সমালোচনার মুখে অবশেষে ২১০ টাকা ভাড়াতেই চালু হলো স্পিডবোট
Published: 4th, June 2025 GMT
তীব্র সমালোচনার মুখে অবশেষে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে স্পিডবোট চলাচল শুরু হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে ২১০ টাকা সরকার নির্ধারিত ভাড়াতেই স্পিডবোট চালানো শুরু করেন মালিকেরা। এর আগে তাঁরা ঈদযাত্রায় ভাড়া ৩০০ টাকা করার দাবিতে নৌপথে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
কাজীরহাট-আরিচা স্পিডবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বেড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো.
মো. রইজউদ্দিন আরও বলেন, ঈদের সময় একদিকে যাত্রী থাকায় ফেরার পথে খালি স্পিডবোট চালাতে হয়। এতে প্রতিবারে এক থেকে দেড় হাজার টাকা লোকসান হয়। তবে বৈঠকে যাত্রীসেবার কথা বিবেচনায় রেখে লোকসান দিয়েই চলাচল চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নগরবাড়ি-কাজীরহাট ঘাট কার্যালয়ের পোর্ট অফিসার আবদুল ওয়াকিল বলেন, বোট বন্ধের পর বিআইডব্লিউটিএ ও স্থানীয় প্রশাসন স্পিডবোট–মালিকদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে। তাঁদের জানানো হয়, সরকারি প্রজ্ঞাপনের বাইরে ভাড়া বাড়ানোর সুযোগ নেই। তাঁরা ভাড়া বাড়ানোর আবেদন করলেও সেটি নিষ্পত্তিতে সময় লাগবে বলে জানানো হয়। যাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয়টি মালিকদের সামনে তুলে ধরা হয়। পরে তাঁরা সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় বোট চালানোর সিদ্ধান্ত নেন।
আরও পড়ুনঅতিরিক্ত ভাড়ার আবদার পূরণ হয়নি, তাই স্পিডবোট বন্ধ করে দিলেন মালিকেরা১৯ ঘণ্টা আগেবিআইডব্লিউটিএ ও স্পিডবোট–মালিকদের সূত্র জানায়, পাবনার বেড়া উপজেলার কাজীরহাট থেকে মানিকগঞ্জের আরিচা পর্যন্ত নৌপথের দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। দীর্ঘদিন এ পথে ২৫০ টাকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছিল। দেশের অন্যান্য নৌপথের তুলনায় এটি অনেক বেশি হওয়ায় চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সরকার ২১০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এরপরও মালিকেরা ২৫০ টাকাই আদায় করে আসছিলেন। গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার পর তাঁরা ভাড়া কমিয়ে ২১০ টাকা করেন।
তবে লোকসানের কথা জানিয়ে স্পিডবোটের মালিকেরা ১০ দিনের জন্য ৩০০ টাকা ভাড়া আদায়ের আবেদন করেন। অনুমোদন না পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার থেকে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করে দেন তাঁরা। এতে ঘরমুখী মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক জ রহ ট ২১০ ট ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য খুলে দিয়েছে সরকার। সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছিল, কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবেন। কিন্তু দুই দিনে একজন পর্যটকও যেতে পারেননি। কারণ, পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ। কবে থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হবে, তা নিয়েও কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।
কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকেই পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতের কথা। এ জন্য ১ হাজার ৭০০ জন ধারণক্ষমতার দুটি জাহাজ—এমভি কর্ণফুলী ও এমভি বার আউলিয়া চলাচলের অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু গতকাল শনিবার ও আজ রোববার ওই রুটে কোনো জাহাজ চলেনি। আরও চারটি জাহাজ চলাচলের অনুমতির জন্য আবেদন করেছে।
সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত যাপন করা যাবে না, তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপনের সুযোগ থাকবে। বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবে না। পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে। কিউআর কোডবিহীন টিকিট নকল বলে গণ্য হবে।
সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে রাতের বেলায় সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সৈকতে মোটরসাইকেল বা সি-বাইকসহ মোটরচালিত যান চলাচলও বন্ধ। নিষিদ্ধ পলিথিন বহন এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক (চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, পানির বোতল ইত্যাদি) ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
পর্যটক নেই, ফাঁকা ঘাটআজ সকাল সাতটায় নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, কোনো যাত্রী নেই। বাঁকখালী নদীতেও পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ দেখা যায়নি। ঘাটে অবস্থান করছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। জানা যায়, গতকাল সকালে তিনজন পর্যটক টিকিট কেটে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, পরে জাহাজ না থাকায় ফিরে যান।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য সেন্ট মার্টিন উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় গত দুই দিনে কোনো পর্যটক যেতে পারেননি। নভেম্বরে দিনে গিয়ে দিনে ফেরার নিয়ম থাকায় সময় ও সুযোগ কম, আবার দীর্ঘ জাহাজযাত্রার কারণে অনেকেই নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। তারপরও আমরা সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঘাটে অবস্থান করছি।’
জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, টানা ৯ মাস বন্ধ থাকার পর ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে উখিয়ার ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাট কিংবা টেকনাফের কোনো স্থান থেকে এখনো জাহাজ চলাচলের অনুমতি নেই।
জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে।
গত ডিসেম্বরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ছেড়ে কক্সবাজারের পথে পর্যটকবাহী একটি জাহাজ