‘আমাদের গর্ব, মিরাজ মিরাজ’, ‘ক্যাপ্টেন মিরাজ লং লিভ’- এভাবে মিছিলে কারো হাতে মিরাজের ছবি, কারো হাতে প্ল্যাকার্ড। বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট দলের নতুন অধিনায়ক হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজের নাম ঘোষণার পর তার নিজ জেলা খুলনায় উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে। 

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সিদ্ধান্ত প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাতে মিরাজের বাড়ির এলাকা খুলনার খালিশপুরে শুরু হয় আনন্দ-উচ্ছ্বাস। এলাকাবাসী তাৎক্ষণিক আনন্দ শোভাযাত্রা বের করেন। 

খালিশপুরের কাশিপুর ক্রিকেট একাডেমি থেকে মিরাজের ক্রিকেট-জীবনের যাত্রা শুরু সেখান থেকেই আনন্দ র‌্যালির আয়োজন করা হয়। র‌্যালিটি একাডেমি থেকে শুরু হয়ে খালিশপুর এলাকার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‍্যালিতে অংশ নেন স্থানীয় তরুণ ক্রিকেটার, ক্রীড়াপ্রেমী, এলাকাবাসী এবং নানা বয়সী ভক্ত-সমর্থকরা।

র‌্যালিজুড়ে স্লোগান ছিল, ‘আমাদের গর্ব, মিরাজ মিরাজ’, ‘ক্যাপ্টেন মিরাজ লং লিভ’। কারও হাতে মিরাজের ছবি, কেউ হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। পরে স্থানীয়রা একে অন্যকে মিষ্টিমুখ করিয়ে মিরাজের অধিনায়কত্বের খুশি ভাগাভাগি করেন।

মিরাজের শৈশবের কোচ আল মাহমুদ বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হিসেবে মিরাজ একদম যোগ্য একজন ক্রিকেটার। বয়স, অভিজ্ঞতা, ক্রিকেট বোধ সব মিলিয়ে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ওয়ানডে দল নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’

খালিশপুরের স্থানীয় ক্রিকেটার সজল বলেন, ‘মিরাজ আমাদের খুলনার অহংকার। সে শুধু মাঠেই নয়, মাঠের বাইরেও হাজার তরুণের প্রেরণা। সে অধিনায়ক হওয়ায় এখানকার ক্ষুদে ক্রিকেটাররা আরও অনুপ্রাণিত হবে। আমরা বিশ্বাস করি, খুলনা থেকে আরও মিরাজ তৈরি হবে।’

২০১৬ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকে জাতীয় দলে নিয়মিত মিরাজ। ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে এ অলরাউন্ডার এরই মধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেটের নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। নতুন দায়িত্বের শুরুতে মিরাজের প্রতি খুলনাবাসীর এমন ভালোবাসা শুধু তার অর্জনের স্বীকৃতিই নয়, বরং দেশের ক্রিকেট ভবিষ্যতেরও আশাবাদের এক প্রতিচ্ছবি।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ