আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেন ক্লাসেন
Published: 2nd, June 2025 GMT
টেস্ট ক্রিকেটকে আগেই বিদায় বলেছেন হেনরিক ক্লাসেন। তিনি টেস্ট ঘরানার ক্রিকেটারও নন। সাত বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মাত্র ৪ টেস্ট খেলেছেন। তবে আধুনিক সময়ের অন্যতম সেরা ওয়ানডে ও টি-২০ ব্যাটার ক্লাসেন। অথচ মাত্র ৩৩ বছর বয়সে ফর্মের তুঙ্গে থেকে সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেন এই প্রোটিয়া ক্রিকেটার।
বিদায়ী বার্তায় ক্লাসেন বলেছেন, ‘এটা আমার জন্য দুঃখের দিন। কারণ আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নিজের ও পরিবারের জন্য সেরা সিদ্ধান্তে আসতে আমার দীর্ঘ সময় লেগেছে। এটা কঠিন সিদ্ধান্ত ঠিক। একই সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত নিতে পেরে শান্তি পেয়েছি।’
ক্লাসেনের জাতীয় দলে অভিষেক একটু দেরিতেই। ২০১৮ সালে ২৬ বছর বয়সে জাতীয় দলের জার্সি পরেন তিনি। যেটাকে স্বপ্ন পূরণ উল্লেখ করে ক্লাসেন বলেন, ‘দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। প্রোটিয়াদের হয়ে খেলার স্বপ্ন পূরণে সম্ভাব্য সব চেষ্টা আমি করেছি। দেশের হয়ে খেলার সুবাদে এমন অনেকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে যারা জীবন বদলে যাওয়া বার্তা দিয়েছেন।’
ক্লাসেন ২০২৫-২৬ মৌসুমে তাকে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় না রাখার অনুরোধ করেন। টি-২০ ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের হট কেক তিনি। লিগ ক্রিকেটে মনোযোগ দিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জাতীয় দলে বেতন-ভাতা নিয়ে অভিযোগও ছিল তার। সব মিলিয়ে ক্লাব ক্রিকেটে মনোযোগ বাড়াতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়েছেন তিনি।
ক্লাসেন দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৬০ ওয়ানডে খেলে ২ হাজার ১৪১ রান করেছেন। ৪ সেঞ্চুরি ও ১১ ফিফটিতে ৪৩.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ন কর ছ ন জ ত য় দল
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য
দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।
আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।
আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।
কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।