সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০ করার পক্ষে বিএনপি
Published: 3rd, June 2025 GMT
জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০টিতে উন্নীত করার বিষয়ে একমত হয়েছে বিএনপি। তবে আপাতত এই আসনে সরাসরি ভোট নয়, দলীয় মনোনয়নের পক্ষে তারা। বিএনপি মনে করে, সংরক্ষিত নারী আসনে এখনই সরাসরি ভোটের সময় হয়নি।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে বিকেলে সেখানে ব্রিফিংয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ দলের এই অবস্থান তুলে ধরেন। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল মাল্টিপাস হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়। ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ এই বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন। ঈদের ছুটির আগে আজই দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের দ্বিতীয় দফার আলোচনার শেষ দিন ছিল।
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে সংরক্ষিত নারী আসন নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন পদ্ধতি আনুপাতিক। এখন আসন আছে ৫০টি। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আরও ৫০টি আসন বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রায় সব দলের একই রকম প্রস্তাব ছিল। কিছু কিছু দল বাদে। তবে এর নির্বাচন পদ্ধতি কী হবে, সে বিষয়ে কোনো ঐক্য এখনও হয়নি। আরও আলোচনার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে।’
বিএনপি সংরক্ষিত নারী আসনে এখনই সরাসরি নির্বাচন চায় না উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সরাসরি নির্বাচনের জন্য যে পদ্ধতিগুলো.
দেশের নারী সমাজের এখনও সেরকম অগ্রগতি হয়নি উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, তাদের (নারীদের) আরও বেশি এগিয়ে নেওয়ার জন্য এই বিশেষ বিধান রাখা উচিত। সমাজ একটা পর্যায়ে পৌঁছালে তখন আর হয়তো বিশেষ বিধান রাখার প্রয়োজন নাও হতে পারে। তার আগ পর্যন্ত রাখতে হবে।
দুপুরের পরে দুটি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রথমটি হলো সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং দ্বিতীয়টি সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ও সেটির নির্বাচন পদ্ধতি। এর বাইরে যে এজেন্ডাগুলো ছিল, সেগুলো নিয়ে আজ আলোচনা হয়নি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে বিরোধী দলীয় সদস্যদের মধ্য থেকে করার প্রস্তাব উত্থাপন হয়েছিল, সব সভাপতির পদ বিরোধী দলীয় সদস্যদের দেওয়া যায় কি না। এ বিষয়ে প্রথম পর্বের আলোচনায় প্রত্যেকে লিখিত ও মৌখিক জবাব দাখিল করেছিল। কয়েকটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিরোধী দলীয় সদস্যদের দেওয়ার ব্যাপারে তখনই প্রায় সকল দল একমত হয়েছিল। বিএনপির পক্ষ থেকে আরও কয়েকটি এ জাতীয় সংসদীয় কমিটি দেওয়ার পক্ষে প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে সংসদে জবাবদিহি ও ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা হয়।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে বিরোধী দলীয় সদস্যদের মনোনীত করার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে মনে হয়েছে। তবে কয়টি সংখ্যা ও কোন কোন মন্ত্রণালয় সেটি এখনই নির্ধারণ হবে না। সেটি জাতীয় সংসদে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে এবং বিরোধী দলের আকারের বিষয়টিও ভূমিকা রাখবে। সেই সংখ্যা তখন নির্ধারণ করা যাবে। কারণ, বিরোধী দলের সদস্য সংখ্যা কম হলে এখনই এই শতাংশ নির্ধারণ করা হলে সেটি প্রশ্নের সম্মুখীন হবে।
এর আগে সকালে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, নিম্নকক্ষে নারী আসনসহ সংস্কার কমিশনগুলোর আরও কিছু সুপারিশ নিয়ে দেশের ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার এই আলোচনা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এলডিপি, এনসিপিসহ দেশের ২৮টি রাজনৈতিক দল ও দুটি জোটের নেতারা এতে অংশ নেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স রক ষ ত ন র প রস ত ব ব এনপ র কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ হওয়ার পর নির্বাচন বিষয়ে আলোচনা: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘পিআর পদ্ধতি নিয়ে ঐকমত্যে না আসলে, জুলাই সনদের স্বাক্ষর হবে কি না, তা আমাদের সন্দেহ আছে।’ আজ সোমবার সকালে জামালপুরের সার্কিট হাউসে জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে উচ্চকক্ষ। আমরা বলেছিলাম, উচ্চকক্ষটি ভোটার অনুপাতে হতে হবে, পিআর অনুসারে হতে হবে। এই উচ্চকক্ষ আমাদের ক্ষমতার ভারসাম্য ও জবাবদিহির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেই বিষয়ে এখনো ঐকমত্য আসেনি। এ বিষয়ে সবার মধ্যে ঐকমত্য না আসলে, জুলাই সনদে স্বাক্ষর হবে কি না? আমাদের সন্দেহ আছে। এ বিষয়ে ঐকমত্যে আসার পরই আমরা জুলাই সনদের বিষয়টি বিবেচনা করব। তবে আমরা চাই, ৫ আগস্টের মধ্যেই জুলাই সনদটি সর্বদলীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরি হয়ে যাক।’
পুলিশসহ প্রশাসনের লোকজন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না জানিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, ‘জুলাই সনদ হওয়ার পর নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হবে। আর নির্বাচনের আগে অবশ্যই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে।’
জামালপুরে আজ দুপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি পালনের কথা আছে। শহরের তমালতলা থেকে পদযাত্রাটি শুরু ফৌজদারি এলাকায় পথসভাস্থলে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা। জামালপুরে কর্মসূচি শেষে দলের নেতারা ময়মনসিংহে যাবেন।
গতকাল রোববার শেরপুরে পদযাত্রার কর্মসূচি শেষে সন্ধ্যায় জামালপুর শহরে আসেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। রাত আটটার দিকে জামালপুর শহরের চামড়াগুদাম এলাকায় আল জামিয়াতুল হাবিবিয়া কওমি মাদ্রাসা, হজরত শাহ জামাল (র.)–এর মাজার ও দয়াময়ী মন্দির পরিদর্শন করেন তাঁরা। এরপর জামালপুর সার্কিট হাউসে ও বিভিন্ন হোটেলে রাত যাপন করেন।
পথসভায় সভাপতিত্ব করবেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব ও জামালপুর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী লুৎফর রহমান। সভায় নাহিদ ইসলামের পাশাপাশি দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, নাহিদা সরওয়ার, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র মুখ্য সমন্বয়কারী আবদুল হান্নান, যুগ্ম সদস্যসচিব লুৎফর রহমান, সদস্য মশিউর আমিন, জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক হিফজুর রহমান, সংগঠক মোসাদ্দেকুর রহমান প্রমুখের বক্তব্য দেওয়ার কথা আছে।