ভারতের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিধ্বস্ত হয়েছে। এই দুর্ঘটনাটি ভারতের ইতিহাসে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনাগুলোর কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। নিচে ভারতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিমান দুর্ঘটনা তুলে ধরা হলো–

নভেম্বর ১৯৯৬
১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর হরিয়ানার চরখি দাদরিতে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ আকাশপথের সংঘর্ষ ঘটে। সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৪৭ এবং কাজাখস্তান এয়ারলাইন্সের ইলিউশিন আইআই-৭৬ প্লেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই প্লেনে থাকা ৩৪৯ জনের সবাই নিহত হন। 

জানুয়ারি ১৯৭৮
১৯৭৮ সালের ১ জানুয়ারি, মুম্বাই থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ৮৫৫ যান্ত্রিক ত্রুটি এবং পাইলটের দিক পরিবর্তনের কারণে আরব সাগরে ডুবে যায়। বিমানে থাকা ২১৩ যাত্রীর সবাই মারা যান।

মে ২০১০
২০১০ সালের ২২ মে দুবাই থেকে আসা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ফ্লাইট ৮১২ বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে ছাড়িয়ে একটি খাদে পড়ে যায়। ১৬৬ আরোহীর মধ্যে ১৫৮ জনই নিহত হন। 

জুন ১৯৮৫
১৯৮৫ সালের ২৩ জুন এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৮২ কানাডা থেকে ভারত যাওয়ার পথে আয়ারল্যান্ড উপকূলে মাঝ আকাশে বিস্ফোরণে উড়ে যায়। বিমানে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পাতা বোমা ছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। এ ঘটনায় ৩২৯ জনের মৃত্যু হয়, যা বিশ্ব ইতিহাসে প্লেনে অন্যতম ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা।
জুলাই ২০০০
কলকাতা থেকে রাজধানী নয়াদিল্লিগামী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা অ্যালায়েন্স এয়ারের একটি ফ্লাইট ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় শহর পাটনার আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫০ জনেরও বেশি প্রাণ হারান।

আগস্ট ২০২০
২০২০ সালের আগস্টে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একটি ফ্লাইট কেরালার কোঝিকোড় বিমানবন্দরে বৃষ্টিভেজা রানওয়েতে অবতরণের সময় ছিটকে গিয়ে দুই ভাগ হয়ে যায়। এতে অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত খারাপ এবং দৃষ্টিসীমাও ছিল কম। খবর রয়টার্সের।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ম ন দ র ঘটন দ র ঘটন ফ ল ইট

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বে ইসলাম ধর্মের অনুসারী সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে

সারা বিশ্বে গত এক দশকে ইসলাম ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা অন্য সব ধর্মের সম্মিলিত বৃদ্ধির চেয়েও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ইসলাম এখন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম। পিউ রিসার্চ সেন্টারের নতুন এক গবষেণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত—এই এক দশকের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়েছে।

গত সোমবার পিউ রিসার্চের ‘গ্লোবাল রিলিজিয়াস ল্যান্ডস্কেপ’ শীর্ষক এই গবেষণায় বলা হয়েছে, ইসলাম ধর্মে এই প্রবৃদ্ধি মূলত প্রাকৃতিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফল। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে ধর্মান্তরের ভূমিকা খুবই সামান্য।

গবেষণায় বলা হয়েছে, মুসলিমদের সন্তানের সংখ্যা অন্য সব বড় ধর্মের অনুসারীদের তুলনায় বেশি এবং মুসলিমরা তুলনামূলকভাবে কম বয়সী।

গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, খ্রিষ্টধর্ম এখনো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্ম। বিশ্বের মোট প্রায় ২৩০ কোটি মানুষ এই ধর্মের অনুসারী। তবে ইসলাম ও খ্রিষ্টধর্মের মধ্যে ব্যবধান দিন দিন কমছে।

২০১৫ থেকে ২০২০ সালের তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, গড়ে একজন মুসলিম নারী তাঁর জীবনে ২.৯টি সন্তান জন্ম দেন। যেখানে একজন অমুসলিম নারীর গড় সন্তান সংখ্যা ২.২।

গবেষণায় ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বের ধর্মীয় অনুপাতে কী পরিবর্তন এসেছে, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, খ্রিষ্টধর্ম এখনো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্ম। বিশ্বের মোট প্রায় ২৩০ কোটি মানুষ এই ধর্মের অনুসারী। তবে ইসলাম ও খ্রিষ্টধর্মের মধ্যে ব্যবধান দিন দিন কমছে।

গবেষণার তথ্যমতে, ২০১০ সালের পর থেকে বিশ্বে খ্রিষ্টান জনসংখ্যা প্রায় ১ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে।

আঞ্চলিক পরিবর্তন

বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মূলত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতেই।

ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে বড় প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে কাজাখস্তান, বেনিন ও লেবাননে। অন্যদিকে ওমান ও তানজানিয়ায় মুসলিমদের অনুপাত কমে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয়ভাবে কোনো ধর্মের সঙ্গে সম্পর্ক নেই—এমন মানুষের সংখ্যা ২০১০ সালের তুলনায় ৯৭ শতাংশ বেড়েছে।

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ধর্মহীন মানুষ বাস করেন চীনে। সেখানে প্রায় ১৩০ কোটি মানুষ কোনো ধর্মের সঙ্গে যুক্ত নন। আরও পরিষ্কার করে বলতে গেলে, তাঁরা কোনো ধর্মের অনুসারী নন।

পিউ রিসার্চের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এখনো ৬০ শতাংশ দেশ ও অঞ্চলে খ্রিষ্টধর্মের অনুসারীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে খ্রিষ্টধর্মের অনুসারীর সংখ্যা ৪০টি দেশে অন্তত ৫ শতাংশ করে কমেছে এবং মাত্র একটি দেশে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি যখন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেছেন, সেখানে তিনজন খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগ করেছেন।

পিউ গবেষণা সংস্থা এই কমার একটি কারণ হিসেবে দেখিয়েছে, অনেক মানুষ খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগ করছেন। তাঁরা যেই ধর্মে বড় হয়েছেন, পরবর্তী সময়ে সেই ধর্ম পরিবর্তন করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করেছেন। এমন প্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যা গণনা করেই পিউ এই বিশ্লেষণ করেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি যখন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেছেন, সেখানে তিনজন খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগ করেছেন।

অন্যদিকে কোনো ধর্মের সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন মানুষের ক্ষেত্রে উল্টো চিত্র দেখা গেছে। প্রতি একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যেখানে ধর্মহীনতা ছেড়ে গেছেন, সেখানে তিনজন ব্যক্তি নতুন করে ধর্মহীন হয়েছেন।

গবেষণায় দেখা যায়, বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মেও ধর্ম গ্রহণের চেয়ে ধর্ম ত্যাগের হার বেশি ছিল।

ইসলামই একমাত্র ধর্ম, যেখানে যাঁরা ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন, তাঁদের সংখ্যা ধর্মত্যাগী ব্যক্তিদের চেয়ে বেশি।

ইসলামের প্রবৃদ্ধি

ইসলাম এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। প্রায় ২০০ কোটি মানুষ এই ধর্মের অনুসারী, যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ।

২০১০ সাল থেকে ইসলাম ধর্মে প্রায় ৩৫ কোটি নতুন মানুষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সংখ্যা খ্রিষ্টধর্মের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি এবং অন্যান্য সব ধর্মের সম্মিলিত বৃদ্ধির চেয়েও বেশি।

ইসলামই একমাত্র ধর্ম, যেখানে যাঁরা ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন, তাঁদের সংখ্যা ধর্মত্যাগী ব্যক্তিদের চেয়ে বেশি।

বিশ্বে কোনো ধর্মের বিশ্বাসী নন (ধর্মহীন), এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ২০০ কোটিতে পৌঁছেছে, যা ২০১০ সাল থেকে ২৭ কোটি বেড়েছে।

মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বে ধর্মহীন মানুষের সংখ্যাও অন্যান্য ধর্মের তুলনায় বেশি হারে বেড়েছে।

বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম হচ্ছে হিন্দু ধর্ম। এই ধর্মের অনুসারী ১২০ কোটি মানুষ। ২০১০ সাল থেকে এক দশকে এই ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা ১২ কোটি ৬০ লাখ বেড়েছে। তবে এই ধর্মের অনুপাত বিশ্ব জনসংখ্যায় অপরিবর্তিত আছে।

শিখ, বাহাইসহ অন্যান্য ধর্মে মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২ দশমিক ২ শতাংশ।

বৌদ্ধধর্ম একমাত্র প্রধান ধর্ম, যার অনুসারীর সংখ্যা ২০১০ সালের তুলনায় ২০২০ সালে কমে গেছে। এই সময়ের মধ্যে অনুসারী কমেছে ১ কোটি ৮৬ লাখ।

গত এক দশকে ইহুদি ধর্মের অনুসারী প্রায় ১০ লাখ বেড়েছে। এই ধর্মের অনুসারী বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ০ দশমিক ২ শতাংশেই রয়েছে।

বৌদ্ধধর্ম একমাত্র প্রধান ধর্ম, যার অনুসারীর সংখ্যা ২০১০ সালের তুলনায় ২০২০ সালে কমে গেছে। এই সময়ের মধ্যে অনুসারী কমেছে ১ কোটি ৮৬ লাখ। এই ধর্মের অনুসারীর হার ৫ শতাংশ থেকে কমে ৪ শতাংশ হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে এবার বোমা আতঙ্ক, থাইল্যান্ডে জরুরি অবতরণ
  • ভারতীয় উড়োজাহাজের ভয়াবহ ১০টি দুর্ঘটনা
  • গবেষণা প্রতিবেদন: বিশ্বে ইসলাম ধর্মের অনুসারী সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে
  • বিশ্বে ইসলাম ধর্মের অনুসারী সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে