গাজায় আজ ত্রাণ দিচ্ছে না হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন, যুদ্ধবিরতি প্রশ্নে জাতিসংঘে ভোটাভুটি
Published: 4th, June 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় চলা মানবিক সহায়তা সংগঠন ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ আজ বুধবার গাজা উপত্যকায় কোনো ধরনের ত্রাণ বিতরণ না করার ঘোষণা দিয়েছে। ত্রাণ নিতে গিয়ে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার এক দিন পর এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের সীমানার বাইরেও বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা বাড়াতে সংস্থাটি ইসরায়েলের ওপর চাপ দিচ্ছে।
গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন বলেছে, তারা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করেছে যেন তারা সামরিক সীমানার কাছে জনসাধারণের চলাচল এমনভাবে পরিচালনা করে যাতে বিভ্রান্তি বা উত্তেজনার ঝুঁকি কমে। এ ছাড়া সাধারণ নাগরিকদের জন্য আরও স্পষ্ট দিকনির্দেশনা তৈরি করা এবং বেসামরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণ বাড়িয়ে দেওয়ারও অনুরোধ জানানো হয়েছে।
গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের এক মুখপাত্র বলেন, ‘ত্রাণ নিতে আসা মানুষদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করাটা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের জায়গা।’
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র আজ গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের দিকে যাওয়ার রাস্তাগুলোকে ‘যুদ্ধাঞ্চল’ বলে উল্লেখ করেন। ওই সব এলাকায় চলাচলের বিষয়ে সাধারণ মানুষদের সতর্ক করেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের খাদ্যসহায়তা বিতরণকেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া একদল মানুষকে ‘হুমকি’ মনে করে গুলি চালিয়েছে তারা।
আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি বলেছে, এ ঘটনায় অন্তত ২৭ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন বলেছে, এ ঘটনা তাদের ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের ‘অনেক বাইরে’ ঘটেছে।
গতকাল গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিরা বলেছেন, ঘটনাস্থলে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। ভিড়ের মধ্যে সবাই সাহায্য পেতে ঠেলাঠেলি করছিলেন। কেউ ত্রাণ হস্তান্তরের কাজ তদারকি করছিলেন না, পরিচয়পত্রও যাচাই করা হচ্ছিল না।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশ নিশ্চিত করার বিষয়ে আজ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি হবে।
গাজা থেকে ১১ সপ্তাহের অবরোধ তুলে নেওয়ার পরও সেখানে বিশৃঙ্খলা ও রক্তপাত চলার কারণে খুব সীমিত পরিমাণে ত্রাণ পৌঁছাতে পারছে।
জাতিসংঘ ও অন্য মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলো গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে থাকে। জাতিসংঘ মনে করে, এ সংস্থা নিরপেক্ষ নয় এবং এর ত্রাণ বিতরণের পদ্ধতি মানবিক সহায়তাকে সামরিক রূপ দিচ্ছে। ত্রাণ বিতরণস্থলে সহায়তা পৌঁছাতে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি নিরাপত্তা ও লজিস্টিকস কোম্পানির সহায়তা নেয় গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব তরণক ন দ র র ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় বিএনপি কার্যালয়ে গুলি ও বোমা হামলা, নিহত ১
খুলনা নগরের আড়ংঘাটায় কুয়েট আইটি গেট–সংলগ্ন বিএনপির কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে ইমদাদুল হক (৫৫) নামের এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সোয়া নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য মামুন শেখসহ আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, রাতে মামুন শেখ স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে ওই কার্যালয়ে বসে ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা অফিস লক্ষ্য করে পরপর দুটি বোমা ও চারটি গুলি ছোড়ে। এরপর তারা পালিয়ে যায়। প্রথম গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাশে থাকা শিক্ষক ইমদাদুল হকের শরীরে লাগে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে আবার গুলি চালালে মামুন শেখসহ অন্য দুজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা তাঁদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
নিহত ইমদাদুল বছিতলা নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। এলাকাবাসীর ভাষ্য, তিনি একটি মাহফিলের অনুদান সংগ্রহের জন্য ওই কার্যালয়ে গিয়েছিলেন।
আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাসার বলেন, মামুন শেখ প্রায়ই স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কার্যালয়ে বসে আড্ডা দেন। গতকাল রাতেও তিনি আড্ডা দিচ্ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছিল। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলছে।