শেষ কর্মদিবসে প্রধান শিক্ষককে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে বিদায়, লালগালিচা সংবর্ধনা
Published: 30th, May 2025 GMT
শেষ কর্মদিবসে প্রধান শিক্ষককে বিদায় জানাতে ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছে শিক্ষার্থীরা। ফুলে সাজানো ঘোড়ার গাড়িতে বসিয়ে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়, ছিল লালগালিচা, মালা পরানো আর করতালিতে ভেসে যাওয়া এক আবেগঘন মুহূর্ত।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে পঞ্চগড় বিষ্ণু প্রসাদ (বিপি) সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে এই আয়োজন করা হয়। অবসরে যাওয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো.
বিদ্যালয়ের মূল ভবন থেকে ফটক পর্যন্ত বিছানো হয় লালগালিচা। দুই পাশে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। মো. ছায়ফুল্লাহ মাঠে এসে সবাইকে উদ্দেশ করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। পরে তাঁকে ফুলের মালা পরানো হয় এবং করতালির মধ্য দিয়ে লালগালিচা দিয়ে ফটকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তিনি ফুলে সাজানো ঘোড়ার গাড়িতে উঠে বসেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাঁকে শোভাযাত্রা করে শহরের কায়েতপাড়া এলাকার বাসায় পৌঁছে দেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মো. ছায়ফুল্লাহ ১৯৯১ সালের ২৫ মে দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (ইসলাম ধর্ম) হিসেবে যোগ দেন। পরে বিভিন্ন সরকারি বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকার পর ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল পঞ্চগড় বিপি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে যোগ দেন। ২০২৩ সালের ১৪ মে থেকে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বিকেলে মো. ছায়ফুল্লাহর শেষ কর্মদিবস উপলক্ষে শিক্ষার্থীরা প্রতিটি শ্রেণি থেকে তাঁকে একটি করে ক্রেস্ট তুলে দেয়। এ সময় বিদ্যালয়ের স্কাউট সদস্যরা তাঁকে স্কাউট সালাম দেয়। পরে তাঁকে ফুলের মালা পরিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে বসিয়ে জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহরের কায়েতপাড়া এলাকার বাসায় পৌঁছে দেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিদায়ের মুহূর্তে আবেগাপ্লুত মো. ছায়ফুল্লাহ বলেন, ‘জানি আমার ছাত্ররা আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু আজকের এই আয়োজন প্রমাণ করেছে, তারা আমাকে কতটা ভালোবাসে। আজ আমার শিক্ষকতা জীবনকে সার্থক মনে হচ্ছে।’
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ছায়ফুল্লাহ স্যার ছিলেন ছাত্র ও সহকর্মীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। তাঁর ন্যায়নীতি ও আদর্শ আমাদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, নদীর পানিও বাড়ছে
সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত আছে। জেলা শহরের কাছে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে অবস্থান করলেও গত ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে ৯০ সেন্টিমিটার। এ সময় সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ৭১ মিলিমিটার।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, দুদিন ভারী বৃষ্টি হওয়াতে জেলার নদী ও হাওরে পানি বাড়ছে। তবে হাওরে এখনো পানি কম আছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা সুনামগঞ্জে একইভাবে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এই পানি ভাটিতে নামলে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে স্বল্প মেয়াদে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর এলাকায় (যেখানে পানি পরিমাপ করা হয়) আজ শনিবার দুপুর ১২টায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ৭৮ মিটার, যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ২ মিটার নিচে। গতকাল একই সময়ে এখানে সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৫ দশমিক ৮৮ মিটার। এখানে ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৯০ সেন্টিমিটার। বর্ষা মৌসুমে এখানে সুরমা নদীর পানির বিপৎসীমা ৮ দশমিক ৮০ মিটার।
শুধু সুরমা নয়, ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে জেলার তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত নদ যাদুকাটাতে উজানের ঢলের পানি নামছে। এখানেও পানি বেড়েছে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জের পাটনাই, কুশিয়ারা, নলজুর, চেলা, চলতি, রক্তি, বৌলাই, খাসিয়ামারাসহ সব নদীর পানি বাড়ছে। মূলত ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বেশি বৃষ্টি হলে ভাটিতে থাকা সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢল নামে। এতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
তাহিরপুর উপজেলার লাউরেড়গড় এলাকার বাসিন্দা সাইদুর রহমান বলেন, শনিবার সকাল থেকে বেশি পরিমাণে পাহাড়ি ঢল নামছে। এতে উপজেলার হাওরগুলো ঢলের পানিতে ভরে গেছে। এভাবে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার শনিবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘একইভাবে বৃষ্টি আরও দুদিন হতে পারে। ঢলের পানি নেমে হাওরে যাচ্ছে। এই বৃষ্টি সুনামগঞ্জের জন্য অনেকটা স্বাভাবিক। আমরা মনে করছি না সুনামগঞ্জে এতে বন্যা হবে।’