জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, তার (খলিলুর রহমান) বিতর্কিত ভূমিকার কারণে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংস্থাগুলোর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তিনি আর কী কী পরিকল্পনা নিয়ে এসেছেন, আল্লাহ মালুম।

আজ বৃহস্পতিবার বিকালে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এ সময় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা বলেছি, আগে আপনার (প্রধান উপদেষ্টা) উপদেষ্টা পরিষদ সংস্কার করুন। আপনার উপদেষ্টা পরিষদ নিরপেক্ষ নয়। এখানে দুইজন ছাত্র উপদেষ্টা আছেন। তারা একটা দলের। আরেকজন উপদেষ্টা ২০ বছর বিদেশে ছিলেন। এখন বাংলাদেশ উদ্ধার করতে এসেছেন। তার বিতর্কিত ভূমিকার কারণে বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। তিনি (খলিলুর রহমান) আর কী কী পরিকল্পনা নিয়ে এসেছেন, আল্লাহ মালুম। আরও কয়েকজন ফ্যাসিবাদের দোসর আপনার উপদেষ্টার মধ্যে আছে। আগে এই সংস্কার করুন। কারো নাম বলতে চাই না, বিব্রত হবেন। শর্ষের মধ্যে ভূত রেখে সংস্কার সংস্কার করেন। সেই সংস্কার হবে না।

সরকারের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে সালাহউদ্দিন বলেন, কয়টার সংস্কার করেছেন। সমস্ত সংস্কার এক সপ্তাহ থেকে এক মাসের ভেতরে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। যদি আপনি না পারেন আমাদেরকে বলেন। শুধুমাত্র যে সমস্ত সাংবিধানিক সংস্কারের মধ্যে ঐক্যমত সৃষ্টি হবে সেই সমস্ত সাংবিধানিক সংশোধনগুলো নির্বাচিত সংসদের মধ্যেই করতে হবে। এটাই হল আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য। সুতরাং সংস্কার সংস্কার বলে যে আপনারা মুখে ফেনা তুলছেন- কয়টা সংস্কার করেছেন?

তিনি বলেন, যে সংস্কারগুলো নির্বাহী আদেশে সম্ভব ওইসব করে দেন। জুডিশিয়ারি সংস্কার তো প্রায় হয়ে গেছে ঐক্যমত্য। অপেক্ষা করার কোনো দরকার নেই। জুডিশিয়ারি ভার্ডিক্টের মধ্য দিয়ে অনেক সংস্কার ইতোমধ্যে করে ফেলেছেন।

যে সমস্ত জুডিশিয়ারি সংস্কারগুলো দরকার তার মধ্যে প্রধানত হচ্ছে, একটা জাস্টিস নিয়োগের আইন করা, প্রধানত হচ্ছে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মধ্যে আরও বেশি সংস্কার করা। এটা আর্টিকেল ৯৬ অনুসারে.

.. প্রধানত সংস্কার হচ্ছে আর্টিকেল ১৬ অনুসারে… অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নিয়ে আসা। নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রশাসনিক কমিশনের যেসব সংস্কার বিষয়ে একমত হয়েছে তা উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন।

নির্বাচনকে বিলম্বিত না করার আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সুতরাং বাকি থাকলো সংবিধান সংস্কার। সংস্কারের এই সমস্ত বাহানা করে নির্বাচনকে বিলম্বিত করবেন না। জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করবেন না। গণতান্ত্রিক শক্তি সময়ের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করার মতো কোনো শক্তিকে সুযোগ দেবে না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বক্তব্য রাখেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহম দ ব এনপ স ল হউদ দ ন স স ক র কর র রহম ন উপদ ষ ট এস ছ ন সমস ত ব এনপ আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাজা শরফুদ্দীন চিশতির মাজারে হাত দিলে পরিণাম হবে ভয়াবহ: আহলে সুন্
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • প্রাথমিকে গানের শিক্ষক বাদ দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • পনেরো বছরে থেমে গেল শিশুশিল্পীর জীবন
  • পাকিস্তানে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ৫ সেনা নিহত
  • আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় কর্মসূচি দেওয়া স্ববিরোধিতা মনে করছে বিএনপি