তুমুল ঝগড়া দিয়ে দুই অভিনেতার বন্ধুত্বের শুরু, ৩৭ বছর আগে শুটিংয়ে কী হয়েছিল
Published: 1st, June 2025 GMT
‘তোমার কত বড় সাহস, আমার চরিত্রে অভিনয় করো। তুমি জানো না আমি কে? তোমার বাড়ি কোথায়, বরিশাল না? তোমাকে বরিশাল পাঠিয়ে দেব। তোমাকে আমি দেখে নেব। আমাকে তুমি চেনো না।’ তিন যুগের বেশি সময় আগে একটি শুটিং ইউনিটে এভাবে সহ-অভিনেতা জ্যাকি আলমগীরকে উচ্চ স্বরে কথাগুলো বলেছিলেন আরেক অভিনেতা ফাইয়াজ আহমেদ ববি। সেদিন দুই অভিনেতার মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়েছিল। সেই ঝগড়া থেকেই পরবর্তী সময় তাদের মধ্যে জমে ওঠে গভীর বন্ধুত্ব।
সিনেমার নাম ‘লড়াকু’। সেই সিনেমায় শুটিংয়ের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিলেও শুটিং স্পটে আসতে কিছুটা দেরি করেন অভিনেতা ববি। শুটিংয়ের জন্য প্রস্তুত ছিলেন পরিচালক শহীদুল ইসলাম খোকন। কিছু সময় তাঁরা অপেক্ষাও করেন। পরে বাধ্য হয়েই ববিকে বাদ দিতে হয় পরিচালককে। তিনি অপেক্ষা না করে সিনেমার সহকারী পরিচালক জ্যাকি আলমগীরকে দাঁড় করিয়ে দেন ক্যামেরার সামনে। শুটিংয়ের পরেই হাজির হন অভিনেতা ববি। তিনি সব শুনে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। রেগে যান সহকারী পরিচালক জ্যাকি আলমগীরের ওপর।
অভিনয় ক্যারিয়ার শুরুর আগে জ্যাকি সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, ‘সেদিন সবার সামনে কি রাগারাগি। আমাকে ববি ভাই যা-তা বলতে থাকেন। ভয়ভীতি পর্যন্ত দেখান। আমাকে আর কাজ করতে দেবেন না। পাঠিয়ে দেবেন বরিশালের গ্রামের বাড়ি। ববি ভাই তখন খুবই রাগান্বিত থাকতেন। তিনি অল্পতেই রেগে যেতেন। এটা আমরা সবাই জানতাম। আমিও কোনো কথার উত্তর দিলে আরও রেগে যেতেন। আমাদের মধ্যে রাগারাগি হলেও একসময় আমি নিজেই কোনো কথা বলতাম না। চুপচাপ হাসতাম।’
অভিনেতা ফাইয়াজ আহমেদ ও জ্যাকি আলমগীর। ছবি: প্রথম আলো.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আলমগ র
এছাড়াও পড়ুন:
রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের রাউজানে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার যুবক আলমগীর আলমের সহযোগী ছিলেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম মুহাম্মদ রাজু (২৮)। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার মৃত নুর নবীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, আলমগীর আলমকে গুলি করার সময় তাঁর পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন মুহাম্মদ রাজু।
গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আলমকে। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তান পেছনে একটি অটোরিকশায় ছিলেন। পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। আলমের বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঢালারমুখ এলাকায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অস্ত্রধারীরা তাঁকে হত্যার পর রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে গেছেন। নিহত আলমের শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।
রাউজান থানা-পুলিশ জানায়, আলম নিহত হওয়ার দুই দিন পর তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে ২১ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে রাজুর নাম নেই। তবে ঘটনার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে এ মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রাসেল খান (৩২) ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী মুহাম্মদ হৃদয় (৩০)।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যখন অস্ত্রধারীরা আলমগীর আলমকে গুলি করার জন্য কবরস্থানে লুকিয়ে ছিলেন, তখন আলমগীর আলমের পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন রাজু। তিনি আলমগীরের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তবে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্ত্র-মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ১২ বছর কারাগারে ছিলেন আলম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।