গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত
Published: 1st, June 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩০০ জন। এতে করে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৫৪ হাজার ৪০০ জনে পৌঁছেছে।
শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের টানা হামলায় অন্তত ৫৪ হাজার ৩৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
শনিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে আরও ৬০টি মরদেহ পৌঁছেছে। এই সময়ের মধ্যে আহত হয়েছেন আরও ২৮৪ জন, যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪ জন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকে আছেন, কিন্তু উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের চুক্তি হয়েছিল, তা ১৮ মার্চে বাতিল করে ইসরায়েল আবার হামলা শুরু করে। এরপর থেকে গাজায় বিমান ও স্থলপথে হামলা আরও তীব্র হয়।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের অধিকাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
শক্তিশালী আর্থিক ভিতের ওপর ভর করে ২০২৪ সাল ও ২০২৫-এর প্রথম প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের লক্ষণীয় সাফল্য
চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি সত্ত্বেও ২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংক সমন্বিতভাবে কর-পরবর্তী নিট মুনাফায় (এনপিএটি) আগের বছরের তুলনায় ৭৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২০২৪ সালে অঙ্গপ্রতিষ্ঠানসহ সমন্বিতভাবে ব্যাংকটি ১ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা অর্জন করেছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৮২৮ কোটি। ব্যাংকিং খাতে এটি একটি উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি।
একক (স্ট্যান্ডঅ্যালন) ভিত্তিতে ২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংকের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২১৪ কোটি টাকায়, যেখানে আগের বছরের ৭৩০ কোটি টাকার তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬৬ শতাংশ। ব্যাংকিং খাতে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি সত্ত্বেও ব্র্যাক ব্যাংক ব্যালান্স শিটে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাভারেজের চেয়েও অনেক বেশি। এ সময় ব্যাংকটি এককভাবে গ্রাহক আমানতে ৩৪ শতাংশ এবং ঋণে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকেও ব্র্যাক ব্যাংক সাফল্যের ধারা বজায় রেখেছে। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির সমন্বিত কর-পরবর্তী নিট মুনাফা (এনপিএটি) গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪৮৬ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।
বুধবার (২৮ মে) ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত এক ‘আর্নিংস ডিসক্লোজার সেশনে’ ব্যাংকটির ২০২৪ অর্থবছর ও ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক ও পরিচালনগত সাফল্য প্রকাশ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিনিয়োগ বিশ্লেষক, পোর্টফোলিও ম্যানেজার এবং ব্যাংকটির স্থানীয় ও বিদেশি পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ স্টেকহোল্ডাররা।
ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও (কারেন্ট চার্জ) তারেক রেফাত উল্লাহ খান এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ব্যাংকটির আর্থিক ও পরিচালনগত সাফল্য এবং সক্ষমতা উপস্থাপন করার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ কর্মকৌশলও তুলে ধরেন। সেশনটির শেষ অংশে একটি প্রশ্নোত্তর পর্বও অনুষ্ঠিত হয়।
২০২৪ অর্থবছরে ব্র্যাক ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্সসমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ২০২৩ সালের ৪ দশমিক ৩০ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৪ সালে ৬ দশমিক ৯৫ টাকায় উন্নীত হয়েছে।
শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট অ্যাসেট ভ্যালু (এনএভি) আগের বছরের তুলনায় ৩৭ দশমিক ৬০ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪৪ দশমিক ১১ টাকায় উন্নীত হয়েছে।
শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) ২০২৩ সালের ৩৭ দশমিক শূন্য ৫ টাকার তুলনায় ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ দশমিক ৯১ টাকায়।
ইয়ার-অন-ইয়ার ভিত্তিতে ব্র্যাক ব্যাংকের লোন পোর্টফোলিও বেড়েছে ২০ শতাংশ, যেখানে ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাভারেজ ছিল ৭ শতাংশ।
এ সময় ব্যাংকটির গ্রাহক আমানত (একক) ৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাভারেজ ছিল ৭ শতাংশ।
সমন্বিত রিটার্ন অন ইকুইটি (আরওই) এবং রিটার্ন অন অ্যাসেট (আরওএ) দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৯ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং ১ দশমিক ৫১ শতাংশে।
ঋণ প্রবৃদ্ধি, দক্ষ তহবিল ব্যবস্থাপনা এবং বেশি নন-ফান্ডেড আয়ের ফলে ইন্টারেস্ট আয়ও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়েছে। এর ফলে ২০২৪ সালে মোট সমন্বিত আয় ৩৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ব্যাংকের কৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মানবসম্পদ, প্রযুক্তি ও অবকাঠামোয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগের ফলে ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে মোট সমন্বিত পরিচালন ব্যয় ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশেষ করে আন্ডাররাইটিং, মনিটরিং এবং রিকভারির ওপর জোর দেওয়ার ফলে নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) ২০২৩ সালের ৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ থেকে কমে ২০২৪ সালে ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ হয়েছে।
২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বৃদ্ধি পেয়ে ২ দশমিক ২৭ টাকা হয়েছে, যা ২০২৪ সালের একই সময়ে ছিল ১ দশমিক ৫৪ টাকা।
চলতি বছরের ৩১ মার্চ ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি নিট অ্যাসেট ভ্যালু (এনএভি) বেড়ে ৪৭ দশমিক শূন্য ৫ টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ছিল ৪৪ দশমিক ১১ টাকা।
ব্র্যাক ব্যাংকের মোট আমানত (একক) ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ব্যাংকটির দীর্ঘমেয়াদি কৌশল এবং গ্রাহক আস্থার প্রতিফলন।
সমন্বিত রিটার্ন অন ইকুইটি (আরওই) ও রিটার্ন অন অ্যাসেট (আরওএ) দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৯ দশমিক ৯৩ ও ১ দশমিক ৪৪ শতাংশে।
২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে সমন্বিত মোট রেভিনিউ ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মূলে রয়েছে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং সুদ আয়ের সঙ্গে নন-ফান্ডেড আয় বৃদ্ধি।
২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের (এনপিএল) হার সামান্য বেড়ে ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ হয়েছে, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ছিল ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
ব্র্যাক ব্যাংকের আর্থিক ফলাফল ও উল্লেখযোগ্য সাফল্য সম্পর্কে ব্যাংকটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও (কারেন্ট চার্জ) তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, ‘এই লক্ষণীয় সাফল্য গ্রাহক, সমাজ ও দেশের প্রতি আমাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। গ্রাহক ও স্টেকহোল্ডারদের অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে আমরা উদ্ভাবন, ক্ষমতায়ন এবং বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তারেক রেফাত উল্লাহ খান আরও বলেন, ‘বছরের পর বছর ধারাবাহিক সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ সব স্টেকহোল্ডারের কাছে ব্র্যাক ব্যাংক এখন এক আস্থার নাম। করপোরেট সুশাসন, কমপ্লায়েন্স ও মূল্যবোধনির্ভর ব্যাংকিংয়ে ব্র্যাক ব্যাংক রোলমডেল হিসেবে স্বীকৃত। এমন অর্জনের জন্য ধারাবাহিক দিকনির্দেশনার জন্য ব্র্যাক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের প্রতি, রেগুলেটরি দিকনির্দেশনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ওপর অবিচল আস্থার জন্য আমাদের গ্রাহকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
ব্র্যাক ব্যাংকের আর্থিক ফলাফল সম্পর্কে বিস্তারিত পাওয়া যাবে ব্যাংকটির ওয়েবসাইটে: https://www.bracbank.com/en/investor-relations#financialStatements