ছয়বার আজান
মক্কায় আপনি ছয়টি আজান শুনতে পাবেন। প্রথম আজানটি আসলে তাহাজ্জুদের; তবে তাহাজ্জুদের নামাজে কোনো জামাত হয় না।
সঙ্গে ছাতা রাখুন
মক্কার তাপমাত্রা সাধারণত ৪০ থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে থাকে। তাই দিনের বেলায় সব সময় সঙ্গে ছাতা রাখুন।
মিনা ও আরাফাতে মোবাইল ফোন
তুলনামূলকভাবে অনেক মানুষ মিনা ও আরাফাতে অবস্থান করেন বলে হজের সময় সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক ভালো পাওয়া যায় না।
সিমকার্ড
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিমকার্ড কিনে নিলেই ভালো। আর হোটেলে ওয়াই-ফাই থাকে, সেটাও ব্যবহার করতে পারেন। মনে রাখবেন, সৌদি আরবে বেশির ভাগ সামাজিক যোগাযোগের অ্যাপ, যেমন হোয়াটসঅ্যাপ ও ভাইবারের ভিডিও কল কাজ করে না।
কেনাকাটা
মক্কা-মদিনায় অনেক বাংলাদেশি কাজ করেন, তাই ভাষাগত সমস্যা তেমন হওয়ার কথা নয়। কেনাকাটার সময় দরদাম করে কেনা ভালো।
দমে শোকর বা কোরবানি
কোরবানি বা দম দেওয়ার জন্য ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) সৌদি সরকারের স্বীকৃত ব্যবস্থা আছে। মসজিদের পাশের বুথ থেকে ৭২০ সৌদি রিয়ালে কুপন কেনা যাবে। এতে সময় বাঁচে এবং নিরাপদও। এর বাইরে দেওয়া হলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
খাবার
মক্কা-মদিনায় প্রচুর বাংলাদেশি হোটেল আছে। মক্কার হোটেলগুলোর নাম ঢাকা, এশিয়া, চট্টগ্রাম, জমজম ইত্যাদি। এসব হোটেলে ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, ডাল— সব ধরনের বাঙালি খাবার পাওয়া যায়। হোটেল থেকে পার্সেলে খাবার কিনে আনাও যায়।
প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম
সাধারণত ১ ভরি (১১.
জানাজার নামাজ
মক্কায় প্রায় প্রতিটি জামাতের নামাজের পরেই কারও না কারও জানাজা হয়। এগুলো অবশ্যই আদায় করুন।
মদিনায় যাওয়া
মদিনায় মসজিদে নববিতে অবশ্যই নামাজ আদায় করবেন, প্রতি ওয়াক্ত জামাতের সঙ্গে। রিয়াজুল জান্নাতে ঢোকার জন্য আগেভাগেই অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করতে হয়। এ ব্যাপারে আপনার এজেন্সির সহায়তা নিন।
মক্কার কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থান
জাবালে নুর
মক্কায় কাবা শরিফের কাছেই জাবালে নুর বা হেরা পর্বত। এ পর্বতে ওঠানামা বেশ কঠিন। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিয়মিত এ পর্বতে ওঠানামা করতেন।
জাবালে রহমত
আরাফাতে রয়েছে জাবালে রহমত বা রহমতের পাহাড়। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জাবালে রহমতের কাছে দাঁড়িয়ে বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।
নামিরাহ মসজিদ
হজের দিন আরাফাতে নামিরাহ মসজিদ থেকে হজের খুতবা দেওয়া হয়। মসজিদটিতে ছয়টি মিনার, তিনটি গম্বুজ ও ১০টি প্রধান প্রবেশপথ রয়েছে।
জান্নাতুল মা’আলা
জান্নাতুল মা’আলা মসজিদুল হারামের পূর্ব দিকে অবস্থিত। এটি মক্কার বিখ্যাত কবরস্থান। এখানে রয়েছে বিবি খাদিজা (রা.)-এর কবর।
মসজিদে জিন
জান্নাতুল মা’আলা কবরস্থানের কাছে মসজিদে জিন। সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়, জিনরা এখানে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে একাধিকবার এসেছেন।
মকা জাদুঘর
মক্কা উন্মুল জুদ এলাকায় কাবার গিলাফ তৈরির কারখানা। তার পাশে দুই মসজিদে ব্যবহৃত পুরোনো জিনিসপত্র দেখার ব্যবস্থা রয়েছে।
হজযাত্রীর রোজনামচা
হজযাত্রীরা ৪০ থেকে ৫০ দিন সৌদি আরবে অবস্থান করেন। এর মধ্যে জিলহজ মাসের ৭ থেকে ১২ তারিখ হজের আনুষ্ঠানিকতায় পূর্ণ থাকে। আর আছে মদিনায় মসজিদে নববিতে আট দিন ৪০ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। বাকি দিনগুলো ইবাদত-বন্দেগি আর স্বাভাবিক জীবনযাপনে কাটে হজ পালনকারীদের।
হজ পালন করতে গিয়ে মক্কা-মদিনায় সাধ্যমতো ইবাদত করা ভালো। তাই একজন হজযাত্রীর নিজস্ব রোজনামচা বা রুটিন থাকা দরকার। সবচেয়ে বড় কথা– স্থান, কাল, পাত্রভেদে সুবিধামতো আমলগুলো করার চেষ্টা করবেন। সব নামাজ মক্কায় থাকলে মসজিদুল হারামে আর মদিনায় অবস্থান করলে মসজিদে নববিতে জামাতে নামাজ আদায়ের চেষ্টা করা।
ভোররাত : তাহাজ্জুদের নামাজ আদায়। মক্কা-মদিনায় জামাতে ফজরের নামাজ আদায় করা। তাওয়াফ করা, জমজম পানি পান, কোরআন তিলাওয়াত করা।
সকাল : জমজমের পানি পান, সকালের নাশতা খাওয়া, ঐতিহাসিক স্থানে বেড়ানো, ব্যক্তিগত কাজ বা বিশ্রাম।
দুপুর : জামাতে জোহরের নামাজ আদায়। জমজমের পানি পান, দুপুরের খাবার খাওয়া, বিশ্রাম নেওয়া।
বিকেল : জমজমের পানি পান, মক্কা-মদিনায় জামাতে আসরের নামাজ আদায়।
সন্ধ্যা : জামাতে মাগরিবের নামাজ আদায় করা। তাওয়াফ করা, জমজমের পানি পান, কোরআন তিলাওয়াত করা, আল্লাহর জিকির করা।
রাত : মক্কা-মদিনায় জামাতে এশার নামাজ আদায়। তাওয়াফ করা। জমজমের পানি পান, নফল নামাজ আদায়, বিতরের নামাজ আদায় করা। রাতের খাবার খাওয়া। ঘুমানোর প্রস্তুতি। আল্লাহর জিকির করা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হজ জমজম র প ন আর ফ ত মদ ন য় মসজ দ অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
সিজারের সময় নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সিজারিয়ান অপারেশনের সময় এক নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ক্লিনিকের চেয়ারম্যান ও আবাসিক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নবজাতকসহ তাদেরকে ক্লিনিক থেকে বের করে দেওয়া হয়। ওই রাতেই শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম হাসপাতালে) নেওয়া হয়।
অভিযুক্ত চিকিৎসক পার্থ সমদ্দার কলাপাড়া পৌর শহরের জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আবাসিক চিকিৎসক এবং চেয়ারম্যান।শিশুটির
স্বজনদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রসব বেদনা নিয়ে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন লালুয়ার ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে ও রফিকুলের স্ত্রী মিম বেগম। ওই রাতেই মিমের সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডা. পার্থ সমদ্দার। সিজারের কিছুক্ষণ পরই টিকার কথা বলে নবজাতকের পায়ে একটি ইনজেকশন পুশ করা হয়। পরের দিন থেকেই নবজাতকের বাম পা ফুলতে শুরু করে এবং কান্না বাড়তে থাকে। বিষয়টি চিকিৎসক ও নার্সদেরকে অবহিত করলে তারা তাতে কর্ণপাত করেননি। উল্টো ওই ক্লিনিকের কর্মী ও নার্সরা নবজাতকের স্বজনদের সঙ্গে অসদাচরণের পাশাপাশি তাদের ক্লিনিক থেকে বের করে দেন। পরে অন্যত্র এক্সরে করে জানা যায়, সিজারের সময় নবাজতকের পা ভেঙে ফেলেছেন চিকিৎসক।
নবজাতকের মা মিম আক্তার বলেছেন, বাচ্চা অনবরত কান্না করলে প্রথমে নার্স ও পরে চিকিৎককে অবহিত করা হয়। বাচ্চার বাম ফুলে গেলে তা জানানো হয়। কিন্তু, তারা এর কোনো প্রতিকার না করে আমাদের ধমকাতে থাকেন। ক্লিনিক ছেড়ে চলে যেতে চাপ প্রয়োগ করেন।
নবজাতকের নানা সিদ্দিক বলেন, টিকার কথা বলে আমার নাতিকে শরীর অবশ করার ইনজেকশন দিয়েছিল নার্সরা। ইনজেকশনের কার্যকারিতা শেষ হওয়ার পরপরই আমার নাতি অনেক কান্না করে। আমার স্ত্রী নার্সদের বললে তারা তাকে মারধরের চেষ্টা করে। আমাদের সঙ্গে ক্লিনিকের সবাই অনেক খারাপ আচরণ করেছে। এভাবে রোগীদের সঙ্গে প্রাইভেট ক্লিনিকের কর্মকর্তারাও যদি অসদাচরণ করে, তাহলে আমরা কোথায় যাব?
সিজারের সময় নবজাকের পা ভাঙেনি, দাবি করে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান ডা. পার্থ সমদ্দার বলেছেন, আমি শিশু বিশেষজ্ঞ নই। নবজাতককে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেছেন, যদি সিজারিয়ান অপারেশনের প্রশিক্ষণ থাকে, তাহলে এনেস্থেসিস্টও সিজার করতে পারেন। তবে, এনেস্থেসিস্ট একাই সিজারিয়ান অপারেশন করতে পারেন না।
ঢাকা/ইমরান/রফিক