মুসলিম নারী ক্যালিগ্রাফারদের গল্প
Published: 15th, June 2025 GMT
একটি কলম, কিছু কালি আর কাগজ—এই সাধারণ উপকরণ দিয়ে মুসলিম নারীরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সৃষ্টি করেছেন অপূর্ব শিল্প। ক্যালিগ্রাফি বা হাতের লেখার এই শিল্পে তাঁরা শুধু কোরআনের আয়াত বা হাদিসের বাণীই লেখেননি, বরং নিজেদের মেধা, ধৈর্য আর বিশ্বাসের গল্পও ফুটিয়ে তুলেছেন।
হিলাল কাজানের ফিমেল ক্যালিগ্রাফার্স: পাস্ট অ্যান্ড প্রেজেন্ট বইটি এই নারীদের গল্প নিয়ে এসেছে, যাঁরা ইসলামি সভ্যতার ইতিহাসে কলমের মাধ্যমে নিজেদের স্থান করে নিয়েছেন। কিন্তু কারা এই নারী ক্যালিগ্রাফার? কীভাবে তাঁরা সমাজের প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে শিল্পের শিখরে উঠেছেন?
ক্যালিগ্রাফি হলো এমন একটি পেশা, যেখানে ঠিক হাদিস, তাফসির বা ফিকহর মতো ‘ইজাজা’র প্রয়োজন হয়। এই শিল্পে নারীদের অবদান ইতিহাসের প্রথম দিন থেকেই ছিল। বেতুল ইপশিরলি আরগিত, গবেষক, বোগাজিচি বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্তাম্বুলক্যালিগ্রাফির ইতিহাসে নারীর পথচলাইসলামি সভ্যতায় ক্যালিগ্রাফি শুধু শিল্প নয়, এটি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের একটি প্রতীক। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত বোগাজিচি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক বেতুল ইপশিরলি আরগিত বইটির পর্যালোচনায় বলেন, ক্যালিগ্রাফি হলো এমন একটি পেশা, যেখানে ঠিক হাদিস, তাফসির বা ফিকহর মতো ‘ইজাজা’র (আনুষ্ঠানিক অনুমোদন) প্রয়োজন হয়। এই শিল্পে নারীদের অবদান ইতিহাসের প্রথম দিন থেকেই ছিল।
হিলাল কাজান তাঁর বইয়ে লিখেছেন, প্রথম নারী ক্যালিগ্রাফার ছিলেন শিফা বিনতে আবদুল্লাহ, যিনি হজরত উমর (রা.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।