৫০ ভাগ সংসদীয় কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে চায় জামায়াত
Published: 4th, June 2025 GMT
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিগুলোর সভাপতি কে হবে, তা সরকার এবং বিরোধী দল সমঝোতার ভিত্তিতে নির্ধারণ করবে। তবে কমপক্ষে ৫০ ভাগ কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে হতে হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন জামায়াতের এই নায়েবে আমির।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শুরু হয়। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে রাজনৈতিক দলগুলো আলাদা ব্রিফিং করে।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আমরা মতামত দিয়েছি, ৭০ অনুচ্ছেদে অর্থবিল, নো-কনফিডেন্স (আস্থা ভোট) এবং সংবিধান পরিবর্তন— এই তিনটি বিষয় ছাড়া অন্য সব বিষয়ে সংসদ সদস্যরা চাইলে তার দলের বিরুদ্ধে মতামত দিতে পারবেন।’
জামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, বৈঠকে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বিষয়ে বলেছি, মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বাইরে কিছু ‘অ্যাপেক্স কমিটি’ আছে। সরকারি হিসাব, সরকারি প্রতিষ্ঠান, অনুমিত হিসাব ও বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত কমিটি— এগুলোর প্রধান বিরোধী দল থেকে দিতে হবে।
এর আগে সকালে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, নিম্নকক্ষে নারী আসনসহ সংস্কার কমিশনগুলোর আরও কিছু সুপারিশ নিয়ে দেশের ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার বৈঠক শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরু করেছে সোমবার। সেদিন আলোচনার উদ্বোধন করেন কমিশনের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এলডিপি, এনসিপিসহ দেশের ২৮টি রাজনৈতিক দল ও দুটি জোটের নেতারা অংশ নেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’
আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।
জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।
জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।
এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।
জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।
জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।