বিমান দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ভারতের জঙ্গলে এবার একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে পাইলটসহ সাতজন নিহত হয়েছেন।

রোববার উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ ধাম থেকে গুপ্তকাশীর উদ্দেশ্যে যাত্রার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয় হেলিকপ্টারটি। মাত্র ১০ মিনিটের যাত্রার সময়, হেলিকপ্টারটি গৌরীকুণ্ড ও সোনপ্রয়াগের মাঝামাঝি বিধ্বস্ত হয়।

ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।

উত্তরাখণ্ড সিভিল অ্যাভিয়েশন ডিপার্টমেন্ট অথরিটি (ইউসিএডিএ) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার ভোর ৫টা ২০ মিনিটে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্ঘটনার সময় হেলিকপ্টারে পাইলটসহ সাত আরোহী ছিলেন। এর মধ্যে ছয়জনই তীর্থযাত্রী, এদের মধ্যে এক শিশুও ছিল।

প্রাথমিকভাবে প্রযুক্তিগত ত্রুটি ও খারাপ আবহাওয়াকেই দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

স্থানীয়রা তাদের গবাদি পশুর জন্য খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে নিখোঁজ হেলিকপ্টারটি জঙ্গলে পরে থাকতে দেখেন। এরপর জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী ও রাজ্য দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনীর দল ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়। উদ্ধার অভিযান চলছে।

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, রাজ্য দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন এবং অন্যান্য উদ্ধারকারী দল উদ্ধার কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে।

এদিকে কলকাতা প্রতিনিধি জানান, দুর্ঘটনার সময় হেলিকপ্টারে পাইলটসহ সাত আরোহী ছিলেন। এর মধ্যে ৫ জন যাত্রীর মরদেহ পাওয়া গেছে আর নিখোঁজ রয়েছেন আরও ২ জন।

গত ১২ জুন দুপুরে ২৩২ জন সাধারণ যাত্রী এবং ১০ জন ক্রু নিয়ে ভারতের গুজরাটে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটে। আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করে বিমানটি। বিজে মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসের ওপর আছড়ে পড়ে এটি। ঘটনাস্থল থেকে ২৭০ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এদের মধ্যে ২৪১ জনই বিমানটির যাত্রী ও ক্রু।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত দ র ঘটন র ব ধ বস ত র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য

দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।

আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।

লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।

আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা।

কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ