বরিশাল-ঢাকা নৌপথে ঈদের বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস শুরু, আছে বাড়তি ভাড়ার খড়্গ
Published: 3rd, June 2025 GMT
ঢাকা-বরিশাল নদীপথে এমনিতেই যাত্রী কমে গেছে। তবু ঈদকে সামনে রেখে প্রতিবারই জমে ওঠে এই নদীপথ। এ সময় অপেক্ষাকৃত কম ব্যস্ততার নদীবন্দর যেন চিরচেনা রূপ ফিরে পায়। এ সময় চালু করা হয় বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস। এবারও ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা-বরিশাল নৌপথে বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস চালু হয়েছে আজ মঙ্গলবার রাত থেকে। এদিকে ঈদযাত্রায় ভাড়া স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাড়িয়ে দিয়েছেন লঞ্চমালিকেরা।
লঞ্চমালিকদের সূত্র বলছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিশেষ সার্ভিসের জন্য তারা আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। এর অংশ হিসেবে আজ রাতে ঢাকার সদরঘাট থেকে শুরু হয়েছে ঈদযাত্রার এই বিশেষ সার্ভিস। চলবে ১৪ জুন পর্যন্ত। এই সার্ভিসে যুক্ত হবে অন্তত ১৬টি লঞ্চ। যাত্রীসংখ্যার ওপর নির্ভর করে প্রতিদিন এই রুটে সাত থেকে আটটি লঞ্চ চলাচল করতে পারে। তবে ঝড়ঝঞ্ঝার এই মৌসুমে নৌযাত্রা নিয়ে কিছুটা শঙ্কাও রয়েছে।
গত ঈদুল ফিতরের সময় এই রুটে বিশেষ সার্ভিস চালু হয়েছিল ২৫ মার্চ থেকে। ওই সময়ও নদীবন্দরে ব্যাপক যাত্রী সমাগম হয়েছিল। কোলাহলে মুখর ছিল বরিশাল নদীবন্দর। গত ঈদে প্রচুর যাত্রী নদীপথে গ্রামে ফেরায় এবার লঞ্চমালিকেরা অনেকটা আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। এর ওপর এবার ঈদের ছুটি বেশি হওয়ায় যাত্রীদের ভিড় আরও বাড়বে এবং বেশিসংখ্যক লোক গ্রামে ফিরবেন বলে মনে করছে লঞ্চের মালিকপক্ষ।
অভ্যন্তরীণ লঞ্চ মালিক সমিতির মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ঈদের সময় আগের রোটেশন প্রথা তুলে দিয়ে যাত্রী চাহিদা অনুযায়ী লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ঢাকা থেকে এই বিশেষ সার্ভিস শুরু হচ্ছে।
তবে ঈদযাত্রায় ভাড়া স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ১ হাজারের জায়গায় এখন ১ হাজার ১০০ থেকে ২০০ টাকা, ডাবল কেবিনের ভাড়া ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকার স্থলে ২ হাজার ২০০ টাকা এবং ডেকের ভাড়া ৩০০ টাকার জায়গায় ৪০০ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুরভী শিপিং লাইনসের পরিচালক রেজিন উল কবির মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে আমরা সরকার–নির্ধারিত ভাড়ার কম নিয়েই যাত্রী পরিবহন করি। এতে অনেক সময় আমাদের লোকসানে থাকতে হয়। কিন্তু ঈদের সময় সরকার–নির্ধারিত ভাড়া নিয়ে তা কিছুটা পোষাতে হয়।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্র জানায়, দেশে নৌপথে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বেশি যাত্রী চলাচল করেন ঢাকা-বরিশাল পথে। কিন্তু পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে এই নৌপথে যাত্রীসংখ্যা কমে যায়। আগে যেখানে প্রতিদিন ছয় থেকে আটটি লঞ্চ চলাচল করত, এখন প্রতিদিন দুটি লঞ্চ চলাচল করে।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক শেখ মোহাম্মদ সেলিম রেজা প্রথম আলোকে বলেন, এবার ঈদ উপলক্ষে সরকারি দীর্ঘ ছুটি হওয়ায় আগের চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী গ্রামে ফিরবেন বলে মনে হচ্ছে। তাই এবার প্রত্যাশা অনুযায়ী যাত্রী পাওয়া যাবে লঞ্চগুলোতে।
তবে এবারের ঈদে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীসেবায় বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেয়নি রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থাগুলো। একইভাবে বিআইডব্লিউটিসির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নৌযানগুলোও যাত্রীসেবা থেকে বাদ পড়েছে।
নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) প্যাডেল স্টিমার পিএস মাসহুদ, লেপচা, টার্ন, অস্ট্রিচ এবং আধুনিক জাহাজ এমভি মধুমতি ও এমভি বাঙালি—সবগুলোই লোকসানের অজুহাতে বন্ধ রাখা হয়েছে।
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, কোরবানির ঈদে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত করা হচ্ছে। ঝড়ের মৌসুম হওয়ায় বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নৌ নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের ব্যাপারে কঠোর নজরদারি রাখা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ব ভ ব ক সময় পর বহন বর শ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের দিন বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী শনিবার (৭ জুন) মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকবে।
বুধবার (৪ জুন) ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী ৭ জুন মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকবে। আর ঈদের পরের দিন রবিবার (৮ জুন) সকাল ৮টা থেকে ৩০ মিনিট হেডওয়ে অনুযায়ী মেট্রোরেল চলাচল করবে।
তবে ৯ জুন থেকে সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী মেট্রোরেল যথারীতি চলাচল করবে।
ঢাকা/হাসান/ইভা