রিনার সঙ্গে খুব ভালো একটি জীবন কাটিয়েছি, প্রাক্তন স্ত্রীকে নিয়ে আমির
Published: 2nd, June 2025 GMT
বলিউডের ‘মি. পারফেক্টশনিস্ট’খ্যাত নায়ক আমির খান। সিনেমার পর্দায় সবকিছু নিখুঁতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনটা তার মোটেও নিখুঁত নয়। প্রেম, বিয়ে নিয়ে অনেকবারই আলোচনায় এসেছেন এই অভিনেতা।
আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে অভিনেত্রী রিনা দত্তকে বিয়ে করেন আমির খান। ভালোবেসে বিয়ে করলেও এ সংসার ভেঙে গেছে। কিন্তু তাকে বিয়ে করা কী আমিরের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল? এসব বিষয়ে কথা বলেছেন আমির খান।
রাজ শামানির পডকাস্টে অতিথি হিসেবে হাজির হয়েছিলেন আমির খান। আলাপচারিতায় সঞ্চালক জানতে চান, জীবনের কোন কাজ নিয়ে আপনি অনুতপ্ত? এমন প্রশ্নের জবাবে আমির খান বলেন, “একটি নয়, জীবনে অনেক ভুল করেছি। এর আগে আমি রিনাকে বিয়ে করেছিলাম। তখন আমার বয়স ২১, আর রিনার ১৯ বছর। ১৮ এপ্রিল অর্থাৎ প্রথম দিনেই তাকে আইনিভাবে বিয়ে করেছিলাম।”
আরো পড়ুন:
‘স্যার আপনার সঙ্গে সময় কাটাতে চান’
আমাদের ‘বিড়াল’ বলেন, পুরুষদের কি ‘কুকুর’ বলবেন, প্রশ্ন রাভিনার
খানিকটা ব্যাখ্যা করে আমির খান বলেন, “আমরা পরস্পরের চার মাসের পরিচিত ছিলাম। আমরা একসঙ্গে অনেক সময় কাটাইনি; পরস্পরকে খুব ভালোবাসতাম। এখন যখন পেছনে ফিরে তাকাই, তখন মনে হয়, এ বিষয়ে আমাদের ভাবা উচিত ছিল। আমরা অনেক বিষয় উপলদ্ধি করতে পারিনি। কারণ আমাদের বয়স তখন কম ছিল এবং আমরা কোনো কিছুরই পরোয়া করিনি।”
প্রাক্তন স্ত্রী রিনার প্রশংসা করে আমির খান বলেন, “রিনার সঙ্গে খুব ভালো একটি জীবন কাটিয়েছি। দয়া করে আপনারা আমার বক্তব্য ভুলভাবে গ্রহণ করবেন না। আমি বলছি না, রিনা ভুল ছিল, সময়টা ভুল ছিল। রিনা চমৎকার একজন মানুষ। আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি, পরস্পরকে সম্মান করি এবং পরস্পরের প্রতি অনেক ভালোবাসি রয়েছে। আমার মনে হয়, এত অল্প বয়সে জীবনের এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়।”
প্রথমবার প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হন আমির খান। দ্বিতীয় ও তৃতীয়বারের চেষ্টাতেও মেয়ের মন জয় করতে পারেননি। চতুর্থ বার প্রেম নিবেদন করেও ব্যর্থ হন আমির। এই মেয়ে আর কেউ নয়, আমিরের প্রথম স্ত্রী রিনা দত্ত। আমিরের পাশের বাড়িতেই থাকতেন রিনা। বাড়ির জানালাও ছিল পাশাপাশি। সেই জানালা দিয়ে প্রকৃতি দেখতে গিয়েই রিনার প্রেমে পড়েন এই অভিনেতা।
কিন্তু তাদের প্রেমের পথ মসৃণ ছিল না। রিনা দত্ত ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। অন্যদিকে আমির মুসলিম। পরিবার তাদের সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নেয়নি। পালিয়ে বিয়ে করাটাকেই একমাত্র পথ হিসেবে মনে করেন তারা। অপেক্ষা করলেন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য।
১৯৮৬ সাল। আমিরের বয়স ২১। অন্যদিকে রিনার ১৯। কয়েকজন বন্ধুর সহযোগিতায় ম্যারেজ রেজিস্টার অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন এই জুটি। এরপর নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যান। কারণ রিনার পড়াশোনা তখনো শেষ হয়নি। আর আমিরও তখন খুব বেশি আয় করতেন না।
‘কেয়ামত সে কেয়ামত তাক’ সিনেমার পর তাদের প্রেমের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে থাকে। রিনা ও আমিরের দাম্পত্য জীবনে দুই সন্তান— জুনাইদ ও ইরা। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সহ-অভিনেত্রীদের সঙ্গে আমিরের প্রেমের গুঞ্জন রিনার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। ২০০২ সালে এই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তবে বিচ্ছেদ নিয়ে তাদের কোনো তিক্ততা তৈরি হয়নি।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র আম র খ ন ন আম র খ ন আম র র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য
দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।
আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।
আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।
কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।