অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বের শুরুর দিকে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ ছিল খুব সামান্য। দিন যত যাচ্ছে, ঋণ বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের ২১ মে পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা। গত জানুয়ারি পর্যন্ত অর্থবছরের ৭ মাসে যেখানে ছিল মাত্র ১৩ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা। আশানুরূপ রাজস্ব আদায় না হওয়া, সঞ্চয়পত্রে ঋণ না বেড়ে উল্টো কমে যাওয়া এবং বিদেশি উৎস থেকে ঋণ ছাড় কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে শেষ সময়ে ব্যাংক ঋণ বাড়ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ঋণ লক্ষ্যমাত্রা ২৫ শতাংশের মতো কমিয়ে এক লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা করতে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৯৯ হাজার কোটি টাকা করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড.

আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি জানিয়েছেন, ব্যাংক খাতের বর্তমান বাস্তবতায় সরকারের ঋণ চলতি অর্থবছরে ৯০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সীমিত রাখা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে গত ২১ মে পর্যন্ত সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে এক লাখ ১৬ হাজার ২১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এ সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আগের দেনা শোধ করেছে ৫৬ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা। এতে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৫৯ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। গত জুন শেষে যা ছিল ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। জানা গেছে, বাজারে মুদ্রা সরবরাহ কমাতে ট্রেজারি বিল, বন্ডের বিপরীতে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আগের দায় শোধ করা হচ্ছে। এতে টানাটানিতে থাকা ব্যাংকের টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যাচ্ছে। অবশ্য এ সময় দুর্বল ব্যাংকগুলোকে টাকা ছাপিয়ে ২৯ হাজার ৪১০ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, অর্থবছরের শেষ সময়ে এমনিতেই সরকারের ঋণ বেড়ে থাকে। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের বিল পরিশোধের একটা তোড়জোড় থাকে। অবশ্য ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার এখন পর্যন্ত যে ঋণ নিয়েছে, সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় তা অনেক কম।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমান সরকার ব্যয় সংকোচন নীতিতে চলছে। তবে আগের বকেয়া ঋণ ও সুদ পরিশোধ অনেক বেড়েছে। আবার বেতন-ভাতাসহ সরকারের চলতি ব্যয় প্রতিবছর বেড়ে থাকে। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আয় মাত্র ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেড়ে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় যা অনেক কম। আবার সঞ্চয়পত্র থেকে  ঋণ  পাচ্ছে না। উল্টো গত জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ হাজার ১৩ কোটি টাকা কমে তিন লাখ ৩৯ হাজার ২৫৬ কোটি টাকায় নেমেছে। বিদেশি উৎস থেকে ঋণছাড়  কমেছে। সব মিলিয়ে সরকারের ব্যাংক ঋণ বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, মূল্যস্ফীতি কমাতে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ কমানোসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চলতি অর্থবছরের জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নামানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আর আগামী অর্থবছরে ৬ শতাংশের নিচে নামানো হবে। গত এপ্রিল শেষে গড় মূল্যস্ফীতি নেমেছে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে। মূল্যস্ফীতি বেশি হলে সাধারণভাবে মানুষের সঞ্চয় ক্ষমতা কমে। সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমার পাশাপাশি গত বছর ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঋণ ক ব যবস থ সরক র র ঋণ ব ড়

এছাড়াও পড়ুন:

টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না

ইউক্রেনকে দূরপাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহে হোয়াইট হাউসকে সবুজ সংকেত দিয়েছে পেন্টাগন।

টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দীর্ঘ পাল্লার ক্রুজ মিসাইল, যা যুদ্ধজাহাজ বা সাবমেরিন থেকে ছোড়া হয়।

নৌবাহিনীর ব্যবহৃত এ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপৃষ্ঠে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে পারে। নিচু উচ্চতায় ওড়ে বলে এটি রাডারে ধরা পড়ে না। এতে আছে উন্নত জিপিএস ও নেভিগেশন ব্যবস্থা, ফলে ত্রুটির সীমা মাত্র ১০ মিটার।

টমাহক প্রথম ব্যবহার করা হয় ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধে। এরপর সিরিয়াসহ একাধিক অভিযানে এটি ব্যবহৃত হয়েছে।

এ ক্ষেপণাস্ত্র দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বে আঘাত হানতে পারে। সম্প্রতি ইরানে হামলায় এ টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র।

প্রতিটি টমাহকের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮ ফুট, ওজন তিন হাজার পাউন্ডের বেশি এবং দাম প্রায় ২০ লাখ ডলার। এতে এক হাজার পাউন্ড ওজনের বিস্ফোরক বসানো থাকে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ক্ষেপণাস্ত্রের প্রশংসা করে একে ‘চমৎকার অস্ত্র’ বলে মন্তব্য করেছেন।

আরও পড়ুনইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন ট্রাম্প০১ নভেম্বর ২০২৫

ইউক্রেন ও রাশিয়া সাধারণত আগেভাগে তাদের কৌশলগত পরিকল্পনা প্রকাশ্যে জানায় না। তবে ইউক্রেন টমাহক ব্যবহার করে রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামোকে সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু বানাতে পারে।

পেন্টাগন মনে করছে, ইউক্রেনকে সরবরাহ করা হলেও তা যুক্তরাষ্ট্রের টমাহক মজুতের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না।

তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে। বিষয়টি সম্পর্কে জানাশোনা আছে এমন তিন মার্কিন ও ইউরোপীয় কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

আরও পড়ুনপুতিন যুদ্ধ না থামালে ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেবেন ট্রাম্প১৩ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টানা দুই মাস আড়াই বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি
  • তিন মাসে গৃহকর আদায় কমেছে ৩০ কোটি টাকা
  • সঞ্চয়পত্র কেনার পর যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন
  • জুলাই–সেপ্টেম্বরে ঋণছাড়ে এগিয়ে বিশ্বব্যাংক ও রাশিয়া, কোনো অর্থ দেয়নি চীন
  • সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি 
  • ২৯ দিনে প্রবাসী আয় ২৪৩ কোটি ডলার
  • সঞ্চয়পত্র জালিয়াতির ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ১
  • শেষে এসে ‘বিপদে’ ওয়াসা