ঢেউয়ে বিলীন মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার ১ হাজার ৬০০ মিটার বেড়িবাঁধ
Published: 31st, May 2025 GMT
বঙ্গোপসাগরে গত বৃহস্পতিবার সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে কক্সবাজারের মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় নতুন করে অন্তত ১ হাজার ৬০০ মিটার বেড়িবাঁধ সাগরে বিলীন হয়েছে। এর মধ্যে মহেশখালীতে ৯০৫ মিটার ও কুতুবদিোয় ৬৯৬ মিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। গত কয়েক দিনে ৩ দফা ভারী বৃষ্টি ও জোয়ারের কবলে পড়ে এসব বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক হাজার পরিবার। জোয়ারের তীব্রতা না কমায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন দুই দ্বীপের বেড়িবাঁধের পাশে বসবাসকারী বাসিন্দারা।
আজ শনিবার দুপুরে মহেশখালীর মাতারবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিমে ষাইটপাড়া গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা বেড়িবাঁধের ওপর বসানো অধিকাংশ জিও টিউব সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। সে স্থান দিয়ে ঢুকছে জোয়ারের পানি। একই অবস্থা ধলঘাট ইউনিয়নের সরইতলা বেড়িবাঁধের। সেখানে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে জোয়ার-ভাটা চলছে।
মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সরওয়ার কামাল প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর এলাকা ষাইটপাড়ার অন্তত এক কিলোমিটার অরক্ষিত বেড়িবাঁধের পাশে এক হাজার পরিবার বসবাস করে। গত বৃহস্পতি ও গতকাল শুক্রবার তিন দফা বৃষ্টিতে জোয়ারের পানি ঢুকে এসব পরিবারের বাড়িঘর, ফসলি জমি প্লাবিত করেছে। ১০টি কাঁচা ঘরবাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। দ্রুত সংস্কার না করলে সামনে পূর্ণিমার জোয়ারের সময় ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে আরও বিস্তীর্ণ এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়বে।
ইউপি সদস্য সরওয়ার কামাল আরও বলেন, অরক্ষিত বেড়িবাঁধের কারণে তাঁর এলাকার অন্তত এক হাজার পরিবার প্রকৃতি সঙ্গে লড়াই করে কোনোরকমে বেঁচে আছে। প্রতি বর্ষার মৌসুমে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য পাউবো কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণসহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান মহেশখালীর ইউএনও মো.
এদিকে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র ও তাবালরচর এলাকায় ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে আজ দুপুরেও জোয়ারের পানি লোকালয়ের ঢুকেছে। এর পাশাপাশি দ্বীপের বেশ কিছু এলাকায় বেড়িবাঁধ অরক্ষিত পড়ে আছে। সব মিলিয়ে ৬০০ মিটারের মতো বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জানতে চাইলে কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্যথোয়াইপ্রু মারমা প্রথম আলোকে বলেন, ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে আজ দুপুরেও বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র ও তাবালরচর এলাকায় জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। তবে আবহাওয়া পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পাশাপাশি জোয়ারের পানি কমে যাওয়ায় কারণে লোকালয়ে নতুন করে প্লাবিত হয়নি। কিন্তু ভাঙা বেড়িবাঁধের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা উৎকণ্ঠায় আছেন। বিকেলে জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত আরও ৫০০ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয় বলে তিনি জানিয়েছেন।
জানতে চাইলে পাউবোর কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় ১ হাজার ৬০০ মিটার বেড়িবাঁধের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে মহেশখালীতে ৯০৫ মিটার ও কুতুবদিয়ায় ৬৯৬ মিটার বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আপাতত বর্ষার মৌসুমে জোয়ারের পানি ঠেকাতে কুতুবদিয়ার ভাঙা বেড়িবাঁধে জিও টিউব বসানোর জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অন্তত দুই কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। একইভাবে মহেশখালীর মাতারবাড়ী ও ধলঘাট ইউনিয়নের বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে এক কোটি টাকা। কতৃপক্ষের অনুমতি পেলে দ্রুত বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক ৬০০ ম ট র ইউন য ন পর ব র র এল ক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
শেরপুরে বেশি দামে সার বিক্রি: ২ ব্যবসায়ীকে সোয়া লাখ টাকা জরিমানা
শেরপুরে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করায় দুই সার ব্যবসায়ীকে প্রায় সোয়া লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শেরপুর পৌর শহরের আখের মাহমুদ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় এক বিএডিসি সার ডিলারকে ১ লাখ টাকা ও লাইসেন্সবিহীন সার বিক্রি করায় আরেক ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আরো পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে মহাসড়কে ১০০০ স্থাপনা উচ্ছেদ
ঝিনাইদহে ২৫০টি অবৈধ জাল জব্দ, বাঁধ উচ্ছেদ
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুইয়া আদালত পরিচালনা করেন। তিনি জরিমানার তথ্য জানান।
ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুইয়া বলেন, ‘‘সার বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই অসাধু ব্যাবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। কৃষকের উপর জুলুম মেনে নেওয়া হবে না।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের বিভিন্ন সোর্স এ সব অসাধু ব্যবসায়ীদের খোঁজখবর রাখছেন। যার বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’’ জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।
অভিযানকালে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসলিমা খানম নীলু, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে কৃত্রিম সার সংকট দেখিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করছেন। বেশি দাম নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের আখের মাহমুদ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে বেশি দামে সার বিক্রির প্রমাণ পেয়ে বিএডিসি সার ডিলার মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন। একইসঙ্গে লাইসেন্সবিহীন সার বিক্রয় করায় একই বাজারের কীটনাশক বিক্রেতা শিশির এন্টারপ্রাইজকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
শেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসলিমা খানম নীলু বলেন, ‘‘আমন মৌসুসে সারের দাম ও চাহিদার ভারসাম্য রক্ষায় আমরা নিয়মিত অভিযান করছি। আমরা যেখানে অভিযোগ পাচ্ছি, সেখানে অভিযান পরিচালনা করছি। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রির সুযোগ নেই।’’
ঢাকা/তারিকুল/বকুল