পপতারকা রিয়ান্নার বাবা মারা গেছেন। শনিবার (৩১ মে) সকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রিয়ান্নার বাবা রোনাল্ড ফেন্টি। তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম পেজ সিক্স এ খবর প্রকাশ করেছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে রিয়ান্নার মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেজ সিক্স। কিন্তু এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ফলে রিয়ান্নার বাবার মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।
রিয়ান্নার বাবা লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডার্স-সিনাই মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি ছিলেন। গত বুধবার সেখানে দেখা যায় রিয়ান্নার ভাই রজদ ফেন্টিকে। তারই একটি ছবি পেয়েছে পেজ সিক্স। ধারণা করা হচ্ছে, একই গাড়িতে রিয়ান্নাও ছিলেন। যদিও ছবিতে তাকে দেখা যাচ্ছে না।
আরো পড়ুন:
মঞ্চে পড়ে গিয়েও প্রশংসা কুড়াচ্ছেন শাকিরা
কান চলচ্চিত্র উৎসবের বিজয়ীরা
রিয়ান্নার বাবা রোনাল্ড ফেন্টি ব্যক্তিগত জীবনে মনিকা ব্রেথওয়েটের সঙ্গে ঘর বাঁধেন। ১৯৮৮ সালে এ দম্পতির ঘর আলো করে জন্ম নেন রিয়ান্না। এ গায়িকার আরো দুটো ভাই রয়েছে। ‘আমব্রেলা’ গায়িকা রিয়ান্নার বয়স যখন ১৪, তখন বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে তার বাবা-মায়ের। জানা যায়, মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিলেন রিয়ান্নার বাবা।
প্রায় এক দশক ধরে রিয়ান্না ও এসাপ রকির বন্ধুত্ব। ২০২০ সালে তাদের একসঙ্গে ডিনার ডেটে যেতে দেখা যায়। এরপর রিয়ান্নার দেশ বারবাডোসে ছুটি কাটাতে দেখা যায় এই জুটিকে। ২০২১ সালে তাদের সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করেন রিয়ান্না।
২০২২ সালে একটি পুত্রসন্তান জন্ম দেন রিয়ান্না। এ জুটির এটি প্রথম সন্তান। এ গায়িকা এখন অন্তঃসত্ত্বা। যখন তৃতীয় সন্তানের মা হতে যাচ্ছেন, তখন বাবাকে হারালেন এই শিল্পী।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য
দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।
আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।
আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।
কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।