রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে অডিটোরিয়াম ভাঙচুর: দর্শনার্থী প্রবেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ
Published: 11th, June 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারিবাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনির্দিষ্টকালের জন্য দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে শত শত দর্শনার্থী ফিরে যাচ্ছেন। গত ৮ জুন ঈদের ছুটিতে কাচারিবাড়িতে ঘুরতে আসা এক দর্শনার্থীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার পর ১০ জুন কিছু বিক্ষুব্ধ জনতা অফিস ও অডিটোরিয়ামে ভাঙচুর করে। পরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কাছারিবাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অনিবার্য কারণবশত দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সরাসরি তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
এবিষয়ে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বুধবার প্রাথমিক তদন্তে আসা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) শেখ কামাল হোসেন। তিনি জানান, রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে বুধবার শাহজাদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
জানা যায়, গত ৮ জুন একজন দর্শনার্থী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কাছারিবাড়ি পরিদর্শনে গেলে পার্কিং ফি নিয়ে গেটের এক কর্মচারীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। অভিযোগ রয়েছে, ওই দর্শনার্থীকে অডিটোরিয়ামের ভিতরে আটকিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয়রা গত ১০ জুন মঙ্গলবার শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। পরে উত্তেজিত জনতা কাছারিবাড়িতে প্রবেশ করে অডিটোরিয়ামের দরজা, জানালা ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং শাহজাদপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.
এ বিষয়ে মঙ্গলবার কাছারিবাড়ি ভাঙচুরের সময় উপস্থিত থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, কাছারিবাড়িতে হামলার ঘটনা শোনা মাত্র আমি চলে আসি এবং দেখতে পাই তারা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাচ্ছে । তাদেরকে কাছারিবাড়ির বাহিরে বের করে দেই। এই ঘটনার পর আর কোনো আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়নি এবং আর হওয়ার সম্ভাবনাও নেই।
শাহজাদপুর থানার ওসি মো. আছলাম আলী জানান, মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ র রহম ন প রব শ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
গলাচিপায় জিওপি-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ২০, নুর অবরুদ্ধ
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চর বিশ্বাস এলাকায় গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি) ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় গণ অধিকার পরিষদের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা চর বিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয় ভাংচুর করে। এতে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের (ভিপি নুর) ছোটভাই আমিনুল ইসলাম নুরসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০জন আহত হয়েছে।
এদের মধ্যে গুরুতর আহতরা হচ্ছেন, আমিনুল ইসলাম নুর, কামাল খলিফা, ইলিয়াস হোসেন, রবি মোল্লা, মারুফ হোসেন, শান্ত, শুভ, লোকমান হোসেন, মাকসুদ খান, মফিজ উদ্দিন, আব্দুর রাজ্জাক, সোহেল রানা।
এ ঘটনায় ওই এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ফের সংঘর্ষের আশঙ্কায় উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘটিত হচ্ছে। এ ঘটনার জন্য স্থানীয় গণ অধিকার পরিষদ ও বিএনপির নেতৃবৃন্দ একে-অপরকে দায়ী করেছেন।
এদিকে ঘটনার সময় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে গলাচিপা উপজেলার বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের পাতাবুনিয়া এলাকায় দলীয় গণসংযোগে ছিলেন। সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়লে বকুলবাড়িয়া ও চিকনিকান্দি এলাকার বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা নুরুল হক নুরকে পাতাবুনিয়া এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে অবরুদ্ধ করে রাখে।
ছাত্র অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আবু নাঈম জানান, এলাকার ব্যবসায়ীদের নিয়ে নুরুল হক নুরের ছোটভাই আমিনুল ইসলাম নুর চর বিশ্বাস বাজারে মতবিনিময় সভা করছিল। এ সময় স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা সেখানে অতর্কিত হামলা চালায় এবং নুরুল হক নুরের ছোটভাই আমিনুল ইসলাম নুরকে মারধর করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার ক্ষুব্ধ লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে বিএনপি কার্যালয় ভাংচুর করে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীরা অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করার জন্য সংঘবদ্ধ হচ্ছে এবং বিএনপির ক্যাডাররা ত্রাস সৃষ্টি করছে। এতে এলাকার মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে পরেছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তায় গাছ ফেলে নুরুল হক নুরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
এদিকে গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন খান বলেন, ‘চর বিশ্বাসে বিএনপির নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সভা করছিলেন। এ সময় ভিপি নুরের ছোটভাই আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে তারা সেখানে হামলা চালায় এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের মারধর করেন। এতে তাদের ১০-১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে গলাচিপা থানার ওসি মো. আসাদুর রহমান জানান, খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৫-৭ আহত হয়েছে খবর পাওয়া গেছে। সেখানকার পরিস্থিতি এখন শান্ত।