মাদারীপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত শিক্ষার্থীদের বাড়িতে মৌসুমি ফল বিতরণ শেষে ফেরার পথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ওপর হামলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার চরপ্রসন্নদি গ্রামে বরিশাল গেটওয়ে হোটেলে এ ঘটনা ঘটে।

হামলায় আহত মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুর ইসলাম (২৩) ও কিরণ আক্তারকে (২৬) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহ, আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক দিয়া ইসলাম ও মিথিলা ফারজানা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যুগ্ম আহ্বায়ক দিয়া ইসলাম বলেন, আমিসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ২ নেত্রী হামলাকারীদের মারধরের শিকার হয়েছি।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার অখিল সরকার বলেন, আহত ২ ছাত্রনেতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । এ ছাড়া আহত ৩ শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

মুকসুদপুর উপজেলার সিন্ধিয়াঘাট পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো.

আলমগীর হোসেন জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের একটি দল জুলাই আন্দোলনে রাজৈর উপজেলার শহীদ ও আহত ৫ শিক্ষার্থীর বাড়িতে মৌসুমি ফল বিতরণ করে মাদারীপুর শহরে ফিরছিলেন। ফেরার পথে তাদের বহনকারী পিকআপভ্যান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার চরপ্রসন্নদি এলাকার বরিশাল গেটহোটেলে বিরতি নেয়। এ সময় ছাত্রদের লক্ষ্য করে কটূক্তি করেন মিজান পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাসের শ্রমিকরা। এর প্রতিবাদ করতে ওই বাসে ওঠেন কয়েকজন ছাত্র। এ সময় বাস শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। 

তিনি আরও বলেন, একপর্যায়ে বাস ও হোটেলের শ্রমিকরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে গ্রামের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। পরে আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এসআই আলমগীর বলেন, মুকসুদপুর খানার ওসি মোস্তফা কামাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চরপ্রসন্নদি গ্রামের আজিজুল শেখের ছেলে ইব্রাহিম শেখ সাগরকে (২৫) আটক করা হয়েছে পুলিশ। মুকসুদপুর থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। মিজান পরিবহন ও বরিশাল গেটওয়ে হোটেলের শ্রমিকরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। মিজান পরিবহন বাসটি ভাঙ্গা
থেকে বরিশাল যাচ্ছিল। পথে বাসটি ওই হোটেলে বিরতি নেয় বলে জানান তিনি।


 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ র উপজ ল র বর শ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ