মসজিদুল হারামের সীমানার বাইরে মিকাতের ভেতরের স্থানটি হিল নামে পরিচিত। এই হিল অথবা মিকাত থেকে ইহরামের নিয়ত করে বায়তুল্লাহ শরিফ তাওয়াফ করা, সাফা-মারওয়া সাঈ করা এবং মাথার চুল ফেলে দেওয়া বা ছোট করাকে ওমরাহ বলে। 
৯ থেকে ১৩ জিলহজ পর্যন্ত সময় ছাড়া বছরের যে কোনো সময় ওমরাহ পালন করা যায়। হজের পাঁচ দিন ওমরাহ করা মাকরুহ। (আল-বাহরুল আমিক, ৪/২০২১)। 

ওমরাহর ফরজ, ওয়াজিব
ওমরাহর ফরজ ২টি: ইহরাম ও তাওয়াফ।
ওমরাহর ওয়াজিব ২টি: সাঈ ও হলক করা। 

নারীদের ইহরাম
নারীদের ইহরাম একটু ভিন্ন। নারীদের ইজার ও রিদা পরতে হয় না; বরং নারীরা যে কোনো রঙের বা প্রকারের কাপড় পরতে পারেন। তবে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যে কোনোভাবেই যেন এমন ধরনের কাপড় না পরা হয়, যাতে পর্দা নষ্ট হয়।
ইহরামের ফরজ ২টি: নিয়ত করা ও তালবিয়া পড়া।
ইহরামের ওয়াজিব ২টি: মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধা এবং নিষিদ্ধ কাজ থেকে দূরে থাকা।

তাওয়াফ
তাওয়াফের ফরজ ৩টি: ১.

নিয়ত করা। ২. বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করা। ৩. নিজে তাওয়াফ করা।
তাওয়াফের ওয়াজিব ৬টি: ১. শরীর পাক রাখা। ২. হেঁটে তাওয়াফ করা। ৩. হাতিমের বাইরে দিয়ে তাওয়াফ করা। ৪. তাওয়াফের সাত চক্কর পুরো করা। ৫. তাওয়াফ হাজরে আসওয়াদ থেকে শুরু করা। ৬. তাওয়াফ শেষে মাকামে ইব্রাহিমের পেছনে দুই রাকাত নামাজ পড়া।
তাওয়াফের সুন্নত ৪টি: ১. হাজরে আসওয়াদের দিকে মুখ করে তাওয়াফ শুরু করা। ২. প্রথম তিন তাওয়াফে রমল করা (বীরের মতো চলা)। ৩. প্রতি চক্করে সম্ভব হলে হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করা। ৪. তাওয়াফ ও নামাজ শেষে জমজমের পানি পান করা।

সাঈ
সাঈ মানে সাতটি দৌড়। সাঈ করার সময় সবুজ বাতির নিচে পুরুষেরা দৌড়াবেন। নারীরা স্বাভাবিকভাবে চলবেন (বাদায়েউস সানায়ে, ২/৪৮০)। 
সাঈর ওয়াজিব: ১. ওজর না থাকলে হেঁটে সাঈ করা। ২. সাত চক্কর পুরো করার পর মাথা মুণ্ডন করা।
ওমরাহর কাজ ধারাবাহিকভাবে করতে হবে, যেমন তাওয়াফ করা, নামাজ আদায় করা, জমজমের পানি পান করা, সাঈ করা (সাফা-মারওয়া পাহাড়ে দৌড়ানো), মাথা ন্যাড়া অথবা চুল ছোট করা।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হজ স ঈ কর র ফরজ ইহর ম ওমর হ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রদর্শনী, কুইজ, সুডোকুতে জমজমাট বিজ্ঞান উৎসব

তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত বিকাশ-বিজ্ঞানচিন্তা বিজ্ঞান উৎসবের জাতীয় পর্বে চলছে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান প্রজেক্টের প্রদর্শনী।

এ ছাড়া কুইজ, রুবিকস কিউব ও সুডোকু প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে তারা। এর ফাঁকে ফাঁকে রয়েছে বিশেষজ্ঞদের থেকে বিজ্ঞানবিষয়ক বক্তব্য শোনা।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে এ উৎসব চলবে বিকেল পর্যন্ত।

আয়োজনে বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, কিশোর তরুণদের বিজ্ঞান, এআইয়ের মতো বিজ্ঞানের নতুন বিষয়গুলোর প্রতি আগ্রহী করে গড়ে তুলতে হবে। চিন্তাশক্তির বিকাশ ঘটানোই এই উৎসবের উদ্দেশ্য।

বিকাশ লিমিটেডের ইভিপি অ্যান্ড হেড অব রেগুলেটরি অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের প্রধান হুমায়ুন কবির বলেন, এ দেশের মানুষের মেধা আছে, বুদ্ধি আছে যা কাজে লাগাতে হবে। পৃথিবী অনেক এগিয়ে গেছে। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, বিজ্ঞানমনস্ক হওয়া বেশি জরুরি। এ দেশে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয় বিদেশি পরামর্শকদের পেছনে। তাই এ দেশের মেধাকে এ জায়গা ধরতে হবে। চিন্তা করতে হবে, সমস্যা সমাধান করতে হবে, প্রোগ্রামিং করতে হবে।

কথাসাহিত্যিক ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক বলেন, বিজ্ঞান জানতে হবে, বিজ্ঞানমনস্ক হতে হবে। ভালো ছাত্র হতে হলে প্রচুর পড়তে হবে, নানা সামাজিক কাজে যুক্ত থাকতে হবে। ভালো মানুষ হতে হবে।

‘রোবটরা কি পৃথিবী দখল করে নেবে’—এ বিষয়ে আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক লাফিফা জামাল। তিনি বলেন, ‘রোবট কি মানুষের জায়গা দখল করে নেবে? রোবট কিন্তু তার অনুকূল পরিবেশ না পেলে সে কিছু করতে পারে না; কিন্তু মানুষ তা পারে। নিজের বুদ্ধিকে শাণ দিতে হবে।’

আয়োজনে ‘জিন এবং ডিএনএ’—যে ভাষায় লেখা আমাদের গল্প’ নিয়ে কথা বলবেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক আদনান মান্নান। এ ছাড়া কার্টুন ও কমিকস নিয়ে কার্টুনিস্ট নাসরিন সুলতানা ‘কালিতুলিতে গল্পবিজ্ঞান’ নিয়ে কথা বলেন। গান পরিবেশন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদ অন্তু।

জাতীয় বিজ্ঞান উৎসবে ৭০টির বেশি স্কুলের আঞ্চলিক পর্বের বিজয়ী ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছে প্রজেক্ট প্রদর্শনী ও বিজ্ঞান কুইজ প্রতিযোগিতায়। প্রজেক্ট প্রদর্শনীতে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা একটি ক্যাটাগরিতে অংশ নিচ্ছে। আর কুইজের নিম্নমাধ্যমিক ক্যাটাগরিতে রয়েছে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এবং মাধ্যমিক ক্যাটাগরিতে নবম থেকে দশম শ্রেণি ও ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে আয়োজনের সূচনা করেন সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ ব্রাদার লিও জেমস পেরেরা, বিকাশ লিমিটেডের ইভিপি অ্যান্ড হেড অব রেগুলেটরি অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট হুমায়ূন কবির, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, কথাসাহিত্যিক ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক, বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম।

এ পর্বের বিজয়ীদের জন্য থাকছে ল্যাপটপ, ট্যাব, বই, বিজ্ঞান বাক্স, ট্রফি, মেডেল, সার্টিফিকেটসহ অনেক পুরস্কার। এ ছাড়া দিনব্যাপী থাকবে রোবট শো, সায়েন্স আনপ্লাগড (বিজ্ঞান বক্তৃতা), বিজ্ঞান ম্যাজিক, প্রশ্নোত্তর পর্ব, গান, তারকাকথনসহ অনেক আয়োজন।

বিজ্ঞান উৎসবের যেকোনো খবর জানতে চোখ রাখুন bigganchinta.com-এ, বিকাশ-বিজ্ঞানচিন্তা বিজ্ঞান উৎসব ও বিজ্ঞানচিন্তার ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে এবং প্রথম আলো ও বিজ্ঞানচিন্তার প্রিন্ট সংস্করণে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রদর্শনী, কুইজ, সুডোকুতে জমজমাট বিজ্ঞান উৎসব