খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
Published: 9th, June 2025 GMT
খুলনায় মাহফুজা আফরিন (২৩) নামের এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে নগরের লবণচরা থানার জিন্নাপাড়া এলাকার নিজ বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
মাহফুজা আফরিন একই এলাকার মাহবুবুর রহমানের মেয়ে। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ১১টার দিকে নিজ কক্ষে ঘুমাতে গিয়েছিলেন মাহফুজা। আজ সকালে তাঁকে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যেরা জানালায় উঁকি দিয়ে দেখেন, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছেন মাহফুজা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে বলে জানান লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে মাহফুজা একটি নোট লিখে গেছেন বলে দাবি করেছেন তাঁর সহপাঠীরা। এতে লেখা আছে, ‘মিথ্যা বলতে বলতে জীবনের এমন একটা পর্যায়ে আছি যে সুইসাইড নোটেও মিথ্যা লিখে যাওয়া শ্রেয় মনে হয়। পাছে কেউ যদি সেটা পড়ে হাসে। খারাপ লাগবে তো নাকি।’
এর আগে ৫ মে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসা থেকে ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌকির আহমেদের (২৩) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
খুলনা মহানগরীর লবণচরার বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার ঘের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ (২৪) হত্যা মামলার বিচার কাজ এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে আসামিরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে বাদীর অপর ছেলেকে হত্যার ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে।
এ অবস্থায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা এবং আসামিদের অপতৎপরতা থেকে রক্ষা করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন নিহত বিদ্যুতের মা জাহানারা বেগম। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আরো পড়ুন:
কেএমপির ৮ থানার ওসি রদবদল
জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: ইইউ রাষ্ট্রদূত
লিখিত বক্তব্যে জাহানারা বেগম বলেন, “২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ছেলে মো. আলমগীর হোসেন ওরফে বিদ্যুৎকে (২৪) নগরীর খানজাহান আলী (র.) সেতু এলাকায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর ৭ ডিসেম্বর আমি বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা করি (মামল নং- ০৩)। মামলাটি বর্তমানে খুলনা মহানগর দায়রা জজ (মামলা নং: ৪৪৯/১৫) বিচারাধীন আছে।”
“মামলায় লবণচরা বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার নাজিম খলিফার দুই ছেলে আরমান খলিফা ও আরিফ খলিফা, লবণচরা মোহাম্মদীয়া পাড়া মসজিদ এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে হারুন হাওলাদার, লবণচরা ইব্রাহীমিয়া মাদরাসা রোড এলাকার হামিদ মিস্ত্রীর ছেলে মো. সিরাজ এবং লবণচরা মোক্তার হোসেন রোড এলাকার হযরত আলী ফকিরের ছেলে বাদল ফকিরকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই সব আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলাও রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।
জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে হত্যা করেও সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি। উপরন্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা এখন মামলা তুলে নিতে আমি ও আমার এক মাত্র সন্তান এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবননাশসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার সাধারণ ডায়রি (জিডি) করার ফলে হত্যাকারী-সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তারা আমি ও আমার বড় ছেলেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”
তিনি আরো বলেন, “হত্যাকারী-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুলনা ও লবণচরা থানায় চারটি সাধারণ ডায়রি করেছি। সর্বশেষ গত ৩ মার্চও আমি লবণচরা থানায় জিডি করি। কারণ ২ মার্চ দুপুরে মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আরমান তার ভাই আরিফ এবং অপর আসামি জুয়েল শেখ, হারুন হাওলাদার, সিরাজ ও বাদল ফকিরসহ আরো অনেকে আমার বাসার সামনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমাকে ও আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লবকেও হত্যা করবেন বলেও হুমকি দেয়। এ ছাড়া, একই ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে আমি ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ও ২ মে খুলনা থানায় এবং একই বছরের ৪ মে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লবণচরা থানায় সাধারণ ডায়রি করি।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ