দেশে প্রবৃদ্ধির পর্যায়ে মূল্যস্ফীতি খারাপ কিছু নয়
Published: 3rd, June 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টার অর্থবিষয়ক বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ঋণ করা খারাপ নয়, বরং সরকারের ঋণ গ্রহণ জনগণের জন্য সঞ্চয়ের মতো। আর ঋণ ছাড়া সরকার চলতে পারে না।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার বনানীর একটি হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) আয়োজিত বাজেট–পরবর্তী পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনিসুজ্জামান চৌধুরী এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘প্রবৃদ্ধির পর্যায়ে মূল্যস্ফীতি খারাপ কিছু নয়। ইন্দোনেশিয়াতে যখন প্রবৃদ্ধি হচ্ছিল, তখন তাদের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ থেকে ১৩ শতাংশ। আমাদের এখানে মূল্যস্ফীতি ১০ থেকে ১১ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, এটার খারাপ কোনো প্রভাব বের করা যাবে না। এটা আসলে রাজনৈতিক ইস্যু। রাজনৈতিকভাবেই এটা মোকাবিলা করতে হবে। তাই সুদহার বাড়িয়ে এটা কোথাও নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। বরং সুদহার বাড়ালে ছোট-বড় সবাই আক্রান্ত হয়। মূল্যস্ফীতি কমাতে সুদের অস্ত্র খুব বেশি কাজ করে না।’
আনিসুজ্জামান বলেন, সরকারের ঋণ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। ঋণ খারাপ কিছু নয়। তবে ঋণের টাকা যথাযথভাবে ব্যবহারের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। দুর্নীতি দেশকে গিলে ফেলছে। কর্ণফুলী টানেল পরিচালনায় প্রতিনিয়ত রাজস্ব থেকে অর্থ ব্যয় হচ্ছে।
দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ নিয়ে নিজের মত দেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বলেন, ‘আমাদের এখানে বৈদেশিক বিনিয়োগ বা রাজস্ব বাড়েনি বিদেশি ঋণনির্ভরতার কারণে। বিদেশি ঋণ নিলে তাদের অনেক কথা শুনতে হয়। তখন হাত বাঁধা থাকে। স্বাধীনভাবে নীতি গ্রহণ করা যায় না।’ তবে সার্বিকভাবে এখানকার সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবকে সবচেয়ে বড় সমস্যা বলে মনে করেন তিনি।
সংস্কারের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার এ বিশেষ সহকারী বলেন, ‘সংস্কার খুব কঠিন বিষয়। এটার সঙ্গে অনেক তিক্ত রাজনীতি মিশ্রিত রয়েছে। আবার সংস্কারের নির্দিষ্ট কোনো টেক্সট বুক নেই। কোন গতিতে যাব, সেটাও নির্দিষ্ট করা নেই। আবার দ্রুত করতে গেলে কলাপস হতে পারে।’
সেমিনারে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নযোগ্য নয়। আর এবারের বাজেটের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি বাড়বেও না, আবার কমবেও না।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘সরকারের ব্যাংকনির্ভরতা বেশি হলে ব্যক্তি খাত ভোগান্তিতে পড়বে। সে জন্য বিদেশি ঋণ ভালো। আমরা অবকাঠামোর দিকে মনোযোগ দিয়ে মানবসম্পদ উন্নয়নে নজর দিইনি। এবারও শিক্ষা–স্বাস্থ্যে বরাদ্দ কম। ফলে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হবে না।’
সেমিনারে মূল বক্তব্যে উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, বিনিয়োগ বাড়াতে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও সমন্বিত পদক্ষেপ নেই। ফলে ব্যক্তি খাতে ২৪ শতাংশ বিনিয়োগের লক্ষ্য পূরণ প্রায় অসম্ভব।
সভাপতির বক্তব্যে অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলার উন্নতি না হলে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। কাস্টমসের আধুনিকায়ন করতে হবে। লজিস্টিকসেও পিছিয়ে আছি আমরা।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে প্রবৃদ্ধির পর্যায়ে মূল্যস্ফীতি খারাপ কিছু নয়
প্রধান উপদেষ্টার অর্থবিষয়ক বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ঋণ করা খারাপ নয়, বরং সরকারের ঋণ গ্রহণ জনগণের জন্য সঞ্চয়ের মতো। আর ঋণ ছাড়া সরকার চলতে পারে না।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার বনানীর একটি হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) আয়োজিত বাজেট–পরবর্তী পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনিসুজ্জামান চৌধুরী এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘প্রবৃদ্ধির পর্যায়ে মূল্যস্ফীতি খারাপ কিছু নয়। ইন্দোনেশিয়াতে যখন প্রবৃদ্ধি হচ্ছিল, তখন তাদের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ থেকে ১৩ শতাংশ। আমাদের এখানে মূল্যস্ফীতি ১০ থেকে ১১ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, এটার খারাপ কোনো প্রভাব বের করা যাবে না। এটা আসলে রাজনৈতিক ইস্যু। রাজনৈতিকভাবেই এটা মোকাবিলা করতে হবে। তাই সুদহার বাড়িয়ে এটা কোথাও নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। বরং সুদহার বাড়ালে ছোট-বড় সবাই আক্রান্ত হয়। মূল্যস্ফীতি কমাতে সুদের অস্ত্র খুব বেশি কাজ করে না।’
আনিসুজ্জামান বলেন, সরকারের ঋণ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। ঋণ খারাপ কিছু নয়। তবে ঋণের টাকা যথাযথভাবে ব্যবহারের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। দুর্নীতি দেশকে গিলে ফেলছে। কর্ণফুলী টানেল পরিচালনায় প্রতিনিয়ত রাজস্ব থেকে অর্থ ব্যয় হচ্ছে।
দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ নিয়ে নিজের মত দেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বলেন, ‘আমাদের এখানে বৈদেশিক বিনিয়োগ বা রাজস্ব বাড়েনি বিদেশি ঋণনির্ভরতার কারণে। বিদেশি ঋণ নিলে তাদের অনেক কথা শুনতে হয়। তখন হাত বাঁধা থাকে। স্বাধীনভাবে নীতি গ্রহণ করা যায় না।’ তবে সার্বিকভাবে এখানকার সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবকে সবচেয়ে বড় সমস্যা বলে মনে করেন তিনি।
সংস্কারের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার এ বিশেষ সহকারী বলেন, ‘সংস্কার খুব কঠিন বিষয়। এটার সঙ্গে অনেক তিক্ত রাজনীতি মিশ্রিত রয়েছে। আবার সংস্কারের নির্দিষ্ট কোনো টেক্সট বুক নেই। কোন গতিতে যাব, সেটাও নির্দিষ্ট করা নেই। আবার দ্রুত করতে গেলে কলাপস হতে পারে।’
সেমিনারে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নযোগ্য নয়। আর এবারের বাজেটের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি বাড়বেও না, আবার কমবেও না।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘সরকারের ব্যাংকনির্ভরতা বেশি হলে ব্যক্তি খাত ভোগান্তিতে পড়বে। সে জন্য বিদেশি ঋণ ভালো। আমরা অবকাঠামোর দিকে মনোযোগ দিয়ে মানবসম্পদ উন্নয়নে নজর দিইনি। এবারও শিক্ষা–স্বাস্থ্যে বরাদ্দ কম। ফলে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হবে না।’
সেমিনারে মূল বক্তব্যে উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, বিনিয়োগ বাড়াতে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও সমন্বিত পদক্ষেপ নেই। ফলে ব্যক্তি খাতে ২৪ শতাংশ বিনিয়োগের লক্ষ্য পূরণ প্রায় অসম্ভব।
সভাপতির বক্তব্যে অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলার উন্নতি না হলে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। কাস্টমসের আধুনিকায়ন করতে হবে। লজিস্টিকসেও পিছিয়ে আছি আমরা।’