কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সিরাজগঞ্জে প্রস্তুত করা হয়েছে বাহমা ও শাহী আল জাতের দুটি ষাঁড়। হাটে তোলার আগেই জেলায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে সোহাগ বাবু ও তুফানে নামের বিশাল আকৃতির দুই ষাঁড়। 

শাহজাদপুর উপজেলার উল্টাডাব গ্রামের কৃষক আবু সাঈদ সরদারের খামারে সোহাগ বাবু ও কামারখন্দের ধলেশ্বর গ্রামের প্রবাসি মইনুল হকের খামারে তুফানকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। 

বাবুর ওজন প্রায় ৮৮০ কেজি এবং তুফানের ওজন ৬৮০ কেজি। কোরবানি ঈদ সামনে রেখে সোহাগ বাবুর দাম হাঁকাচ্ছেন ৬ লাখ ৬০ হাজার এবং তুফানের দাম ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা।

আরো পড়ুন:

সিরাজগঞ্জে ৩ হাজার কোটি টাকার পশু বিক্রির আশা 

বগুড়ার খামারে ১১০০ কেজির লাক্সারি প্র্যাডো

ষাঁড় দুটিকে বড় করতে কোনো ধরনের স্টেরয়েড বা কৃত্রিম মোটাতাজাকরণ ওষুধ ব্যবহার করা হয়নি বলে দাবি করেন মালিকরা। পুরোপুরি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে লালন-পালন করা হয়েছে। ষাঁড় দুটি স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশাল আকৃতির ষাঁড় দুটি দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা ও ব্যবসায়ীরা।

বাবুর ওজন প্রায় ৮৮০ কেজি। মালিক দাম চেয়েছেন সাড়ে ৬ লাখের বেশি।

কৃষক আবু সাঈদ সরদার বলেন, “২ বছর আগে শংকর জাতের একটি শাহীয়াল গাভি সাদাকালো ডোরাকাটা একটি বাছুর জন্ম দেয়। বাছুরটির আকার আকৃতি ও ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ও হৃষ্টপুষ্ট হওয়ায় আদর করে তার নাম রাখা হয় সোহাগ বাবু। গরুটিকে নিজ হাতে খাওয়ানো থেকে শুরু করে সবকিছুই করি। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলে বাবুর পরিচর্যা।”

স্থানীয়রা জানান, ১৩ বছর আগে প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে মাত্র ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি গাভি কিনে খামার শুরু করেন মইনুল। ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন একটি আধুনিক খামার। এখন তার খামারে রয়েছে ১২টি উন্নত জাতের ফ্রিজিয়াম, হোলস্টাইন, ফ্রিজিয়ান ও শাহী আল জাতের গরু। 

তুফান সম্পর্কে মইনুল হক বলেন, “আমার পরিশ্রম আর ভালোবাসার ফল তুফান। ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা পেলে তুফানকে ছাড়বো।” 

তিনি জানান, ষাঁড়টিকে বড় করতে কোনো ধরনের মোটাতাজাকরণ ওষুধ ব্যবহার করা হয়নি। তুফানকে প্রতিদিন খাওয়ানো হয় ঘাস, খৈল, ভুষি ও ছোলা জাতীয় প্রাকৃতিক খাদ্য। 

লোকমান হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, “তুফানকে দেখে আমার পছন্দ হয়েছে। সাধ্য অনুযায়ী দামও বলেছি, কিন্তু গরুর মালিক এ দামে বিক্রি করতে রাজি হননি। লাভ না হলে তো নিশ্চয় বিক্রি করবেন না।” 

তুফানের ওজন প্রায় ৭০০ কেজি। ৫ লাখের বেশি হলে তবেই বিক্রি করা হবে 

রাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.

একে এম, আনোয়ারুল হক বলেন, “জেলায় এবার কোরবানি যোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৫৫ হাজার ৯০৪টি। স্থানীয় চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ২৪১টি। অবশিষ্ট ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬৬৩টি পশু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যাবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।”

তিনি বলেন, “আশা করছি, জেলার ছোট-বড় সব খামারিরা গবাদিপশু ভালো দামে বিক্রির মাধ্যমে লাভবান হবেন। প্রাকৃতিক উপায়ে এ জেলার গরু ছাগল লালন-পালন করায় সারা দেশে এ অঞ্চলের গরু ছাগলের চাহিদা বেশি। অন্য জেলার ক্রেতারাও কোনো ঝামেলা ছাড়াই হাট থেকে গবাদিপশু ক্রয় করতে পারবেন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে থাকবে সার্বিক সহযোগিতা।”

ঢাকা/রাসেল/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র হ ট র জগঞ জ র ওজন

এছাড়াও পড়ুন:

এবার চাকরি থেকে বরখাস্ত হলেন যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস

সাময়িক বরখাস্তের পর এবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাসকে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’–এর কারণে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার জারি করা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এই গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে এই দণ্ড কার্যকর হবে। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

প্রজ্ঞাপনে বিভিন্ন তথ্য ও অভিযোগ উল্লেখ করে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাসকে ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক হিসেবে নিয়োগের জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। তিনি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে যোগদানও করেন। তাঁর বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশিত হওয়ায় তাঁর আদেশ প্রত্যাহার বা বাতিলের জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি গত বছরের ৩ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। এরপর তাঁকে যুগ্ম সচিব হিসেবে পরবর্তী পদায়নের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যোগ দেননি। অর্থাৎ তিনি গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে এখনো বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন, যা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুসারে ‘পলায়ন’–এর পর্যায়ভুক্ত অপরাধ।

ধনঞ্জয় কুমার দাসের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র হত্যার মামলা রুজু হওয়াসহ আরও বিভিন্ন অভিযোগের কথা উল্লেখ করে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া, তদন্ত বোর্ড গঠন ও সরকারি কর্ম কমিশনের মতামতের কথা তুলে ধরা হয় প্রজ্ঞাপনে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে ‘চাকরি থেকে বরখাস্ত’ করার দণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এদিকে, বরখাস্ত হওয়া যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস গতকাল রাতে তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘অবৈধ ইউনূস সরকার আমাকে নাকি বরখাস্ত করছে! আজ থেকে আমি মুক্ত, স্বাধীন। নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে হচ্ছে এমন অথর্ব সরকারের অধীনে আমাকে একদিনও চাকরি করতে হয়নি। থ্রি চিয়ার্স ফর “মোখলেসীয় সিভিল সার্ভিস”।’

আরও পড়ুনতিন সচিবসহ যেসব কর্মকর্তাকে পাঠানো হলো বাধ্যতামূলক অবসরে২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ