৭ দফা দাবিতে বিদ্যুৎকর্মীদের আজ মহাসমাবেশ
Published: 2nd, June 2025 GMT
সাত দফা দাবিতে আজ সোমবার মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল রোববার এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, দাবি আদায়ে ১২ দিন ধরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
গ্রামাঞ্চলসহ দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ করছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। দেশে ৪ কোটি ৮২ লাখ বিদ্যুৎ গ্রাহক। এর মধ্যে আরইবির গ্রাহক ৩ কোটি ৬৮ লাখ। সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার।
দাবি
সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে– আরইবি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ, এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি ও পবিস একীভূত করে অন্য বিতরণ সংস্থার মতো পুনর্গঠন; মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক এবং পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিত করা ইত্যাদি।
আন্দোলন
দাবি আদায়ে গত বছরের জানুয়ারি থেকে আন্দোলন করছেন সমিতির কর্মীরা। এর ধারাবাহিকতায় গত ২১ মে থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। ২২ মে থেকে বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখে সমিতিগুলোতে আংশিক কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার সমিতির অফিসে গ্রাহকসেবায় ব্যবহৃত অভিযোগ কেন্দ্রের মোবাইল ফোন জমা দেওয়া হয়। এতে অনেক এলাকার গ্রাহকসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে আন্দোলনকারীরা বলেন, গ্রাহকসেবা চালু রেখে এবং জনদুর্ভোগ তৈরি না করে কর্মসূচি চালিয়ে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। তাই আন্দোলন এগিয়ে নেওয়া ছাড়া তাদের গতি নেই।
সংহতি
পল্লী বিদ্যুতের আন্দোলনে গত কয়েক দিনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন সংহতি জানিয়েছে। গতকাল সংহতি জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।
নাসীরুদ্দীন বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা অশান্ত হলে দেশে অন্ধকার নেমে আসবে।
সামান্তা শারমিন বলেন, পতিত স্বৈরাচারের ফ্যাসিবাদী কাঠামো রয়ে গেছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে। এ কাঠামো ভাঙতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এদিকে গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে আলোচনায় বসে পল্লী বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে জুলাই ঐক্য নামের একটি সংগঠন।
সরকারের উদ্যোগ
বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সমকালকে বলেন, তাদের অনেক দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। একটি কাঠামোগত সংস্কার এক দিনেই করা যায় না।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় বিএনপি কার্যালয়ে গুলি ও বোমা হামলা, নিহত ১
খুলনা নগরের আড়ংঘাটায় কুয়েট আইটি গেট–সংলগ্ন বিএনপির কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে ইমদাদুল হক (৫৫) নামের এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সোয়া নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য মামুন শেখসহ আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, রাতে মামুন শেখ স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে ওই কার্যালয়ে বসে ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা অফিস লক্ষ্য করে পরপর দুটি বোমা ও চারটি গুলি ছোড়ে। এরপর তারা পালিয়ে যায়। প্রথম গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাশে থাকা শিক্ষক ইমদাদুল হকের শরীরে লাগে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে আবার গুলি চালালে মামুন শেখসহ অন্য দুজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা তাঁদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
নিহত ইমদাদুল বছিতলা নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। এলাকাবাসীর ভাষ্য, তিনি একটি মাহফিলের অনুদান সংগ্রহের জন্য ওই কার্যালয়ে গিয়েছিলেন।
আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাসার বলেন, মামুন শেখ প্রায়ই স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কার্যালয়ে বসে আড্ডা দেন। গতকাল রাতেও তিনি আড্ডা দিচ্ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছিল। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলছে।