গুলিতে আহত ব্যবসায়ীর মৃত্যু, ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
Published: 16th, June 2025 GMT
রাজধানীর বাড্ডায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন (৪০) মারা গেছেন। গতকাল রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এদিন শাহবাগে ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত এবং নীলক্ষেত এলাকার একটি হোস্টেল থেকে এক নারী ব্যাংক কর্মকর্তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বাড্ডায় নিহত আনোয়ারের গ্রামের বাড়ি বরিশালের হিজলা উপজেলায়। তিনি পরিবারের সঙ্গে বাড্ডার আনন্দনগর এলাকায় থাকতেন। স্বজনের অভিযোগ, গত ৮ মে রাত ১১টার দিকে বাড্ডার ভূঁইয়াবাড়ি টেকপাড়ায় শুটার সালাউদ্দিন, নুরা পাগলা, মাহিন, নয়ন, ইউসুফসহ কয়েকজন আনোয়ারকে মারধর করেন এবং পেটে গুলি করেন।
বাড্ডা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, গুলির ঘটনার পর আনোয়ারের পরিবারকে মামলা করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা মামলা করেননি। গতকাল মারা যাওয়ার পর হত্যা মামলা করা হয়েছে।
এদিকে, শাহবাগে ছুরিকাঘাতে মো.
নিহতের চাচাতো ভাই রবিউল জানান, মোবারক শাহবাগ এলাকার এক মাদক কারবারি নবীর কাছ থেকে মাদক নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করত। সপ্তাহখানেক আগে তার কাছ থেকে মোবারক বাকিতে ৪ হাজার টাকার মাদক নিয়েছিল। নবী গতকাল বিকেলে রাতুল, রাজুসহ কয়েকজনকে মোবারকের কাছে টাকা আনতে পাঠায়। শিশুপার্ক ওভারব্রিজের নিচে মোবারকের কাছে টাকা চাইলে সে দিতে পারবে না বলে জানায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজু ও রাতুল মোবারককে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে মোবারককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, নীলক্ষেত এলাকার একটি নারী হোস্টেল থেকে গতকাল দুপুরে রিয়া আক্তার শান্তা (৩০) নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শান্তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল সদরের পলাশপুরে। তিনি অগ্রণী ব্যাংকে চাকরি করতেন।
ডিএমপির নিউমার্কেট জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার তারিক লতিফ বলেন, দুপুর ১টার দিকে নীলক্ষেত নারী কর্মজীবী হোস্টেলে পুরাতন বিল্ডিং ৩০৭ নম্বর কক্ষ থেকে সিলিংফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় শান্তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত শ হব গ ম ব রক মরদ হ গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।