ইরানে নতুন করে ফের ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রবিবার বিকেলে ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাপক বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। 

ইরানের বেসামরিক নাগরিকদের সামরিক স্থাপনার আশেপাশের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সতর্কতা জারির কয়েক ঘণ্টা পরেই সেখানে হামলার ঘটনা ঘটেছে।

তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও সামরিক স্থাপনার ওপর ইসরায়েলের হামলা তৃতীয় দিনের মতো অব্যাহত থাকার সময় এই হামলা চালানো হয়।

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলের শক্তি অনুভব করবে ইরান: নেতানিয়াহু

ইসরায়েল ও ইরানের সঙ্গে অবশ্যই চুক্তি হবে: ট্রাম্প

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েল নতুন করে তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় আক্রমণ করেছে, যার মধ্যে উত্তরে নিয়াভারান এবং শহরের কেন্দ্রস্থলে ভ্যালিয়াসর এবং হাফতে তির স্কোয়ার রয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, ইসরায়েল-সংশ্লিষ্ট নাশকতাকারীদের মাধ্যমে তেহরানে ধারাবাহিক গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ করা হয়েছে।

টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলায় ইরানের আরো পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দেশটির দক্ষিণে শিরাজে সামরিক স্থাপনাগুলোতেও হামলার খবর পাওয়া গেছে।

আল জাজিরার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের রাজধানী তেহরানের খুবই ঘনবসতিপূর্ণ একটি শহর, যেখানে প্রায় দেড় কোটি মানুষের বসবাস। ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় বহু মানুষ রাজধানী ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে, কিন্তু কিন্তু অনেকেই রয়ে গেছেন।

ইসরায়েল ইরানিদের সামরিক ভবনের কাছাকাছি না থাকার হুমকি দিয়েছে। কিন্তু তেহরানের বেশিরভাগ মানুষ জানে না যে, সেগুলো আসলে কোথায় অবস্থিত। তেহরানের সামরিক স্থাপনাগুলো গোপনীয়; প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতো সাইনবোর্ড ঝুলানোর মতো নয়। 

ইরানে কোনো বোমা আশ্রয়কেন্দ্র নেই, তাই ইসরায়েলি হামলার সময় নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য সেখানে সাইরেন বাজছে না। 

ইরানের একজন মুখপাত্রে বলেছেন, দেশটিতে আজ রাত থেকে মেট্রো স্টেশন ও মসজিদগুলো জনসাধারণের জন্য বোমা আশ্রয়স্থল হিসেবে উপলব্ধ থাকবে।

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার ও শনিবার ইরানজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় ১২৮ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় ৯০০ জন। হতাহতদের মধ্যে কমপক্ষে ৪০ জন নারী এবং বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল র ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ