বিএসইসির সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজারে অনুকূল সাড়া পড়বে: ডিএসই চেয়ারম্যান
Published: 28th, May 2025 GMT
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেছেন, “গত মঙ্গলবার (২৭ মে) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৯৫৭তম কমিশন সভায় বহুল প্রতিক্ষিত চারটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব সুবিধাদি বিনিয়োগকারী তথা পুঁজিবাজারে অনুকূল সাড়া পড়বে। পাশাপাশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় ও সার্বজনীন বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরি হবে।”
বুধবার (২৮ মে) রাজধানীর নিকুঞ্জে ডিএসই চেয়ারম্যানের ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ডিএসইর জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো.
আলোচনায় মমিনুল ইসলাম বিএসইসির এসব সিদ্ধান্তের কারণে সংস্থাটির চেয়ারম্যান, কমিশনারবৃন্দ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দকে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান। পুঁজিবাজার উন্নয়নে সহযোগীতার জন্য তিনি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান।
আরো পড়ুন:
পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের প্রধান উৎস করতে হবে: আমির খসরু
পুঁজিবাজারে সংকট: প্রয়োজন সমন্বিত, কার্যকরী ও যুগোপযোগী সংস্কার
তিনি বলেন, “ব্রোকারদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে বিও হিসাবের মেইনটেন্যান্স ফি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে। ব্রোকারেজ হাউজ ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে সিসি অ্যাকাউন্টের লভ্যাংশ ব্রোকারদের ব্যবহার করা এবং চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে কমোডিটি মার্কেট চালুর প্রবিধানমালা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গতকালের (মঙ্গলবার) বৈঠকে বার্জার পেইন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের রাইট শেয়ার অনুমোদিত হয়েছে। এসব সুবিধাদি বিনিয়োগকারী তথা পুঁজিবাজারে অনুকূল সাড়া পড়বে।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চোধুরীর মাধ্যমে সরকারের কাছে প্রস্তাবনা রেখেছি যে, আগামী বাজেটে টার্নওভারের উপর অগ্রিম যে আয়কর রয়েছে, তা ১ লাখ টাকায় ৫০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫ টাকা করার জন্য। এছাড়া তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করের ব্যবধান ন্যূনতম ১০ শতাংশ করা, ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স ব্যক্তি শ্রেণির বিনিয়োগকারীর জন্য সম্পূর্ণরূপে বাদ দেওয়া, ব্যক্তি শ্রেণির বিনিয়োগকারী থেকে কর্তন করা ডিভিডেন্ড ট্যাক্স চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে বিবেচনা করা এবং ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ডিভিডেন্ড ট্যাক্সকে কর মুক্ত রাখা হয়।”
ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের একটি বিশদ কমিউনিকেশন স্ট্রাটেজি তৈরি করে সে অনুযায়ী মার্কেট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়মিত মতবিনিময় করতে হবে। সরকার, বিএসইসি, ডিএসই, ডিবিএ সবাই মিলে কিভাবে মার্কেটকে ইতিবাচকভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারি, সে বিষয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।”
ডিএসই চেয়ারম্যান আরো বলেন, “ঈদ পরবর্তী সময়ে বাজার উন্নয়নে আমাদের আরো কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ, কিছু সম্ভাবনাময় কোম্পানি এবং বাংকের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠক করব। আমরা পর্যায়ক্রমে করে যাব। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের গভার্নমেন্ট ট্রেজারি বিল বন্ডের প্রাইমারি অকশনটা যেন স্টক মার্কেটের মাধ্যমে করা হয়, তার জন্য আমরা প্রস্তাব রেখেছি।”
মমিনুল ইসলাম বলেন, “বর্তমানে সরকার পুঁজিবাজার উন্নয়ন নিয়ে খুবই আন্তরিক। তাই বিনিয়োগকারীদের হতাশ না হয়ে উৎসাহের সঙ্গে ভালো শেয়ারে নতুন বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাচ্ছি।” তিনি উপস্থিত অতিথিদের মার্কেটের আস্থা বাড়াতে একযোগে কাজ করার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসই এর পরিচালক মো. শাকিল রিজভী, মিনহাজ মান্নান ইমন, রিচার্ড ডি রোজারিও, ডিবিএ এর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলামসহ ডিবিএ এর পরিচালকবৃন্দ ও ডিএসই এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
আলোচনায় ডিবিএ’র সদস্যবৃন্দ বর্তমান বাজার পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণ এবং ভবিষ্যতে বাজারকে শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে ডিএসইর বিজনেস ডেভেলপমেন্ট টিম গঠন, মার্কেট কমিউনিকেশন স্ট্রাটেজি প্রণয়ন, তারল্য সংকট, ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স, পলিসি সাপোর্ট, নগদ উত্তোলনের সুবিধা দেওয়া, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, আইপিও পদ্ধতির সংস্কার (ডিজিটালাইজড), মন্দ আইপিও না আনা, ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিম পর্যালোচনা, বিও অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি ডিজিটালাইজড করার মাধ্যমে বৃদ্ধি করা, নতুন বিনিয়োগকারী আনা, ডিএসই মনিটরিং কার্যক্রমে প্রযুক্তির অর্ন্তভূক্তি, টি+১ এবং ডে ট্রেডিং চালু, সরকারি কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনা, প্রান্তিক পর্যায়ে শেয়ারব্যবসার সম্প্রসারণ, প্রাইমারি মার্কেটকে গতিশীল করা, আইপিও প্রসেসকে সহজিকরণের মাধ্যমে ভালো আইপিও আনার জন্য ডিএসই মার্কেটিং কার্যক্রম গতিশীল করা, জাতীয় বাজেটে বিশেষ প্রনোদনা সংযোজন করা, নেগেটিভ ইক্যুইটির সমাধান ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করেন।
ঢাকা/এনটি/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এসই ড এসই ল ইসল ম ব এসইস র জন য সরক র আইপ ও
এছাড়াও পড়ুন:
নারী স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে সময় বাড়াল বিএসইসি
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিটি কোম্পানিতে এক-পঞ্চমাংশ স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে একজন নারী স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে সময় বেধে দিয়েছিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে অনেক কোম্পানি ব্যর্থ হওয়ায় এবং ওইসব কোম্পানির আবেদনের আলোকে সময়সীমা বাড়িয়েছে বিএসইসি।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের ২৯ এপ্রিল প্রকাশিত গেজেটে এক বছর সময় দিয়ে গত ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিটি তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে কমপক্ষে এক জন করে নারী স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের জন্য সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেক কোম্পানি এ শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ওইসব কোম্পানি থেকে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। যার আলোকে নারী স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।