লক্ষ্মীপুরে কোরবানির হাট: কম দামে খুশি ক্রেতা, হতাশ বিক্রেতা
Published: 3rd, June 2025 GMT
আগামী ৭ জুন দেশজুড়ে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। ইতোমধ্যে লক্ষ্মীপুরের পাঁচ উপজেলায় বসেছে স্থায়ী-অস্থায়ী পশুর হাট। এসব হাটে জমে উঠছে পশু কেনাবেচা। ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি ও পশুর দর কষাকষি চলছে পুরোদমে।
এবার আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কম দামে পশু কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। তবে, হতাশ খামারি ও ব্যাপারীরা। তারা বলছেন, গরু পালনের খরচ তোলা তো দূরের কথা, অনেক ক্ষেত্রে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের সূত্রে জানায়, লক্ষ্মীপুরে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার খামার রয়েছে। এসব খামারে ১ লাখ ৩৯ হাজার পশু কোরবানির জন্য লালন-পালন করে প্রস্তুত করা হয়েছে। গত বছরে যে পশু বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়, এবার একই ধরনের পশু বিক্রি হচ্ছে প্রায় লাখ টাকায়। প্রকার ভেদে প্রতিটি গরু ২০-২৫ হাজার টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
কালীগঞ্জে পশুর চামড়া প্রক্রিয়াজাতের ১৫ টন লবণ বিতরণ
কেউ পুরনোটা শান দিচ্ছেন, কেউ নতুন ছুরি-বটি কিনছেন
লক্ষ্মীপুর সদরের দালালবাজার এলাকার অস্থায়ীসহ কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা যায়, দেশি গরুর সরবরাহ ভালো। অনেক খামারই তাদের খামারের গরু নিয়ে হাটে আসছেন বিক্রির আশায়। ক্রেতারা গরুর প্রত্যাশিত দাম না বলায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বিক্রেতারা।
খামারি ও ব্যাপারীরা জানান, তারা সারা বছর গরু লালন-পালন করেছেন একটু লাভের আশায়। হাটে ক্রেতারা আশানুরূপ দাম বছলেন না। অনেক গরু কম দামে বিক্রি হচ্ছে। গতবারের তুলনায় প্রতি গরু ২০-২৫ হাজার টাকা কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে প্রচুর পরিমাণে পশু রয়েছে। পছন্দের গরু কিনতে পেরে খুশি অনেকেই। আবার অনেকেই বাজারের ব্যবস্থাপনা নিয়েও সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন।
গরু কিনতে দালালবাজার হাটে আসা আব্দুল হাই লিংকন বলেন, “আজ কয়েটি গরু দেখেছি। দাম মোটামুটি ভালো। আশা করছি, সাধ্যের মধ্যে একটি গরু কিনতে পারব।”
গরু বিক্রেতা মোহাম্মদ হাশেম বলেন, “৪০ বছর ধরে গরু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ক্রেতারা দাম ক্রয় মূল্যের চেয়েও কম বলছেন। এতে হতাশায় ভুগছি। লাভের মুখ দেখব কিনা জানা নেই।”
মিরন নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, “হাটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ ও সেনাবাহিনী সবকিছু তদারকি করছে।”
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.
জেলা পুলিশ সুপার আকতার হোসেন বলেন, “জেলার পাঁচটি উপজেলার যেসব স্থানে পশুর হাট বসেছে, প্রত্যেকটিতে পোশাকে ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।”
লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, “মানুষ যেন ঈদুল আজহা সুন্দরভাবে উদযাপন করতে পারে, সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি হাটে জাল টাকা প্রতিরোধে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কঠোর নজরদারি রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাজার মনিটরিং করছেন।”
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র হ ট লক ষ ম প র কম দ ম ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচি পালনকালে ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)।
গতকাল সোমবার এসবির এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি পুলিশের সব বিভাগকে পাঠিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে এসবি। এসবির একটি সূত্র প্রথম আলোকে এই প্রতিবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো ১ জুলাই থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালনের সময়কাল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির কর্মসূচিতে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষায় পুলিশের বিভিন্ন বিভাগকে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে এসবি।
নির্দেশনাগুলো হলো ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা। ৮ আগস্ট পর্যন্ত নিয়মিত সন্দেহজনক ব্যক্তিসহ মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করা। বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল অভিযান পরিচালনা করা। মোবাইল প্যাট্রোল জোরদার করা। গুজব রোধে সাইবার পেট্রোলিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা।
এ ছাড়া কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকলে তা তাৎক্ষণিকভাবে এসবিকে অবহিত করার কথাও বলা হয়েছে।