হাঁসপায়া তক্ষক উদ্ধার চক্রের ৯ সদস্য গ্রেপ্তার
Published: 15th, June 2025 GMT
কলমাকান্দায় ‘কোটি টাকার’ হাঁসপায়া তক্ষকসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাচার কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাসও জব্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
গতকাল রোববার ভোরে কলমাকান্দা ইউনিয়নের চিনাহালা মোড়ে পুলিশের চেকপোস্টে এ অভিযান চালানো হয়। কলমাকান্দা থানার এসআই আবু হানিফার নেতৃত্বে একটি সন্দেহভাজন মাইক্রোবাসে তল্লাশির সময় প্লাস্টিকের ঝুড়িতে কালো-খয়েরি রঙের বিরল প্রজাতির হাঁসপায়া তক্ষক পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তক্ষক পাচার বিষয়ে কোনো সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে না পারায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো– নরসিংদীর শফিকুল ইসলাম, তানভীর হাসান, শাকিল মিয়া, এসএম শিবলুর রহমান, নুরুল ইসলাম, আছমত আলী, আব্দুল আজিজ, ফয়সাল, বরিশালের আব্দুল জলিল। এ ছাড়া স্থানীয় আলম, খালেক ও সুমন নামে তিনজনের বিরুদ্ধে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে।
কলমাকান্দা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ লুৎফর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বন্যপ্রাণী পাচার চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ আরও জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে এই বিরল প্রাণীর মূল্য কোটি টাকার ওপরে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ ধরনের প্রাণী পাচারে সক্রিয় রয়েছে আন্তর্জাতিক চক্র।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।