রাজশাহী কলেজ উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঊনবিংশ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে রয়েছে বহু নিদর্শন। এর মধ্যে একটি বিশেষ সম্পদ জাদুঘর, যা অযত্ন-অবহেলায় বছরের পর বছর ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। 

জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শুরুতে প্রতিষ্ঠা করা হয় জাদুঘর বা সংগ্রহশালা। তবে তা কখনোই শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কলেজ সংশ্লিষ্টদের সামনে আনা হয়নি। বছরের পর বছর ধরে কলেজের একটি নিদ্দিষ্ট কক্ষে এসব নিদর্শন। সর্বশেষ প্রায় ৮ বছর আগে সংস্কার করে একটি নির্দিষ্ট কক্ষে তালাবদ্ধ রাখা হয় এসব উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। সেটাও জানেন না কলেজে অধিকাংশ শিক্ষক শিক্ষার্থী।

একাধিকবার আবেদন জানানো পর সম্প্রতি সাংবাদিকদের সামনে খোলা হয় এই কক্ষের তালা। ভিতরে প্রবেশ করেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে এতদিন অপেক্ষা করানোর কারণ। জাদুঘর খোলার আগে কলেজ কর্তৃপক্ষ সেটি পরিষ্কার করলেও অবমূল্যায়নের ছাপটি রয়েই গেছে এর প্রতিটি কোণে।

আরো পড়ুন:

১৭ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে রাবি, হল বন্ধ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

হল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ইবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান

ঘরে ঢুকতেই দেখা যায়, দেওয়ালে নামহীন, সালবিহীন ধুলোমাখা ছবি। যত্রতত্র পড়ে আছে ফাইলে বন্দি পুরনো নথিপত্র ও বই। রয়েছে দেশি বিদেশি মনীষীদের প্রতিকৃতি, কাঠের আলমারি, ব্রিটিশ আমলের টেবিল ফ্যান, আটটি ঘড়ি, ধুলোমাখা দুইটি মাইক্রোস্কোপ, তিনটি রেডিও, আয়না, দুইটি মেডেল, ঝাড়বাতি, প্রিন্টার, ৩৪টি কাঠের অঙ্কিত ছবি, ছয়টি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র, প্রিন্টিং ওয়ালমেট ও শিক্ষকদের ওনারবোর্ড ইত্যাদি।

কিন্তু এসব ঐতিহাসিক সম্পদের সংরক্ষণের নেই কোনো সঠিক উদ্যোগ। কলেজের লাইব্রেরিয়ান পর্যন্ত জানেন না জাদুঘরের অস্তিত্ব সম্পর্কে। 

জাদুঘর সম্পর্কে সামিয়া ফেরদৌস নামে কলেজের এক শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলে তিনি এক রাশ বিস্ময় ও কৌতূহল নিয়ে প্রশ্ন করেন, “রাজশাহী কলেজে কি জাদুঘর আছে?” বোঝাই যায়, তিনি জাদুঘর সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞাত; তার মতো অবস্থা অনেকেরই।

আরেক শিক্ষার্থী আব্দুস সামাদ বলেন, “কলেজের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকলেও আমাদের তা জানানো হয়নি। শিক্ষকদের বক্তব্যেও উঠে এসেছে, শ্রেণিকক্ষে ইতিহাসচর্চা তেমন হয় না, যদিও লাইব্রেরিতে এ সংক্রান্ত বইপত্র রয়েছে। রাজশাহী কলেজের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে এই জাদুঘরকে পুনরুজ্জীবিত করে শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা উচিৎ।”

কলেজে সাংস্কৃতিক কর্মী অলিউর রহমান বাবু বলেন, “একটি ঐতিহ্যবাহী কলেজের জাদুঘর কেনো অবহেলায় পরে থাকবে এবং কেনোইবা এ জাদুঘরটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে বন্ধ রেখেছে কলেজ প্রশাসন? কলেজের জাদুঘর শিক্ষার্থীদের জন্য, এটা কলেজের একটি ঐতিহ্য। এটাকে অবমূল্যায়ন করে প্রশাসন তাদের চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।”

এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মু.

যুহুর আলি বলেন, “জাদুঘরের উন্নয়ন সম্পর্কে আমাদের এখন পর্যন্ত কোনো কার্যক্রম করা হয়নি। বর্তমানে জাদুঘরের গুরুত্ব সম্পর্কে যারা অবহিত, তাদের ও সরকারের সহায়তা থাকলে জাদুঘরের উন্নয়ন করা সম্ভব।”

ঢাকা/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ দ ঘর র কল জ র

এছাড়াও পড়ুন:

কারও ওপর আক্রমণ হলে যৌথভাবে জবাব দেবে পাকিস্তান ও সৌদি আরব

পাকিস্তান ও সৌদি আরব ‘কৌশলগত যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি’ সই করেছে। বুধবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এ চুক্তি সই করেন। চুক্তি অনুযায়ী, কোনো একটি দেশ আক্রান্ত হলে সেটাকে দুই দেশের ওপর ‘আগ্রাসন’ হিসেবে দেখবে রিয়াদ ও ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রিয়াদের ইয়ামামা প্রাসাদে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে শাহবাজ শরিফের বৈঠক হয়। সেখানে দুই নেতা চুক্তিতে সই করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ জোরদার করার লক্ষ্যে দুই দেশের নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও নিজেদের সুরক্ষিত করা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি অর্জনের জন্য উভয় দেশের অভিন্ন প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটেছে এই চুক্তিতে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসলামাবাদ ও রিয়াদের মধ্যে ‘প্রায় আট দশকের ঐতিহাসিক অংশীদারত্ব...ভ্রাতৃত্ব ও ইসলামি সংহতির বন্ধন...অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থ এবং ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার’ ভিত্তিতে এ চুক্তি সই করা হয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বলেছে, দু্ই পক্ষ ও তাদের প্রতিনিধিদল উভয় দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ও কৌশলগত সম্পর্ক পর্যালোচনা করেছে। একই সঙ্গে দুই পক্ষের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে।

এর আগে সৌদি আরব সফররত শাহবাজ শরিফ ইয়ামামা প্রাসাদে পৌঁছালে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান সৌদি যুবরাজ। এ সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে সৌদি আরবের যুবরাজের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে বৈঠক করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ