা ও ছাত্রশিবিরের উপজেলার সভাপতি মোহাম্মদ আলীসহ তার দলের কর্মীদের সঙ্গে ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জুয়েল ফকিরের লোকজনের কথা কাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে জুয়েল ফকিরের ওপর জামায়াত-শিবির হামলা চালালে তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ খবর পেয়ে স্থানীয় বিএনপির কর্মী সমর্থকরা জামায়াত-শিবিরের ওপর পাল্টা হামলা চালান। এতে উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের মধ্যে মোহাম্মাদ আলীকে বগুড়ার দুঁপচাচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

৯নং ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউপি সদস্য আম্মাদ হোসেন বলেন, প্রকৃত দুঃস্থদের তালিকা করে ভিজিএফ চাল বিতরণ করা শুরু হলে জামায়াত-শিবিরের নেতারা সেখান থেকে কার্ডের ভাগ চান। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বিএনপির ওয়ার্ড সভাপতির ওপরে হামলা করে। 

আলমপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মিজানুর রহমান বলেন, ৯নং ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য কাউকে জিজ্ঞাসা না করে এককভাবে তালিকা করে ভিজিএফ চাল বিতরণের চেষ্টা করেন। এতে আমাদের দলীয় লোকজন বঞ্চিত হওয়ায় আমরা পৃথকভাবে কার্ডের দাবি করলে বিএনপির লোকজন চড়াও হন এবং হামলা চালান। 

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মাদ ফরিদ হোসেন বলেন, ‘ভিজিএফ-এর চাল বিতরণকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপি-জামায়াত পাল্টাপাল্টি হামলা, আহত ৭