ভারতে যাওয়ার সময় গোপালগঞ্জ জেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহাবুদ্দিন আজমকে আটক করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয়।

জি এম শাহাবুদ্দিন আজম গোপালগঞ্জ জেলা সদরের, বীণাপানি গ্রামের মৃত মইনদ্দিনের ছেলে। তার পাসপোর্ট নম্বর-B00073948।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের অফিসার ইনচার্জ ইলিয়াস হোসেন মুন্সি জানান, পূর্ব থেকে ইমিগ্রেশনে খবর ছিল গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহাবুদ্দিন আজম ভারতে যেতে পারে। সেই মোতাবেক বহির্গমন বিভাগের সকল অফিসারকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সকাল ১১টার দিকে তার পাসপোর্টটি ডেস্ক এ জমা দিলে যাচাই-বাছাই করে তাকে আটক করা হয়।

তার নামে যাত্রাবাড়ী ও গোপালগঞ্জ সদর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.

রাসেল মিয়া বলেন, ইমিগ্রেশনে আটক আসামি আমাদের কাছে হস্তান্তরের পর যেহেতু গোপালগঞ্জ থানায় তার নামে মামলা রয়েছে। সেহেতু তাকে গোপালগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা করা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ন ত আটক গ প লগঞ জ জ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, কাটা হলো চুল

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাংস চুরির অভিযোগে রিনা খাতুন (৪০) নামে এক নারীকে গাছে বেঁধে মারধর করা হয়েছে। এসময় কেটে দেওয়া হয়েছে তার মাথার চুল। এছাড়া তার বাড়িতে ভাঙচুর এবং গরু-ছাগল ও স্বর্ণালংকার লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুরে সোমবার (৯ জুন) রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। রিনা বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে। ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ভাইরাল হয়। 

পুলিশ ও এলাকাবাসীর দাবি, সোমবার বিকেলে রিনা খাতুন প্রতিবেশী রিপন আলীর ঘরে ঢুকে ফ্রিজ থেকে মাংস চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় তাকে ধরে বাড়ির উঠানে পেয়ারা গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করা হয়। এরপর রিনার স্বামী জাহাঙ্গীর এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।

রাত ৮টার দিকে স্থানীয় নজরুল, কাশেম, রিপনসহ কয়েকশ নারী-পুরুষ রিনার বাড়ি ভাঙচুর করে তাকে তুলে নিয়ে যায়। ফের রিপনের বাড়ি নিয়ে এসে তাকে ব্যাপক মারপিট ও মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। 

পরে সেখানে সালিশ বসান শিলাইদহ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শাহ আলম। সালিশে রিনার দুইটা গরু, একটা ছাগল ও স্বর্ণালংকারের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রিনা খাতুন। তার শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন। মাথার চুল কাটা। 

এসময় রিনা বলেন, “রিপন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। বিকেলে তাকে ডাকতে গেলে তার স্ত্রী মুক্তি খাতুন মাংস চুরির অপবাদ দিয়ে আমাকে বেঁধে রাখে। তারপর কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দেয়। এরপর রাতে গ্রামের লোকজন নিয়ে আমাকে বাড়ি থেকে তুলে এনে গাছে বেঁধে মারধর করে। এরমধ্যে মুক্তি ও পারভিন আমার চুল কেটে দেয়। বাড়িতে ভাঙচুর করে ও গরু-ছাগল, স্বর্ণালংকারসহ মালামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে। ভয়ে আমার স্বামী পালিয়েছেন। আমি এর বিচার চাই।” 

এদিকে রিনাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকশ মানুষ তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ আবার তার মাথার কাপড় সরিয়ে দিচ্ছে। তাকে নিয়ে আনন্দ-উল্লাস করছেন তারা। কেউ কেউ আবার এসব দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করছেন।

বিকেলে মির্জাপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রিপনের বাড়িতে পড়ে আছে দড়ি ও কাটা চুলের অংশ। আর রিনার ঘরের দরজায় তালা লাগানো। ভেতরে আসবাবপত্র ভাঙচুর। গোয়ালঘরে নেই গরু-ছাগল। 

রিপন বলেন, “রিনা ঘর থেকে ৪১ হাজার টাকা ও মাংস চুরি করে হাতেনাতে ধরা পড়েছিলেন। তিনি এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে চুরি করেন। সেই রাগে লোকজন ধরে তাকে মারধর করে চুল কেটেছে। আমরা এর সঙ্গে জড়িত নই।” 

অভিযুক্ত রিপনের স্ত্রী মুক্তি খাতুন বলেন, “আমি দড়ি দিয়ে বেঁধে শুধু একটা চড় মারি। কিন্তু কারা চুল কেটেছে তা জানি না।” 

অপর অভিযুক্ত কাশেম বলেন, “রিনা বিভিন্ন বাড়ি চুরি করেন। ক্ষতিপূরণ হিসেবে রাতে সালিশে তার গরু-ছাগল নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এসব বিষয়ে মেম্বরের সঙ্গে কথা বলুন।” 

গরু-ছাগল নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন শিলাইদহ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শাহ আলম। তিনি বলেন, “আমি শুধু ওই নারীকে তার স্বজনদের হাতে তুলে দিয়েছি। আর কী ঘটেছে তা জানি না। আইন হাতে তুলে নেওয়া ঠিক হয়নি।”

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান শেখ বলেন, “চুরির অভিযোগে এক নারীর চুল কেটে দেওয়া ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিম ও তার স্বজনদের পায়নি পুলিশ। তবে বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ভিকটিম। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দেয়নি কেউ। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/কাঞ্চন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ