পবিত্র ঈদুল আজহার দিনেও গাজা জুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার (৬ জুন) ঈদের দিন দফায় দফায় ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আল জাজিরা। পাশাপাশি খাদ্য বিতরণ কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)।

স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খান ইউনূসের নাসের হাসপাতালে অন্তত ১৬টি মরদেহ পৌঁছেছে। এ ছাড়া গাজার উত্তরের আল-শিফা হাসপাতালে ১৬ জন, গাজা শহরের আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে পাঁচজন এবং দেইর আল-বালাহর আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে আরও পাঁচজনের মরদেহ আনা হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টার হতাহতসহ ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ৬৭৭ জনে এবং এ সময় এক লাখ ২৫ হাজার ৫৩০ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকে আছেন। উদ্ধারকর্মীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না। 

আরো পড়ুন:

গাজায় ঈদের দিনেও ইসরায়েলের হামলা, নিহত ২০

গাজায় সাংবাদিকদের তাঁবুতে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, নিহত ৪

এদিকে গাজায় সব ধরনের ত্রাণ কার্যক্রম বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)।

ফাউন্ডেশনটির এক ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিতরণকেন্দ্রগুলোতে যাওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে অনেক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পরেই এসব কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়।

গত ১৮ মার্চ মাসে ইসরায়েল গাজায় কঠোর অবরোধ আরোপ করার পর থেকে খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানি প্রবেশ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত মাসে কিছু ত্রাণ ঢুকতে দেওয়া হলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছে বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ