ফরিদপুরে বদ্ধঘরে মায়ের মরদেহ, মেয়েকে উদ্ধার করল পুলিশ
Published: 11th, June 2025 GMT
ফরিদপুর শহরের একটি ভাড়া বাসা থেকে বদ্ধ অবস্থায় রিনা বেগম (৩০) নামে এক নারীর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় তার ৫ বছর বয়সী মেয়েকে ওই বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে শহরের রঘুনন্দনপুর এলাকার হাবিব ভিলার তিনতলা ভবনের নিচতলা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। রিনা বেগম জেলা সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের আজহার মন্ডলের ডাঙ্গী এলাকার মান্নান বেপারীর মেয়ে। তার ৫ বছরের মেয়ে ও ৮ বছরের ছেলে রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ওই বাসার বাথরুমের সামনে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে ছিলেন রিনা বেগম। পাশের কক্ষে বিছানায় অচেতন হয়ে পড়েছিল তার কন্যাশিশু। সেখানে একাধিক ওষুধ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে এবং তরকারি ও ভাত মাখা খাবারের প্লেটও পড়ে রয়েছে। ভেতর থেকে বাসাটির দরজায় ছিটকিনি দেওয়া ছিল। ঘরের ভেতর থেকে পানি বেয়ে বাইরে চলে এসেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বাসার জানালা দিয়ে বিষয়টি দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশের একাধিক টিম এসে দরজা ভেঙে রিনা বেগমকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মেয়েশিশুটি সুস্থ রয়েছে।
বাড়ির মালিক হাবিবুর রহমান জানান, চলতি মাসে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসাটি ভাড়া নেন মনিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। মাত্র এক সপ্তাহ আগে ওই নারী উঠেছিলেন। আজ সকালে ঘটনাটি শুনে মনিরুলকে ফোন দিয়ে ঘটনাটি জানালে তিনি আর আসেননি, পরবর্তী সময়ে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে পাশের ঈশাণগোপালপুর ইউনিয়নের শহীদ মোল্যার সঙ্গে বিয়ে হয় রিনার। বিয়ের দুই বছর পর স্বামী শহীদ সৌদি আরবে পাড়ি জমান। এক পর্যায়ে রিনাকেও নিয়ে যান। কয়েক বছর আগে রিনা দেশে চলে আসেন। এর মধ্যে এক বছর আগে ঈশাণগোপালপুর ইউনিয়নের দয়ারামপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের (৪০) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান রিনা। এ নিয়ে স্বামী শহীদের সঙ্গে তার মনোমালিন্য হয়। পরে শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাজ শুরু করেন রিনা। তার সঙ্গে মেয়ে থাকতো আর ছেলে থাকতো নানা-নানির কাছে।
রিনার চাচা আব্দুস সালাম বেপারী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ৬ মাস আগে শহীদের সঙ্গে রিনার বিচ্ছেদ হয়। এরপর মনিরুলকে বিয়ে করে। আজ জানতে পেরেছি, রিনা মারা গেছে। তবে কী কারণে, কীভাবে মারা গেছে জানি না।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মরদ হ র মরদ হ মন র ল
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে দুই দফায় সাড়ে ১১ ভরি স্বর্ণ চুরি করে ধরা পড়ল ২ শিক্ষর্থী
সিদ্ধিরগঞ্জে কোচিং করার পরিচয়ের সুবাদে বন্ধুর বাসা থেকে ৪ মাস আগে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ টাকা মূল্যের ৯ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চুরি করেন ২ শিক্ষার্থী।
দ্বিতীয়বার প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকা দামের আড়াই ভরি স্বর্ণ ও ২২ ভরি রূপা চুরি করে তারা ধরা পড়েন বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে। এ ঘটনা ঘটে গোদনাইল ধনকুন্ডা এলাকায় মো. আব্দুল মালেকের বাড়িতে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম।
গ্রেপ্তাররা হলেন, সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকার সিরাজ মোল্লার বাড়ির ভাড়াটিয়া আরিফের ছেলে মো. রাফিন (১৯) ও হাসানের বাড়ির ভাড়াটিয়া রবিউলের ছেলে হাসিবুর রহমান(১৯)। তারা দুজনই শিক্ষার্থী। রাফিন নবম শ্রেণি আর হাসিবুর রহমান এবছর এসএসসি পাস করেছে।
চোরাই স্বর্ণালংকার কিনার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরো ২ জনকে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম।
এঘটনায় বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগী আব্দুল মালেকের মেয়ে দেলোয়ারা বেগম বেলী (৪৫) বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাদীর ভাতিজা শেখ শাহরিয়ার হাসিব (১৪) গোদনাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্র। কোচিং করার সুবাদে রাফিন ও হাসিবুর রহমানের সঙ্গে তার বন্ধত্ব হয়। তারা সবাই মিলে বাদীর পিত্রালয়ে গ্রুপ স্টাডি করতো।
গত ২৬ মার্চ বাসা থেকে নগদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ও ৯ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি হয়। যার কোন হদিস মিলছিলনা। গত ২৭ জুলাই বিকেল ৫ টার দিকে গ্রুপ স্ট্যাডি করার সময় রাফিন ও হাসিবুর রহমান কৌশলে শাহরিয়ার হাসিবকে বাড়ির বাইরে পাঠিয়ে আড়াই ভরি স্বর্ণ ও ২২ ভরি রূপার অলংকার ( যার মূল্য প্রায় ৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা) চুরি করে চলে যাওয়ার সময় শাহরিয়ার হাসিব দেখে ফেলে।
তখন তারা শাহরিয়ারকে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দিয়ে চলে যায়। পরে শাহরিয়ার চুরির ঘটনা প্রকাশ করলে স্থানীরা অভিযুক্ত দু’শিক্ষার্থীকে ডেকে এনে জানতে চাইলে তারা আগে ও পরে চুরির কথা স্বীকার করে। তখন স্থানীয়রা তাদেরকে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, চোর দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, তারা কার মাধ্যমে কার কাছে চোরাই স্বর্ণালংকার বিক্রি করেছে তাদের নাম বলেছে।
তাদের দেওয়া তথ্য মতে বিকেল পর্যন্ত আদমজী সোনামিয়া বাজারের একটি জুয়েলারী দোকানদার ও গোদনাইল ২ নং ঢাকেম্বরী এলাকার একজন মেকানিক্সকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৬ জনের নামে চুরির মামলা হয়েছে। এজাহার নামীয় অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।