ঈদের ছয় সিনেমার কোনটি কত হলে মুক্তি পেল
Published: 7th, June 2025 GMT
ঈদকে কেন্দ্র করে এবার মুক্তি পাচ্ছে মোট ছয়টি সিনেমা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’। বাকি সিনেমাগুলোও বিভিন্ন সংখ্যক হলে মুক্তি পাচ্ছে। নিচে প্রতিটি সিনেমার নাম ও কতটি হলে মুক্তি পাচ্ছে, তার তালিকা দেওয়া হলো:
তাণ্ডব
শাকিব খানের সিনেমা মানেই রয়েছে বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা। তার ‘তাণ্ডব’ সিনেমা যে এবারের ঈদে অন্য আর সকল সিনেমা থেকে এগিয়ে থাকবে, সেটা জানাই ছিল। হয়েছেও তাই। সর্বোচ্চ সংখ্যক সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে রায়হান রাফী নির্মিত ‘তাণ্ডব’।
জানা গেছে সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে দেশের ১৩২টি প্রেক্ষাগৃহে। এই সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হলো সাবিলা নূরের। এখানে ক্যামিও চরিত্রে আছেন আফরান নিশো ও সিয়াম আহমেদ।
উল্লেখ্য, আলফা আই প্রযোজিত ও রায়হান রাফী পরিচালিত ‘তাণ্ডব’ সিনেমায় শাকিব-সাবিলা ছাড়াও অভিনয় করেছেন আফজাল হোসেন, জয়া আহসান, এফএস নাঈম প্রমুখ।
ইনসাফ
সঞ্জয় সমাদ্দার নির্মিত ‘ইনসাফ’ নিয়ে হাজির হয়েছেন মোশাররফ করিম, শরীফুল রাজ ও তাসনিয়া ফারিণ। অ্যাকশন ঘরানার সিনেমাটি সিনেমাপ্রেমীদের বেশ কৌতূহলী করে তুলেছিল মুক্তির আাগেই। শাকিব খানের‘তাণ্ডব’ সিনেমার পর সর্বোচ্চ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে সিনেমা ‘ইনসাফ’। এটি ষোলোটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। ২৫ এপ্রিল নির্মাতা সঞ্জয় সমাদ্দার এই সিনেমার প্রথম পোস্টার শেয়ার করেছিলেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পোস্টারের ক্যাপশনে তিনি লিখেছিলেন, “ইনসাফ’ শুধু একটি শব্দ নয়! এটি একটি জীবনবোধ!”
‘ইনসাফ’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম, শরিফুল রাজ, তাসনিয়া ফারিণ, মিশা সওদাগর প্রমুখ। সিনেমাটির প্রযোজনায় রয়েছে তিতাস কথাচিত্র এবং টিওটি ফিল্মস।
‘নীলচক্র : ব্লু গ্যাং’
‘নীলচক্র’ সিনেমা দিয়ে অনেক দিন পর ঈদে আসছেন আরিফিন শুভ। এখানে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন মন্দিরা চক্রবর্তী। একটা ক্লিক। একটা ভিডিও। আর তাতেই পাল্টে যাচ্ছে জীবনের গতিপথ। শহর জুড়ে ফাঁস হচ্ছে একের পর এক ব্যক্তিগত ভিডিও; অন্ধকার, আতঙ্ক আর রহস্যের এই সময়ের গল্প নিয়ে নির্মিত সাসপেন্স থ্রিলার সিনেমা ‘নীলচক্র: ব্লু গ্যাং’।
দেশের মোট ছয়টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। মিঠু খান পরিচালিত এই সিনেমায় শুভ এবং মন্দিরা ছাড়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু।
উৎসব
গত মাসের মাঝামাঝিতে হঠাৎ জানা যায়, ঈদুল আজহার সিনেমায় যুক্ত হচ্ছে ‘উৎসব’। পরিবারকেন্দ্রিক গল্প নিয়ে নির্মিত ছবিটির জোর প্রচারণা চালানো হয়েছে। সিনেমার ট্যাগলাইনে ব্যবহার করা হয়েছে, ‘সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ—পরিবার ছাড়া দেখা নিষেধ।’
‘উৎসব’ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে মোট সাতটি প্রেক্ষাগৃহে। এই সিনেমার মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর সিনেমাটি দিয়ে একসঙ্গে বড় পর্দায় হাজির হলেন জাহিদ হাসান, আফসানা মিমি, চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান অপি করিম, ইন্তেখাব দিনার প্রমুখ। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন তানিম নূর।
এশা মার্ডার: কর্মফল
‘এশা মার্ডার: কর্মফল’ সিনেমাটি গত বছরই মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আর মুক্তি দেননি ছবিটির প্রযোজক। এবার ঈদুল ফিতরেও সিনেমাটি মুক্তির কথা ছিল। পরে জানা যায়, সিনেমাটির কিছু অংশের শুটিং বাকি রয়েছে। অবশেষে এটি মুক্তি পাচ্ছে ঈদুল আজহায়। সানী সানোয়ার পরিচালিত এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন, পূজা ক্রুজ, মিশা সওদাগর প্রমুখ।
টগর
গান ও টিজার দিয়ে প্রচারণায় বেশ সরব ছিলেন ‘টগর’ সিনেমার টিম। এটি পরিচালনা করেছেন আলোক হাসান। এই সিনেমায় জুটি হয়েছেন আদর আজাদ ও পূজা চেরি।এই সিনেমাটি দেশের সাতটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদ র স ন ম এই স ন ম পর চ ল ইনস ফ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব
পাহাড়ের আঁকাবাঁকা প্রায় দুই কিলোমিটারেরও বেশি উঁচুনিচু ঢালু পথ পাড়ি দিয়ে আলোক শোভাযাত্রা করে করলেন হাজারো খৃষ্ট ভক্ত। মা মারিয়ার আশীর্বাদপ্রাপ্ত শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ‘বারোমারি সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লি’ তে ছিলো এ বছরের আয়োজন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হয় ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব। দুই দিনব্যাপী এই তীর্থোৎসব শেষ হয়েছে গতকাল শুক্রবার জীবন্ত ক্রুশের পথ ও পবিত্র মহাখ্রিষ্টযাগের মধ্যে দিয়ে।
এ উৎসবে শুধু ক্যাথলিক খ্রিষ্টানই নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রতিবছর অংশ নেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস র্যান্ডেল।
এসময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান ও পুলিশ সুপার (এসপি) আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজক কমিটি জানায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে এই তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়। প্রধান পৌরহিত্যকারী ন্যুনসিওকে বরণ, তীর্থের জুবিলী উদজাপন, পুর্নমিলন সংস্কার, পবিত্র খিষ্টযাগ, জপমালার প্রার্থন, আলোক শোভাযাত্রা, সাক্রান্তের আরাধনা, নিরাময় অনুষ্ঠান, ব্যক্তিগত প্রার্থনা ও নিশি জাগরণের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়। শুক্রবার সকাল আটটায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম এবং সকাল ১০টায় মহাখ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবারের তীর্থোৎসব।
১৯৪২ সালে ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারি সাধু লিওর ধর্মপল্লি। ১৯৯৮ সালে প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গোমেজ স্থানটিকে ‘ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে আসছে এই ধর্মীয় উৎসব। এ বছর প্রায় ৩০-৪০ হাজার দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক তীর্থযাত্রী অংশ নিয়েছেন উৎসবে। সার্বিকভাবে উৎসব এলাকা ছিল আলো, প্রার্থনা ও শান্তির আবহে মোড়ানো।
রংপুর থেকে আসা তীর্থযাত্রী রিপন আরেং বলেন, “সবাই যখন মোমবাতি প্রজ্বলন করে প্রার্থনা করতে করতে পাহাড়ি আকাঁবাঁকা পথ অতিক্রম করছিলেন, তখন পাহাড় আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিল। তীর্থে আমরা মা মারিয়ার কাছে প্রার্থনা করতে এসেছি।”
চট্টগ্রাম থেকে আসা রীতা নকরেক বলেন, “পুত্রবধূর সন্তান হচ্ছিল না। গতবার মানত করার পর এবার নাতী পেয়েছি। তাই এবার নাতীকে নিয়ে আবার এসেছি।”
গাজীপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে আসা শিক্ষার্থী ঝর্ণা আরেং বলেন, “মারিয়ার কাছে এলে মনে একধরনের শান্তি পাই। আমরা প্রার্থনা করি যেন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। প্রতিবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি।”
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা এই তীর্থযাত্রাকে নিরাপদ ও ঝুঁকি মুক্ত রাখতে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রেখেছি। পাঁচ শতাধিক পুলিশ পোশাকে এবং সাদা পোশাকে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও সেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। যে কোন ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।”
শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “উৎসবটি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ব্যবস্থাপনায়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন দীর্ঘ ১৫ দিন ধরে সহযোগীতা করে আসছে। এবারের তীর্থযাত্রায় সারাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে তাদের উৎসব পালন করেছে।”
ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বিশপ পনেন পল কুবি সিএসসি বলেন, “এ উৎসবের মাধ্যমে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়েছে। ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ তীর্থে দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষ সমবেত হয়েছেন। তাঁরা দুই দিনব্যাপী তীর্থে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। মা ফাতেমা রানীর কাছে দেশ ও মানবজাতির কল্যাণে প্রার্থনা শেষে যার যার বাড়ি ফিরে যাবেন।”
ঢাকা/তারিকুল/এস