থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা তাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে একটি ‘উচ্চ-স্তরের অভিযান’ শুরু করতে প্রস্তুত। কম্বোডিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ নতুন করে শুরু হওয়ার পর থাই সেনাবাহিনী এমন কঠোর মন্তব্য করল। 

শুক্রবার (৬ ‍জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থাই সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, দেশটির গোয়েন্দা তথ্য ‘উদ্বেগজনক’ ইঙ্গিত পেয়েছে যে, কম্বোডিয়া তাদের ভাগ করা সীমান্তে তার সামরিক প্রস্তুতি বাড়িয়েছে।

আরো পড়ুন:

ইউক্রেনে ব্যাপক হামলা রাশিয়ার

ইউক্রেনের ড্রোন হামলার প্রতিশোধ নেবেন পুতিন, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনী এখন একটি উচ্চ-স্তরের সামরিক অভিযানের জন্য প্রস্তুত।”

থাই পাবলিক ব্রডকাস্টিং সার্ভিস (থাই পিবিএস) অনুসারে, দেশটির সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীও তাদের যুদ্ধ প্রস্তুতি বাড়িয়েছে।

থাই পিবিএসের প্রতিবেদন অনুসারে, থাইল্যান্ডের ১২তম পদাতিক রেজিমেন্ট অব দ্য রয়েল গার্ডসের কমান্ডার কর্নেল চাইনারং কাসি বলেছেন, তার সৈন্যদের সমস্ত সরঞ্জাম ঠিকঠাক আছে কিনা তা পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত ২৮ মে, কম্বোডিয়ার জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, কম্বোডিয়ার প্রিয়াহ ভিহিয়ার প্রদেশ ও থাইল্যান্ডের উবোন রাতচাথানি প্রদেশের মধ্যে একটি বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চলে একটি সংক্ষিপ্ত বন্দুকযুদ্ধের সময় থাই সৈন্যরা তাদের একজন সৈন্যকে গুলি করে হত্যা করেছে।

মন্ত্রণালয় থাই সৈন্যদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চলে একটি কম্বোডিয়ান সামরিক পোস্টে প্রথমে গুলি চালানোর অভিযোগ করেছে। তবে থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই দাবি করেছেন, কম্বোডিয়ান বাহিনী প্রথমে গুলি চালিয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ দুটি বছরের পর বছর ধরে প্রিয়া ভিহারের সীমান্ত অঞ্চলে বারবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে, যেখানে ৯০০ বছরের পুরোনো একটি মন্দির দশকের পর দশক ধরে চলা বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত, যা সীমান্তের উভয় পাশে জাতীয়তাবাদী মনোভাবকে উস্কে দিয়েছে।

২০০৮ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি মারাত্মক সংঘর্ষ সংঘটিত হয়, যার ফলে প্রায় ৪০ জন নিহত হয়, যার মধ্যে পাঁচজন বেসামরিক নাগরিকও ছিলেন।

২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) প্রিয়া ভিহার মন্দিরের আশেপাশের জমি কম্বোডিয়াকে দেওয়ার এবং থাইল্যান্ডকে ওই অঞ্চলে অবস্থানরত কর্মীদের প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়ার ১৯৬২ সালের রায় বহাল রাখে।

তবে থাইল্যান্ড ১৯৬০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আইসিজে-র এখতিয়ারকে স্বীকৃতি দেয়নি। দেশটি বরং দ্বিপাক্ষিক আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে।

থাইল্যান্ডের সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, “থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার ইতিমধ্যেই এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক ব্যবস্থা রয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “থাইল্যান্ড আন্তর্জাতিক আইন, চুক্তি এবং স্যাটেলাইট চিত্র ও অন্যান্য যাচাইকৃত প্রমাণের ভিত্তিতে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রতিবেশী হিসেবে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে।”

সীমান্ত সীমানা নির্ধারণের সমস্যাগুলো সমাধানকারী কম্বোডিয়া-থাইল্যান্ড যৌথ সীমান্ত কমিশনের একটি সভা ১৪ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত ত কম ব ড য

এছাড়াও পড়ুন:

সীমান্তে চামড়া পাচার ও পুশইন রোধে সতর্ক বিজিবি

কোরবানির পশুর চামড়া পাচার ঠেকাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত এলাকায় সতর্কাবস্থানে আছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ইতোমধ্যে বিজিবির ২৫ ব্যাটালিয়ন জেলার আখাউড়া, কসবা ও বিজয়নগর উপজেলার সীমান্ত এলাকায় টহল বাড়িয়েছে। পাশাপাশি তারা ভারতীয় নাগরিকদের অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া (পুশইন) রোধেও কঠোর অবস্থানে আছে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

বিজিবির ২৫ ব্যাটালিয়ন সূত্র জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা, আখাউড়া ও বিজয়নগর উপজেলা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী। এই তিন উপজেলার ৭৩ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে ৩১ কিলোমিটারে দায়িত্ব পালন করে বিজিবির ২৫ ব্যাটালিয়ন। এ ছাড়া ৪২ কিলোমিটার সীমান্ত বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়নের অধীনে। 

সূত্র জানায়, প্রতি বছর ঈদুল আজহার পরপর সীমান্ত দিয়ে কোরবানির পশুর চামড়া পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এবার সীমান্ত এলাকায় বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে বিজিবির ২৫ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বে থাকা আখাউড়ার একাংশ ও জেলার বিজয়নগর; হবিগঞ্জের মাধবপুর সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিজিবির ২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাব্বার আহমেদ শনিবার সন্ধ্যায় সমকালকে বলেন, সীমান্তে যেকোনো অপরাধ তৎপরতা ঠেকাতে তাঁর বাহিনী তৎপর রয়েছে। চামড়া পাচার রোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই সীমান্ত দিয়ে পশুর চামড়া পাচার করতে দেবেন না তারা। পাশাপাশি মাদক চোরাচালান ও অবৈধভাবে পুশইন করতে না দেওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ