সুনামগঞ্জে ২ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ
Published: 1st, June 2025 GMT
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা নদীতে অভিযান চালিয়ে দুই কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
রবিবার (১ জুন ) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল একেএম জাকারিয়া কাদির।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, রবিবার ভোর রাতে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হালুয়াঘাট এলাকায় সুরমা নদীতে সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (২৮ বিজিবি) একটি বিশেষ আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে টাস্কফোর্স অভিযান চালায়। এ সময় মালিকবিহীন একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকাসহ ১ হাজার ৭০০ পিস ভারতীয় বিভিন্ন ধরনের উন্নতমানের শাড়ি, ৭ হাজার ২০০টি ক্রিম এবং ১৮০ কেজি জিরা জব্দ করা হয়। যার মোট মূল্য আনুমানিক ২ কোটি ৩ লাখ ৬ হাজার টাকা।
আরো পড়ুন:
ভারতে ১ সপ্তাহে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে ১২০০ শতাংশ
মিস ওয়ার্ল্ড বিজয়ী ওপল সুচাতা
এ অভিযানে জেলা প্রশাসকের কার্যালায়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান হৃদয়, সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (২৮ বিজিবি) ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার মো.
সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল একেএম জাকারিয়া কাদির বলেন, “ঈদকে সামনে রেখে চোরাচালানী তৎপরতা রুখতে বিজিবির আভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রয়েছে। আটক ভারতীয় শাড়ি, ক্রিম ও জিরা সুনামগঞ্জের শুল্ক কার্যালয়ে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
ঢাকা/মনোয়ার/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পণ য স ন মগঞ জ ২৮ ব জ ব
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য
দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।
আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।
আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।
কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।