আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শুরু হচ্ছে মেয়েদের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্টটির আয়োজক ভারত। তবে রাজনৈতিক উত্তাপের কারণে পাকিস্তান তাদের ম্যাচগুলো খেলবে শ্রীলঙ্কায়। সঙ্গে শ্রীলঙ্কাও ভারতের বিপক্ষে ছাড়া বাকি ম্যাচগুলো ঘরের মাঠে খেলবে। 

টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী দিন ভারত ও শ্রীলঙ্কা বেঙ্গালুরুর মুখোমুখি হবে। পরদিন ইন্দোরে মাঠে নামবে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ম্যাচে অজি নারীদের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। 

বাংলাদেশ আসর শুরু করবে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। কলম্বোয় ২ অক্টোবর বাংলাদেশ ও পাকিস্তান মুখোমুখি হবে। বাংলাদেশের পরের ম্যাচ শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ম্যাচটি গোহাটিতে হবে ৭ অক্টোবর। 

ভিজাগে বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ম্যাচ দুটি যথাক্রমে ১০ ও ১৩ অক্টোবর মাঠে গড়াবে। একই ভেন্যুতে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৬ অক্টোবর ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। 

এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ খেলবে শ্রীলঙ্কায় যেতে হবে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে। কলম্বোয় বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচ রাখা হয়েছে ২০ অক্টোবর। শ্রীলঙ্কা থেকে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ খেলে পুনরায় ভারতে আসতে হবে নিগার সুলতানা জ্যোতির দলের। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে ভারতের। সূচিতে ম্যাচটি রাখা হয়েছে ২৬ অক্টোবর বেঙ্গালুরুয়। 

পাকিস্তান টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে উঠলে প্রথম সেমিফাইনাল কলম্বোয় হবে। পাকিস্তান গ্রুপ পর্বে বিদায় নিলে সেমিফাইনাল হবে গোহাটিতে। দ্বিতীয় সেমিফাইনাল হবে বেঙ্গালুরুয়। ম্যাচ দুটি যথাক্রমে ২৯ ও ৩০ অক্টোবর রাখা হয়েছে। মেয়েদের বিশ্বকাপের ফাইনাল হবে ২ নভেম্বর। পাকিস্তান ফাইনালে উঠলে ম্যাচ কলম্বোয় হবে। পাকিস্তান না থাকলে ফাইনাল হবে বেঙ্গালুরুয়।  

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ সূচি: 
বাংলাদেশ- পাকিস্তান- ২ অক্টোবর-কলম্বো
বাংলাদেশ- ইংল্যান্ড- ৭ অক্টোবর- গোহাটি
বাংলাদেশ- নিউজিল্যান্ড- ১০ অক্টোবর- ভিজাগ
বাংলাদেশ- দক্ষিণ আফ্রিকা- ১৩ অক্টোবর- ভিজাগ
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া- ১৬ অক্টোবর- ভিজাগ
বাংলাদেশ- শ্রীলঙ্কা- ২০ অক্টোবর- কলম্বো
বাংলাদেশ- ভারত- ২৬ অক্টোবর- বেঙ্গালুরু

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ম ফ ইন ল ব শ বক প কলম ব য়

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য

দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।

আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।

লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।

আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা।

কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ