Prothomalo:
2025-06-09@16:15:28 GMT

গলায় হাড় আটকালে কী করবেন?

Published: 9th, June 2025 GMT

যেকোনো বয়সেই ঘটতে পারে এমন দুর্ঘটনা। তবে শিশু এবং বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা বেশি। দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্ক থাকতে হবে সবাইকেই। আকস্মিক দুর্ঘটনায় কী করতে হবে, সে সম্পর্কেও জেনে রাখা উচিত। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নাক-কান-গলা ও হেড-নেক সার্জারি বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ডা.

এ এফ মহিউদ্দিন খান

সচেতন থাকুন আনন্দের সময়ও

প্রিয়জনদের সঙ্গে বসে খাওয়াদাওয়ার সময় আলাপচারিতা হয়েই থাকে; তবে খাবার মুখে নিয়ে কথা বলা কখনোই উচিত নয়। তাতে গলায় মাংসের হাড় কিংবা মাছের কাঁটার মতো কোনো জিনিস আটকে যেতে পারে। এমনকি শ্বাসনালিতেও চলে যেতে পারে যেকোনো খাবারের ক্ষুদ্র অংশ। ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। তাই কথা বলতে হলে ওই মুহূর্তে মুখে কোনো খাবার রাখবেন না। খাবার খাওয়ার সময় তাড়াহুড়া করলেও এমন কিছু ঘটে যেতে পারে। তাই ধীরেসুস্থে মনোযোগ দিয়ে খাবেন। একবারে অনেকটা খাবার মুখে ঢোকাবেন না। বিশেষভাবে সতর্ক থাকুন হাড় চিবানোর সময়। আনন্দ, আড্ডা, হাসির জন্য তো বাকিটা সময় আছেই। শিশু এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের খাবার দেওয়ার সময় ভালোভাবে দেখে দিন, তাতে কোনো ছোটখাট হাড় রয়েছে কি না। তেহারির মতো খাবার নিজের হাতের আঙুল দিয়ে পরখ করে দেখুন। ছোট হাড় থাকলে অবশ্যই তা সরিয়ে দিন।

তবু যদি হাড় আটকে যায়

গলনালিতে হাড় আটকে গেলে ব্যথা হবে কিংবা খোঁচা লাগার মতো একটা অনুভূতি হবে। ঢোক গেলার সময় এই কষ্ট বাড়বে। খেতে অসুবিধা হবে। একটু বড় আকারের হাড় আটকে গেলে বমিও হতে পারে। গলায় হাড় আটকে গেছে মনে হলে দ্রুততম সময়ে একজন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। তা সম্ভব না হলে নিকটস্থ যেকোনো হাসপাতালে চলে যেতে হবে। অবশ্যই মনে রাখবেন, বাড়িতে নিজেরা নিজেরা গলার হাড় নামানোর কোনো চেষ্টা করা যাবে না। ভাতের দলা, পাকা কলা, পানি—কোনো কিছুই গলায় আটকে থাকা হাড় নামাতে পারে না। নিজেরা চেষ্টা করতে গেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়তে পারে। তাই হাসপাতালে নিয়ে হাড়টি বের করতেই হবে। গলনালিতে হাড় রয়ে যাওয়া যেমন কষ্টদায়ক, তেমনি গলনালির কোনো অংশ চিরে হাড়টি আটকে থাকলে সেখানে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকিও সৃষ্টি হয়।

খাওয়ার সময় শ্বাস আটকে এলে

যেকোনো খাবারের ক্ষুদ্র অংশ শ্বাসনালিতে আটকে গেলে শ্বাস আটকে আসতে পারে। এটি একটি জরুরি পরিস্থিতি। খাওয়ার সময় কারও শ্বাস আটকে এলে তিনি ওই মুহূর্তে ঠিকভাবে কথাও বলতে পারেন না। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর কাছে থাকা মানুষটিই তাঁর প্রাণ বাঁচাতে পারেন। এক্ষেত্রে সাহায্যকারীকে চলে যেতে হবে ওই ব্যক্তির পেছনে। সাহায্যকারীকে নিজের দুহাত একসঙ্গে করে ওই ব্যক্তির পেটের ওপরের অংশে জোরে চাপ দিতে হবে। পেটের ওপর এভাবে চাপ পড়ায় খাবারের ওই অংশ বেরিয়ে আসতে পারে মুখ দিয়ে। তাতে কাজ না হলে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে হবে দ্রুত। তবে খাবারের অংশটি বেরিয়ে না আসা পর্যন্ত কিংবা হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে না পৌঁছা পর্যন্ত এভাবে চাপ দিয়ে যেতে হবে। একেবারে ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে অবশ্য পেটের ওপর চাপ দিতে নেই। বরং তাদেরকে নিজের একটি হাতের ওপর উপুড় করে শুইয়ে পিঠে জোরে ধাক্কা দিতে হয়। তবে রোগীর বয়স যতই হোক, তিনি যদি জ্ঞান হারান, দ্রুততম সময়ে সিপিআর (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) শুরু করতে হবে। তাই সিপিআর দেওয়ার নিয়ম জানা থাকা উচিত প্রতিটি মানুষেরই।

আরও পড়ুনতামিম ইকবালের জীবন রক্ষা করেছে সিপিআর, এটি কেন সবার জেনে রাখা জরুরি, কোথায় শিখবেন ২৬ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ড় আটক দ র ঘটন র ওপর স আটক

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল গার্ড’ কী, কখন এই বাহিনী মোতায়েন করা হয়

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশটির লস অ্যাঞ্জেলেস শহর ও আশপাশের এলাকা। গত শুক্রবার থেকে সেখানে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল রোববার লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯২ সালের পর থেকে এই প্রথম ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করলেন দেশটির কোনো প্রেসিডেন্ট। সে বছর লস অ্যাঞ্জেলেসে শুরু হওয়া দাঙ্গা মোকাবিলায় ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছিল। রডনি কিং নামের একজন কৃষ্ণাঙ্গ গাড়িচালককে মারধরের অভিযোগ থেকে চার শেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তাকে খালাস দেওয়ার পর ওই দাঙ্গা শুরু হয়েছিল।

ন্যাশনাল গার্ড কী

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর একটি অংশ ন্যাশনাল গার্ড। কোনো অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ও প্রেসিডেন্ট—দুজনের অধীনেই কাজ করে এই বাহিনী। ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা মার্কিন সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর রিজার্ভ (সংরক্ষিত) সেনাদের অংশ। খণ্ডকালীন ভিত্তিতে কাজ করেন তাঁরা। যুদ্ধ বা সহায়তা অভিযানের জন্য তাঁদের বিদেশে মোতায়েন করা হতে পারে। তবে সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করে ন্যাশনাল গার্ড।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্য ও অঞ্চলের (ওয়াশিংটন ডিসিসহ) নিজস্ব ন্যাশনাল গার্ড বাহিনী রয়েছে। যেকোনো সময় যেকোনো অঙ্গরাজ্যের গভর্নর বা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দিতে পারেন। এই বৈশিষ্ট্যটি মার্কিন সামরিক বাহিনীর অন্যান্য শাখা থেকে ন্যাশনাল গার্ডকে আলাদা করে তুলেছে।

আরও পড়ুনলস অ্যাঞ্জেলেসে ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনকে কেন বিপজ্জনক মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৩ ঘণ্টা আগে

আগে যেসব অঙ্গরাজ্যে মোতায়েন করা হয়েছে

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় একাধিকবার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। করোনা মহামারির সময় কিছু অঙ্গরাজ্যে মাস্ক তৈরি করা, বিভিন্ন স্থাপনা জীবাণুমুক্ত করা এবং করোনা টেস্ট কিট তৈরিসহ নানা কাজে সহায়তা করেছিলেন এই বাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়া ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি ক্যাপিটল ভবনে দাঙ্গার পর নিরাপত্তার জন্য ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের পাঠিয়েছিল কয়েকটি অঙ্গরাজ্য।

কেন্দ্রীয়ভাবে মোতায়েনের ঘটনা

যুক্তরাষ্ট্রে কোনো অঙ্গরাজ্যের গভর্নরের অনুরোধ ছাড়া প্রেসিডেন্টের নির্দেশে সরাসরি ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের ঘটনা বিরল। গতকাল রোববার ট্রাম্প ঠিক এই কাজটিই করেছেন।

১৮৬১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি অঙ্গরাজ্য বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি আলাদা সরকার গঠন করে। তখন ওই অঙ্গরাজ্যগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সেনা মোতায়েন করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন। তবে বিংশ শতাব্দীর আগপর্যন্ত বর্তমান রূপ পায়নি ন্যাশনাল গার্ড।

লিংকনের পর ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্ট ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেননি। সে বছর আরকানস অঙ্গরাজ্যে একটি স্কুলে বর্ণবৈষম্য অবসানের সময় জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছিল।

ন্যাশনাল গার্ডের তথ্যানুসারে, ১৯৬৭ সালে ডেট্রয়েট দাঙ্গার সময় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বাহিনীটির সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছিল। এ ছাড়া ১৯৬৮ সালে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে হত্যার পর এবং ১৯৭০ সালে নিউইয়র্কে ডাক পরিষেবা ধর্মঘটের সময় ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের মাঠে নামানো হয়েছিল।

আরও পড়ুনগুজব থেকেই কি লস অ্যাঞ্জেলেসে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ৪ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ