প্যারোলে মুক্তি, মায়ের মরদেহের পাশে রুপা-শাকিল
Published: 12th, June 2025 GMT
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে শেষবারের মতো মাকে দেখলেন সাংবাদিক ফারজানা রুপা, দিলেন শেষ বিদায়।
সাংবাদিক দম্পতি শাকিল আহমেদ এবং তার স্ত্রী ফারজানা রুপা বুধবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় প্যারোলে মুক্তি পেয়ে রাত ৯টার দিকে ময়মনসিংহের সদর উপজেলার ধারিয়াকান্দা গ্রামে পৌঁছান। এসময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর আগে মঙ্গলবার (১০ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত সাংবাদিক ফারজানা রুপার মা হোসনে আরা বেগম (৮০) মারা যান।
বুধবার বাদ আছর বাড়িতে হোসনে আরা বেগমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের হত্যা মামলায় পৃথক কারাগারে বন্দি শাকিল-রুপা দম্পতিকে জানাজায় যোগ দেওয়ার জন্য সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ উপপরিদর্শক মো.
তিনি বলেন, “একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান বার্তা সম্পাদক শাকিল আহমেদ কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং তার স্ত্রী সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ও উপস্থাপক ফারজানা রুপা গাজীপুরের কাশিমপুর কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন।”
সাংবাদিক ফারজানা রুপার ভাগ্নে নবনীল সরকার বলেন, “তারা প্যারোলে মুক্তি পেয়ে রাত ৯টার দিকে বাড়িতে আসেন। এসময় স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।”
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট এই সাংবাদিক দম্পত্তিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা/মিলন/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস