মানিকগঞ্জে কালীমন্দিরে অগ্নিকাণ্ড, পুড়ে গেছে কয়েকটি প্রতিমা
Published: 28th, May 2025 GMT
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় একটি কালীমন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার ভোরে সদর উপজেলার সদরপুর ঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সকালে মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ বলেছে, অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এটি বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে নাকি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। শর্টসার্কিট থেকে নাকি কেউ আগুন দিয়েছে, না দেখে বলা যাচ্ছে না।’
অগ্নিকাণ্ডের পর আজ সকালে মন্দির পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো.
পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ও মন্দির পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ভোরের দিকে স্থানীয় লোকজন মন্দিরের ঘরে আগুন জ্বলতে দেখেন। তাঁরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এসে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে কালী, হনুমান, অসুরসহ কয়েকটি প্রতিমা ও মন্দিরের ঘর পুড়ে যায়।
মন্দিরের পাশে বসবাসকারী শম্ভু চন্দ্র দাসের স্ত্রী প্রতিমা রানী দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ ভোর সাড়ে চারটার দিকে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি, মন্দিরে আগুন জ্বলছে। চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এসে আগুন নেভাতে সাহায্য করেন।’
মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিতাই চন্দ্র দাস বলেন, ‘প্রতিদিন সন্ধ্যায় এ মন্দিরে মোমবাতি জ্বালানো হয়। বছরে একবার পূজাও হয়। কারও সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই। কীভাবে আগুন লাগল, তা বুঝে উঠতে পারছি না। তবে আমরা চাই, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুক।’
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মন্দিরের কয়েকটি প্রতিমা পুড়ে গেছে। ভেতরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কাজ করছিলেন। মন্দিরসংলগ্ন এলাকায় উৎসুক জনতার ভিড় ছিল। গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও সেখানে অবস্থান করছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। সব দিক বিবেচনায় রেখে কাজ চলছে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার পথে কোনো বাধা দেখছি না: নজরুল ইসলাম খান
আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনে বিএনপি কোনো বাধা দেখছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। আজ শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার পথে কোনো বাধা দেখছি না। যেহেতু বাধা দেখছি না, সেহেতু এটা না–ও হতে পারে, সেই দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। আমরা অপেক্ষা করছি, আশা করব শিগগিরই সরকার এ ব্যাপারে তাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য নিয়ে আসবে এবং নির্বাচন কমিশনকে সেই অনুযায়ী পরামর্শ দেবেন।’
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে যেসব প্রক্রিয়া করা প্রয়োজন বিএনপির পক্ষ থেকে তা করা হচ্ছে, তবে ৮২৬টির মধ্যে ৫১টি সুপারিশ নিয়ে ভিন্ন মত আছে।
এর আগে হাটহাজারীতে পৌঁছে সেখানে হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির মাওলানা শাহ আহমদ শফী ও জুনায়েদ বাবুনগরীর কবর জিয়ারত করেন বিএনপি এই দুই নেতা। পরে মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি খলিল আহমেদ কাশেমী এবং শায়খুল হাদীস শেখ আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
হাটহাজারী মাদ্রাসায় জুমার নামাজ আদায় শেষে সেখানে দুপুরের আহার করেন বিএনপির নেতারা। পরে তাঁরা চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বাবুনগর আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম মাদ্রাসায় হেফাজত ইসলামের আমির মাওলানা শাহ মুহিববুল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রওনা হন।
বিএনপির দুই স্থায়ী কমিটির সঙ্গে দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল উদ্দিন, উত্তর জেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির নেতা নূর মোহাম্মদ, সরোয়ার আলমগীর; দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হেলাল উদ্দিন, জাসাস চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি কাজী সাইফুল ইসলাম, ফটিকছড়ি উপজেলার বিএনপি আহ্বায়ক আজিম উল্লাহ বাহার প্রমুখ রয়েছেন।
বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সৌজন্য সাক্ষাতে হাটহাজারী মাদ্রাসায় গেছেন দলের নেতারা। বিএনপি নেতারা সৌজন্য সাক্ষাৎ বললেও আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দলটির নেতারা হেফাজতে ইসলামের নেতারাসহ আলেম-ওলামাদের সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়েছেন।
গত ২০ জুলাই ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ সমাবেশে চট্টগ্রামে আসলে হাটহাজারী আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ নেতা-কর্মীরা। নাহিদ ইসলামের সঙ্গে ছিলেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক জোবাইরুল আরিফ প্রমুখ। নেতা-কর্মীরা হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী ও জুনায়েদ বাবুনগরীর কবর জিয়ারত করেন।