নরসিংদী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও পেশাগত স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম (জেএনএনপিএফ)। নারী অধিকারের কথা বলায় হেফাজতের তোপের মুখে তাঁকে বদলি করায় সংগঠনটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মমতাজ আরা বেগম ও সাধারণ সম্পাদক জমিলা সুলতানা এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, এটি নারীর স্বাধীন মতপ্রকাশের অন্তরায় এবং শিক্ষকের পেশাগত সুরক্ষা ও স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ। তাঁকে অন্যায্যভাবে বারবার বদলি করাও প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে মনে করে এ সংগঠন। সম্প্রতি ‘হিস্যা’ নামের ম্যাগাজিনের এক প্রবন্ধে নারী-পুরুষের সমান হিস্যার কথা লিখেছিলেন নাদিরা ইয়াসমিন। সমানাধিকার দাবি করায় হেফাজতে ইসলামের দাবির মুখে গত ২৬ মে নরসিংদী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে বদলি করা হয়। নরসিংদী জেলায় নারী অধিকারকর্মী হিসেবে পরিচিত নাদিরাকে সামাজিকভাবেও হেনস্তা করা হয়। মানবাধিকারকর্মীরা প্রতিবাদ জানালে গত ১ জুন নাদিরা ইয়াসমিনকে টাঙ্গাইলে বদলি করা হয়। এদিকে হেফাজতে ইসলামের নারীবিদ্বেষী বক্তব্যের পরও প্রশাসন নীরব থাকে।

জেএনএনপিএফ মনে করে, এসব ঘটনা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নাদিরাকে নিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। বিভিন্নভাবে হুমকির সম্মুখীনও হচ্ছেন তিনি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব ধ নত

এছাড়াও পড়ুন:

২২ অনাথ কাশ্মীরি শিশুর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী

অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানি গোলায় ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের ২২ অনাথ শিশুর লেখাপড়ার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওই শিশুরা পুঞ্চ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা।

স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠে স্নাতক হওয়া পর্যন্ত ওই শিশুদের পড়াশোনার সব খরচ রাহুল গান্ধী বহন করবেন। সেই খরচের প্রথম কিস্তির টাকা বুধবার ওই পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন জম্মু–কাশ্মীরের কংগ্রেস সভাপতি তারিক হামিদ কাররা।

পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল কয়েকজন জঙ্গি। সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন মোট ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যাঘাতের জন্য ভারত শুরু করে অপারেশন সিঁদুর। চার দিনের সেই লড়াইয়ের সময় জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রবল গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান। সেই হামলায় মারা গিয়েছিলেন ২৭ জন গ্রামবাসী। আহত হয়েছিলেন ৭০ জনের বেশি। যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, ওই ২২ শিশু ওইসব পরিবারেরই সন্তান। তাদের কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ–বা দুজনকেই হারিয়েছে। কারও পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

রাহুল গত মে মাসে ওইসব এলাকায় গিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অনাথ শিশুদের স্কুলেও গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অনাথ শিশুদের তালিকা তৈরি করতে। সরকারি নথির সঙ্গে সেই নাম মিলিয়ে ২২ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হয়। পুঞ্চ জেলা সফরের সময় রাহুল তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ওই শিশুদের স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সব খরচ তিনি দেবেন।

পাকিস্তানের গোলার আঘাতে মারা গিয়েছিলেন ১২ বছরের দুই যমজ ভাই–বোন জাইন আলি ও উরবা ফতিমা। রাহুল তাঁদের স্কুলে গিয়েছিলেন। সেই স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের বন্ধুদের হারিয়েছ। সে জন্য তোমাদের মন খারাপ। ওই মৃত্যু আমাকেও দুঃখ দিয়েছে। তোমাদের দুঃখ আমি বুঝি। কিন্তু তোমাদের জন্য আমি গর্বিত। তোমরা ভয়কে জয় করেছ। রাহুল ওই শিশুদের বলেছিলেন, ভয়কে জয় করতে হবে। সুদিন আসবে। সব আবার স্বাভাবিক হবে।

ওই ২২ জনের জন্য বছরে কত খরচ হবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব তা জানাননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ