কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত থাইল্যান্ড
Published: 7th, June 2025 GMT
থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা তাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে একটি ‘উচ্চ-স্তরের অভিযান’ শুরু করতে প্রস্তুত। কম্বোডিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ নতুন করে শুরু হওয়ার পর থাই সেনাবাহিনী এমন কঠোর মন্তব্য করল।
শুক্রবার (৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থাই সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, দেশটির গোয়েন্দা তথ্য ‘উদ্বেগজনক’ ইঙ্গিত পেয়েছে যে, কম্বোডিয়া তাদের ভাগ করা সীমান্তে তার সামরিক প্রস্তুতি বাড়িয়েছে।
আরো পড়ুন:
ইউক্রেনে ব্যাপক হামলা রাশিয়ার
ইউক্রেনের ড্রোন হামলার প্রতিশোধ নেবেন পুতিন, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনী এখন একটি উচ্চ-স্তরের সামরিক অভিযানের জন্য প্রস্তুত।”
থাই পাবলিক ব্রডকাস্টিং সার্ভিস (থাই পিবিএস) অনুসারে, দেশটির সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীও তাদের যুদ্ধ প্রস্তুতি বাড়িয়েছে।
থাই পিবিএসের প্রতিবেদন অনুসারে, থাইল্যান্ডের ১২তম পদাতিক রেজিমেন্ট অব দ্য রয়েল গার্ডসের কমান্ডার কর্নেল চাইনারং কাসি বলেছেন, তার সৈন্যদের সমস্ত সরঞ্জাম ঠিকঠাক আছে কিনা তা পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ২৮ মে, কম্বোডিয়ার জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, কম্বোডিয়ার প্রিয়াহ ভিহিয়ার প্রদেশ ও থাইল্যান্ডের উবোন রাতচাথানি প্রদেশের মধ্যে একটি বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চলে একটি সংক্ষিপ্ত বন্দুকযুদ্ধের সময় থাই সৈন্যরা তাদের একজন সৈন্যকে গুলি করে হত্যা করেছে।
মন্ত্রণালয় থাই সৈন্যদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চলে একটি কম্বোডিয়ান সামরিক পোস্টে প্রথমে গুলি চালানোর অভিযোগ করেছে। তবে থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই দাবি করেছেন, কম্বোডিয়ান বাহিনী প্রথমে গুলি চালিয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ দুটি বছরের পর বছর ধরে প্রিয়া ভিহারের সীমান্ত অঞ্চলে বারবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে, যেখানে ৯০০ বছরের পুরোনো একটি মন্দির দশকের পর দশক ধরে চলা বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত, যা সীমান্তের উভয় পাশে জাতীয়তাবাদী মনোভাবকে উস্কে দিয়েছে।
২০০৮ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি মারাত্মক সংঘর্ষ সংঘটিত হয়, যার ফলে প্রায় ৪০ জন নিহত হয়, যার মধ্যে পাঁচজন বেসামরিক নাগরিকও ছিলেন।
২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) প্রিয়া ভিহার মন্দিরের আশেপাশের জমি কম্বোডিয়াকে দেওয়ার এবং থাইল্যান্ডকে ওই অঞ্চলে অবস্থানরত কর্মীদের প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়ার ১৯৬২ সালের রায় বহাল রাখে।
তবে থাইল্যান্ড ১৯৬০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আইসিজে-র এখতিয়ারকে স্বীকৃতি দেয়নি। দেশটি বরং দ্বিপাক্ষিক আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে।
থাইল্যান্ডের সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, “থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার ইতিমধ্যেই এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক ব্যবস্থা রয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “থাইল্যান্ড আন্তর্জাতিক আইন, চুক্তি এবং স্যাটেলাইট চিত্র ও অন্যান্য যাচাইকৃত প্রমাণের ভিত্তিতে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রতিবেশী হিসেবে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে।”
সীমান্ত সীমানা নির্ধারণের সমস্যাগুলো সমাধানকারী কম্বোডিয়া-থাইল্যান্ড যৌথ সীমান্ত কমিশনের একটি সভা ১৪ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত ত কম ব ড য
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনকে টমাহক দেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্প কী ভাবছেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল রোববার বলেছেন, তিনি আপাতত এমন কোনো চুক্তির কথা ভাবছেন না, যা ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য দূরপাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র পেতে সহায়তা করবে।
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর কাছে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির মার্কিন পরিকল্পনা নিয়েও ট্রাম্প অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কারণ, এসব দেশ পরে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনকে দিতে পারে। বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্পের ভাষ্য হলো, তিনি যুদ্ধকে আরও তীব্র করতে চান না।
মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ানে বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্পের সবশেষ এ মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, ইউক্রেনকে টমাহক দিতে তিনি এখনো অনিচ্ছুক।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার পাম বিচ থেকে ওয়াশিংটনে ফেরার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। সাংবাদিকেরা ট্রাম্পের কাছে জানতে চান, তিনি কি ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির বিষয়টি বিবেচনা করছেন?
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘না, আসলে তা নয়।’ তবে তিনি যোগ করেন, ভবিষ্যতে নিজের মত বদলাতে পারেন।
গত ২২ অক্টোবর হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুত্তে। বৈঠকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের ধারণা নিয়ে আলোচনা হয়।
গত শুক্রবার মার্ক রুত্তে বলেন, বিষয়টি এখনো পর্যালোচনার পর্যায়ে আছে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দীর্ঘদিন ধরে ওয়াশিংটনের কাছে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র চেয়ে আসছেন। তবে ক্রেমলিন সতর্ক করে বলেছে, ইউক্রেনকে টমাহক দেওয়া হলে পরিণতি ভালো হবে না।
আরও পড়ুনটমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না২০ ঘণ্টা আগেদ্য গার্ডিয়ান ও সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, টমাহক যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দূরপাল্লার ক্রুজ মিসাইল, যা যুদ্ধজাহাজ বা সাবমেরিন থেকে ছোড়া হয়।
ভূপৃষ্ঠে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে পারে টমাহক। নিচু উচ্চতায় ওড়ে বলে টমাহক রাডারে ধরা পড়ে না। এতে আছে উন্নত জিপিএস ও নেভিগেশন ব্যবস্থা।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে