জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও জি এম কাদেরের গ্রেপ্তার চায় গণ অধিকার পরিষদ
Published: 1st, June 2025 GMT
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় পাটির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে গ্রেপ্তার না করলে সারা দেশে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ।
আজ রোববার ঢাকায় এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ হুঁশিয়ারি দেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন স্থগিত করার দাবি করেন।
রাজধানীর বিজয় নগর আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ, জি এম কাদেরসহ ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার দাবি এবং বরিশালে গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর জাতীয় পার্টির হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে গণ অধিকার পরিষদ।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, শেখ হাসিনার বিচার হলে জি এম কাদেরের কেন বিচার হবে না? আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন স্থগিত করতে হবে।
জি এম কাদেরের নামে মামলা হলেও তাঁকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না—এ প্রশ্ন তুলে রাশেদ খান বলেন, এই দেশের গণতন্ত্র হত্যার জন্য হাসিনা যেভাবে দায়ী, ঠিক একইভাবে জি এম কাদেরও দায়ী। তিনি বলেন, ‘হাসিনা দিল্লি পালিয়েছে, জি এম কাদের কীভাবে এখনো জেলের বাইরে?’
রাশেদ খান বলেন, বরিশালে গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা মধ্যে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করার দাবি জানান। একই সঙ্গে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জি এম কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বলেন, গ্রেপ্তার করুন, অন্যথায় সারা দেশে আন্দোলন শুরু হবে।
২ জুন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা থেকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানান গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, চা-নাশতা খাওয়ানোর সংলাপ করবেন না। সংলাপ ফলপ্রসূ করতে সিদ্ধান্ত জানান। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করুন।
রাশেদ খান বলেন, ‘আমাদের দাবি, আগামী সেপ্টেম্বরে তফসিল ও ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করুন। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন একে-অপরের পরিপূরক। কোনোটাকে কোনোটার মুখোমুখি করে ধোঁয়াশা করবেন না। আগামীকাল সংলাপ থেকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। নির্বাচনের আগে অবশ্যই ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার ও গণহত্যার পথনকশা প্রকাশ করুন।’
গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, পরিষদ সদস্য হাসান আল মামুন, উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, আবদুজ জাহের, মাহফুজুর রহমান খান, রবিউল হাসান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নেওয়াজ খান প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র শ দ খ ন বল ন এম ক দ র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’
আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।
জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।
জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।
এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।
জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।
জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।