ভারতের আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ২৯৪ জনের মৃত্যুর ঘটনার পর বোয়িং ৭৮৭ মডেলের সব বিমানের খুঁটিনাটি পরীক্ষা করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার।

দেশটির বিমান পরিবহন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গতকাল শুক্রবার এয়ার ইনডিয়াকে ‘জিইএনএক্স’ ইঞ্জিনওয়ালা বোয়িং ৭৮৭-৮/৯ উড়োজাহাজ পরিচালনা-সংক্রান্ত বাড়তি পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়গুলো যাচাই করে দেখতে বলেছে। উড়োজাহাজের নির্দিষ্ট উড্ডয়নসীমা মূল্যায়ন, ইলেকট্রনিক ইঞ্জিন নিয়ন্ত্রণ এবং ইঞ্জিন জ্বালানি-সংক্রান্ত পরীক্ষাগুলো করার নির্দেশ দিয়েছে।

আজ শনিবার দিল্লিতে এক ব্রিফিংয়ে ভারতের বিমান পরিবহনমন্ত্রী রাম মোহান নাইডু বলেছেন, বোয়িংয়ের ৭৮৭ উড়োজাহাজগুলোতে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছি। ভারতের বহরে বোয়িং ৭৮৭ মডেলের ৩৪টি উড়োজাহাজ রয়েছে। এসব বিমান পরীক্ষা করবে ভারত।

রাম মোহান নাইডু আরও বলেন, জরুরিভিত্তিতে ইতোমধ্যে আটটি উড়োজাহাজ পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। সবগুলোতেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, উড়োজাহাজগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তারা রয়েছেন কিনা, সেটি জানাননি মন্ত্রী। 

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী বোয়িংয়ের একটি ড্রিমলাইনার বিমান উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়। উড়োজাহাজের পাইলট-ক্রুসহ ২৪১ আরোহী নিহত হন। আর যে ভবনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয় তা স্থানীয় বিজে মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের একটি হোস্টেল। ওই সময় হোস্টেলের ক্যান্টিনে অনেকে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, এই দুর্ঘটনায় অন্তত ২৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গুজরাটের উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা বিধি চৌধুরী রয়টার্সকে বলেন, ‘দুর্ঘটনায় অন্তত ২৯৪ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কিছু শিক্ষার্থী রয়েছেন, যারা মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে ছিলেন।’

বিধ্বস্ত বিমানে গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি ছিলেন বলে স্থানীয় এক বিজেপি নেতা জানিয়েছেন। পুলিশ বলছে, রুপানি নিহত হয়েছেন। দ্য হিন্দু অনলাইন জানায়, এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ বিমানে ১৬৯ ভারতীয় ও ৫৩ ব্রিটিশ ছিলেন। এ ছাড়া সাত পর্তুগিজ ও এক কানাডার নাগরিক ছিলেন। আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পর বিমানটি আবাসিক এলাকা মেঘানিনগরের কাছে ধরপুরে বিধ্বস্ত হয়। তবে কী কারণে এটি বিধ্বস্ত হয়েছে, তা জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

বিমান ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার ২৪ জানায়, তারা বিমানটি থেকে সর্বশেষ সংকেত পেয়েছে ৬২৫ ফুট উঁচুতে থাকা অবস্থায়। এটা উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এ উচ্চতায় পৌঁছায়।

এনডিটিভি জানায়, বিমানটি দূরের যাত্রার উদ্দেশে রওনা করায় এতে পরিপূর্ণ জ্বালানি ছিল। বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিশাল আগুনের গোলক তৈরি হয়। বিধ্বস্তের পরপরই দুই ডজনের বেশি অ্যাম্বুলেন্স এসে ঘটনাস্থলে হাজির হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে ভবনের আশপাশে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

ভারতের ইতিহাসে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা এটি। বিমানের প্রধান পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত সাবহারওয়াল ও সহকারী পাইলট ছিলেন ক্লাইভ কুন্ডার। বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ জানতে বিমানের ‘ব্ল্যাক বক্স’-এর দিকে তাকিয়ে আছেন তদন্তকারীরা। ভারতের গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বিধ্বস্ত হওয়ার আগে বিমানের পাইলট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে (এটিসি) বিপদ বার্তা বা ‘মে ডে কল’ পাঠিয়েছিলেন। ফ্লাইটরাডার ২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, বিপদবার্তা পেয়ে এটিসি যোগাযোগেরও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যোগাযোগ করা যায়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ম ন দ র ঘটন ব ম ন পর দ র ঘটন পর ক ষ ব ম নট প ইলট

এছাড়াও পড়ুন:

সকালেই পড়ুন আলোচিত ৫ খবর

ছবি: খালেদ সরকার

সম্পর্কিত নিবন্ধ