২ জুন প্রধান উপদেষ্টা আবার ডেকেছেন, এভাবে সংস্কারের কলা দেখানো হচ্ছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
Published: 31st, May 2025 GMT
আগামী ২ জুন প্রধান উপদেষ্টা আবার তাঁদের ডেকেছেন উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘ভাবটা আমরা বুঝছি এ রকম, আনুষ্ঠানিকতা আর আলোচনার কোনো কমতি নেই। কিন্তু কাজের কাজের কোনো খবর নেই। ২ তারিখে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার আবার শুভ উদ্বোধন হবে। প্রথম পর্যায়ে আলোচনার একবার উদ্বোধন করেছেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে আবার উদ্বোধন করবেন, তৃতীয় পর্যায়ে গিয়ে আপনারা এবার আবার এটা একত্র করবেন। এভাবে আপনারা আমাদের সংস্কারের কলা দেখাচ্ছেন!’
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশের কৃষি বিপ্লবে জিয়াউর রহমানের অবদান’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল।
সভায় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আগামী ২ তারিখে আমাদের আবার ডেকেছেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা। ভাবটা আমরা বুঝছি এ রকম, আনুষ্ঠানিকতা আর আলোচনার কোনো কমতি নেই। কিন্তু কাজের কাজের কোনো খবর নেই। আবার ডেকেছেন ২ তারিখে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার আবার শুভ উদ্বোধন হবে। কেন? উদ্বোধন কয়বার করতে হয়? সংস্কার নিয়ে আবার কতবার উদ্বোধন করবেন? প্রথম পর্যায়ে আলোচনার একবার উদ্বোধন করেছেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে আবার উদ্বোধন করবেন, তৃতীয় পর্যায়ে গিয়ে আপনারা এবার আবার এটা একত্র করবেন। এভাবে আপনারা আমাদের সংস্কারের কলা দেখাচ্ছেন!’
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন যমুনায় তাঁর সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুনের প্রথম সপ্তাহে সংস্কার কাজ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় আলোচনা শুরু করবে ঐকমত্য কমিশন। এই আলোচনার উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা। অবশ্য সেই আলোচনার সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ এখনো জানানো হয়নি। আজ বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ এই আলোচনার কথাই উল্লেখ করলেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ইগো কেন?কৃষক দলের আলোচনা সভায় সালাহউদ্দিন আহমদ প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, সংস্কার কমিশনে আপনারা নিজেদের মতো করে যেসব সংস্কার সংবিধানে চান, সেই সংস্কারগুলো জাতিকে মেনে নিতে হবে, এই ইগো কেন আপনারা লালন করেন? আপনারা কেন মনে করেন যে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলকে (এনসিসি) সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে রাষ্ট্রের সব অঙ্গকে বেকার করে দেবেন? সেটা আমাদের কেন মানতে বলেন?’
সংস্কার কমিশন আরও কিছু অভিনব সংস্কার প্রস্তাব নিজেরা দিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘মনে হয় যেন আমাদের বাধ্য হয়ে সেসব সংস্কার প্রস্তাবে একমত হতেই হবে। তাহলে তো এটা বাকশাল তৈরি হলো!’ তিনি বলেন, ‘আমরা লিখিতভাবে বলেছি, আলোচনা করেছি কী কী বিষয়ে আমরা কাছাকাছি এসেছি, আর কী কী বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত; সেগুলো কম্পাইল করে আপনারা জাতির কাছে প্রকাশ করুন। সংস্কার হবে, সংস্কার আমাদের প্রধানতম এজেন্ডা। তার চেয়েও বেশি জরুরি মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচার। সবাইকে কাঠগড়ায় নিয়ে আসতে হবে।’
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, যারাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে, তারা সংস্কার ও বিচার চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্বাধীন বিচার বিভাগ তাদের মতো বিচারকার্য চালিয়ে যাবে। সংস্কার তো কখনো শেষ হয় না। দেশের চাহিদা অনুযায়ী সংস্কার হতেই থাকবে। এটা চলমান প্রক্রিয়া।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কেন আপনি ডিসেম্বরের বাইরে গিয়ে নির্বাচন দেবেন? এর পক্ষে একটিও যুক্তি নেই। শুধু বলেন ডিসেম্বর থেকে জুনের কথা। ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন দিতে হবে, এটা বাংলাদেশের মানুষের দাবি, আমাদের দাবি।’ ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে একটি যুক্তিও যদি অন্তর্বর্তী সরকারের থাকে, সেটি সরকারকে প্রকাশের অনুরোধ জানান তিনি।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম। সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক ইউসুফ আলী মোল্লা ও প্রচার সম্পাদক শামসুর রহমানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়াল, কৃষক দলের সহসভাপতি কর্নেল (অব.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহমদ ত য় পর য য় দ ব ত য় পর ড স ম বর র রহম ন আম দ র ব এনপ আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যক্তিগত কর্মকর্তার স্ত্রীকে নগদে চাকরি দেওয়া নিয়ে যা বললেন ফয়েজ আহমদ
মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদে নিজের ব্যক্তিগত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করেছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। আজ শনিবার বিকেলের দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি অভিযোগ স্বীকারে করে পোস্ট দেন। এ ঘটনার সঙ্গে তাকে এবং তার মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামকে অন্যায়ভাবে জড়ানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন প্রধান উপদেষ্টার এ বিশেষ সহকারী।
পোস্টে ফয়েজ আহমদ লেখেন, ‘আমি বাংলাদেশ রাষ্ট্র এবং এ দেশের মানুষের একটি পয়সাও চুরি করব না—এই আস্থাটা আমার ওপর রাখবেন আশা করি। আমি প্রচণ্ডরকম আর্থিক সততা নিয়ে বড় হয়েছি। আমার ব্যক্তিগত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট (স্বার্থের সংঘাত) এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এসেছে। কাজটা ঠিক হয়নি—এটা আমি বিনা বাক্যে স্বীকার করছি। তাঁকে প্রচণ্ডরকম বকাবকিও করেছি। উনার বউকে চাকরি দেওয়ার বিষয়টি আমি তদন্তের ব্যবস্থা করেছি, নির্দেশনা দিয়েছি। নগদের অ্যাক্টিং সিইও এই বিষয়ে প্রেস রিলিজে বলবেন।’
মানবজমিনের প্রতিবেদনে ফয়েজ আহমদ এবং একই মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের প্রসঙ্গ আসা নিয়ে ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘তাঁদের অন্যায়ভাবে টেনে আনা হয়েছে। নগদের আগের সরকারের লোকজন অর্থ হাতিয়েছেন; কিন্তু দায় তাঁদের ওপর চাপানো হয়েছে।’ মিথ্যা সাংবাদিকতা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী আরও লেখেন, ‘আমরা সংবাদকর্মীদের কাছে জেনেছি যে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পক্ষ এজেন্সিকে দিয়ে ১৫০ কোটি টাকা দুর্নীতির রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এর আগে তারা কিছু টিভি স্টেশনকেও অ্যাপ্রোচ করেছিল। দেশের শীর্ষ ফ্যাক্টচেকার এবং ডিজিটাল ভেরিফিকেশন এক্সপার্ট সেটা এক্সপোজও করেছেন। নগদে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশাসক বসানোর পরে বাংলাদেশ ব্যাংক কেপিএমজি-কে দিয়ে ফরেনসিক রিপোর্ট করাচ্ছে (অভিযোগ আছে কেপিএমজি প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট্যান্ট)।’
নগদকে বাঁচাতে কাজ করছেন উল্লেখ করে ফয়েজ আহমদ লেখেন, ‘শাফায়াত গং এখানে হেভিওয়েট ব্যারিস্টার নিয়ে এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে। এই দায়ও আমাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা হয়েছে। একটা অস্থিতিশীল সময়ে ডাকের লাইসেন্সে, রেগুলেটরের গাইডলাইনে, টপ এক্সপার্টদের ম্যানেজ সার্ভিসে আনা গেলে নগদ ভালো চলবে—এটাই ডিও লেটারে লিখেছি।’
গতকাল শুক্রবার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় নগদের ‘অনিয়ম’ নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, ফয়েজ আহমদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আতিক মোর্শেদ নগদের কোনো কর্মকর্তা না হয়েও সেখানে অফিস করেন। পাশাপাশি নিজের স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা জুঁইকে একটি পদে চাকরিও দিয়েছেন। এ সংবাদের পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।