রাজশাহী কলেজে বহু বছর ধরে তালাবদ্ধ জাদুঘর
Published: 29th, May 2025 GMT
রাজশাহী কলেজ উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঊনবিংশ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে রয়েছে বহু নিদর্শন। এর মধ্যে একটি বিশেষ সম্পদ জাদুঘর, যা অযত্ন-অবহেলায় বছরের পর বছর ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে।
জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শুরুতে প্রতিষ্ঠা করা হয় জাদুঘর বা সংগ্রহশালা। তবে তা কখনোই শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কলেজ সংশ্লিষ্টদের সামনে আনা হয়নি। বছরের পর বছর ধরে কলেজের একটি নিদ্দিষ্ট কক্ষে এসব নিদর্শন। সর্বশেষ প্রায় ৮ বছর আগে সংস্কার করে একটি নির্দিষ্ট কক্ষে তালাবদ্ধ রাখা হয় এসব উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। সেটাও জানেন না কলেজে অধিকাংশ শিক্ষক শিক্ষার্থী।
একাধিকবার আবেদন জানানো পর সম্প্রতি সাংবাদিকদের সামনে খোলা হয় এই কক্ষের তালা। ভিতরে প্রবেশ করেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে এতদিন অপেক্ষা করানোর কারণ। জাদুঘর খোলার আগে কলেজ কর্তৃপক্ষ সেটি পরিষ্কার করলেও অবমূল্যায়নের ছাপটি রয়েই গেছে এর প্রতিটি কোণে।
আরো পড়ুন:
১৭ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে রাবি, হল বন্ধ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
হল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ইবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান
ঘরে ঢুকতেই দেখা যায়, দেওয়ালে নামহীন, সালবিহীন ধুলোমাখা ছবি। যত্রতত্র পড়ে আছে ফাইলে বন্দি পুরনো নথিপত্র ও বই। রয়েছে দেশি বিদেশি মনীষীদের প্রতিকৃতি, কাঠের আলমারি, ব্রিটিশ আমলের টেবিল ফ্যান, আটটি ঘড়ি, ধুলোমাখা দুইটি মাইক্রোস্কোপ, তিনটি রেডিও, আয়না, দুইটি মেডেল, ঝাড়বাতি, প্রিন্টার, ৩৪টি কাঠের অঙ্কিত ছবি, ছয়টি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র, প্রিন্টিং ওয়ালমেট ও শিক্ষকদের ওনারবোর্ড ইত্যাদি।
কিন্তু এসব ঐতিহাসিক সম্পদের সংরক্ষণের নেই কোনো সঠিক উদ্যোগ। কলেজের লাইব্রেরিয়ান পর্যন্ত জানেন না জাদুঘরের অস্তিত্ব সম্পর্কে।
জাদুঘর সম্পর্কে সামিয়া ফেরদৌস নামে কলেজের এক শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলে তিনি এক রাশ বিস্ময় ও কৌতূহল নিয়ে প্রশ্ন করেন, “রাজশাহী কলেজে কি জাদুঘর আছে?” বোঝাই যায়, তিনি জাদুঘর সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞাত; তার মতো অবস্থা অনেকেরই।
আরেক শিক্ষার্থী আব্দুস সামাদ বলেন, “কলেজের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকলেও আমাদের তা জানানো হয়নি। শিক্ষকদের বক্তব্যেও উঠে এসেছে, শ্রেণিকক্ষে ইতিহাসচর্চা তেমন হয় না, যদিও লাইব্রেরিতে এ সংক্রান্ত বইপত্র রয়েছে। রাজশাহী কলেজের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে এই জাদুঘরকে পুনরুজ্জীবিত করে শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা উচিৎ।”
কলেজে সাংস্কৃতিক কর্মী অলিউর রহমান বাবু বলেন, “একটি ঐতিহ্যবাহী কলেজের জাদুঘর কেনো অবহেলায় পরে থাকবে এবং কেনোইবা এ জাদুঘরটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে বন্ধ রেখেছে কলেজ প্রশাসন? কলেজের জাদুঘর শিক্ষার্থীদের জন্য, এটা কলেজের একটি ঐতিহ্য। এটাকে অবমূল্যায়ন করে প্রশাসন তাদের চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।”
এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মু.
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ দ ঘর র কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।